সমাজকর্মী বাদ্যযন্রের ধুমধাম শব্দ। বাড়ির সকলের ছোটাছুটি। উঠানে অনেক মানুষের খাওয়া-দাওয়া চলছে। দৌঁড় ঝাপে মেতে উঠেছে বাড়ীর ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা। এ সব কিছুই চলছে ফারজানাকে ঘীরে।
কারন, আজ যে ফারজানার বিয়ে। হ্যাঁ, সমাজের আর দশজন মেয়ের মত ইডেন কলেজ থেকে সমাজ কল্যাণে লেখাপড়া করা ফারজানাও বিয়ের পীড়িতে বসেছিল। স্বপ্ন দেখেছিল, একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বর সহ একসঙ্গে কাটিয়ে দিবে সারাটি জীবন। বিয়ের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষ। বিয়ে বাড়ির আলোর ঝলকানি তখনো থামেনি।
কন্যা সম্প্রদান শেষে স্বজনরা তুলে দেবেন গাড়িতে, যাত্রা শুরু হবে শ্বশুরবাড়ির পথে।
স্বজনরা মেয়েকে গাড়িতে তুলে দিলেন ঠিকই কিন্তু যাত্রা আর শুরু হলো না। বাদ সাধলেন বরের ফুপু। বিয়ে ঠিকঠাক হওয়ার সময় বরপক্ষের কোন দাবি-দাওয়া ছিলো না। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বর আর তার ফুপু ভেবেছিলেন, মুখে যৌতুক চাননি তো কী হয়েছে; কনের বাবা নিশ্চয়ই টিভি, ফ্রিজ, মটর সাইকেল মেয়ের সঙ্গেই দিয়ে দেবেন।
কিন্তু সে সব যখন দেখতে পেলেন না, বরের ফুপু বিয়ের আসরেই জানিয়ে দিলেন, যৌতুক হিসেবে এসব না দেওয়া হলে মেয়েকে পাঁচ বছর বাপের বাড়ি থাকতে হবে।
সমাজের আর দশজন মেয়ের মত হলে এই ক্ষেত্রে যা করতেন, সাহসিকা ফারজানা ইয়াসমিন তা করলেন না। করলেন না কারন, এটা যে অন্যায় দাবী তাদের। আর যৌতকের মত এই অন্যায় দাবী মেনে নেয়ার মত মানুষ নয় ফারজানা। তাই-স্বজন, সমাজ, নিজের ভবিষ্যৎ সব কিছু নিয়ে অনিশ্চয়তার ঊর্ধ্বে গিয়ে জানিয়ে দিলেন তার অটল সিদ্ধান্ত, যে ছেলে এমন নির্লজ্জের মত যৌতুক দাবি করে তার সঙ্গে কিছুতেই সংসার নয়।
ব্যাস, ভেঙে দিলেন বিয়ে। যৌতুককে বলি দিয়ে বিয়ের একদিন পর কর্মস্থলে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ফিরে এলেন ঢাকায়। প্রতিবাদী এক নাম হয়ে।
বোন ফারজানা হোক সবার প্রতিবাদের প্রেরণা। আসুন আমরা যৌতুককে না বলি।
কন্ঠে আওয়াজ তুলি ‘যৌতুক আমরা নিব না, যৌতুক আমরা দিব না। ‘ যৌতুকের মত অন্যায় দাবি যারা করে, তাদের শাস্তি দেয়া হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।