আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিছু বিশেষ মানুষ আর আমাদের বিশেষ ভাবনা

সত্যের কাছে মিথ্যে চিরকালই পরাজিত সাধারন মানুষ আমি তাই বিশেষ মানুষ নিয়ে লিখতে কোন সমস্যা নেই কারন আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মোটামুটি সকল বিশেষ মানুষকেই বিশেষ বাক্য ব্যবহারে বিশেষায়িত করি যার বেশিরভাগই রুচিপূর্ণ নয়। সেই হিসেবেই আমার লেখা অপরাধের পর্যায়ে পড়বে না বলেই মনে করি। প্রথমেই শুরু করি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ কে দিয়ে… আমরা সকলেই জানি কবিগুরুর কারনেই বাড়ী আর বাটীর মধ্যে এখন আর পার্থক্য নাই! মানে কবিগুরু ভুল করে বাড়ি লিখতে গিয়ে বাটী লিখেছিলেন, আর আমরা ভেবেছি ওরে বাবা কবিগুরু লিখেছেন তা কিভাবে বদলাই? যেন রবীন্দ্রনাথ এর বানী অপরিবর্তনীয়! সম্মানের কারনে তার ভুলটাও আমাদের জন্য পালনীয় হয়ে গেছে। অথচ একশ্রেণীর মুসলমান আছি যারা নিজেকে মুসলিম দাবী করেও কোরানের দেয়া বিধান মেনে নিতে নারাজ। প্রতিপালক বলে স্বীকার করি অথচ নিজেদের ইচ্ছেমত বদলে নিতে চাই তার দেয়া বিধান! বড়ই বিচিত্র মানুষের দ্বৈত রুপ! এবার আসি দেশের বুদ্ধিজীবিদের আর রাজনীতিকদের কাছে অতি মূল্যবান সেই সংবিধানের কথায়।

১৯৭২ সালে যা লিখেছিলেন জনাব ডঃ কামাল হোসেনেরা তাদের সেই সংবিধান ছিল পূতপবিত্র!! তাতে হাত লাগালে নাকি অভিশাপ লাগে, আর সে কারনেই নাকি মুজিব-জিয়া অভিশপ্ত হয়ে নিহত হয়েছেন। তাতে হাত লাগানোর কারনে নাকি আজকে দেশে ধর্ষন হয়, খুন হয়, জঙ্গি হয় আরো কত কি! সংবিধান তো না যেন অস্পৃশ্য কোন পাথর যা ছুলেই অমঙ্গল! বংগবন্ধু মহান মানুষ ছিলেন সন্দেহ নাই। উনি যখন বলেছিলেন “সবাই পায় স্বর্ণের খনি আমি পেয়েছি চোরের খনি” তখন কারো মনে কোন কষ্ট লাগে নাই। পিতা বলেছেন তাতে মনে করার কিছু নাই, পুরো জাতিকে চোর বলে দিলেন তবুও তা শুনতে খুব মধুর লাগল! আর পিতার মুখে এই মধুর কথা শোনার আনন্দে কে কি করবে দিশেহারা হয়ে গেল, আর লুটপাট বাড়িয়ে দিয়ে পিতার কথার যথার্থতা প্রমান করল। পিতাও সন্তানের শত খুন মাফ করে দিলেন, তিনি যে মহান তার পরিচয় দিয়ে গেলেন।

আবার একটু ব্যতিক্রমী সাহিত্যে আসি, জনাব হুমায়ুন আজাদ, তসলিমা নাসরিন রা ঘরে বসে কোন ভঙ্গিতে কি করেন তা লিখে মানুষের অন্তঃপ্রান বন্ধু হয়ে যান। একটা মেয়ে বা ছেলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে কি চিন্তা করে থাকে শুধু ওই মেয়ে জানলে চলবে না আমাদেরও জানতে হবে আর তা গল্প আকারে প্রকাশ করে স্বাধীন মনোবৃত্তির প্রকাশ ঘটান এরা। ভাবটা এমন যেন উনারা না লিখলে ছেলেরা সাবালক হবে না, মেয়েরা তাদের দেহের পরিবর্তন নিয়ে উদাসীন থাকবে, দুনিয়াতে মানুষের যৌন চাহিদা থাকবে না আর পৃথিবী একদিন মানুষশুন্য হয়ে যাবে, তাই তাদের কত অবদান এই পৃথিবী টিকিয়ে রাখতে! এসব কিছুই লিখে ধন্য করেছেন আমাদের! এমন লেখকও আছেন যারা নারীর স্তনের চেয়ে গরুর ওলান ধরে বেশি যৌনতা অনুভব করেন। তাদেরকে মানসিক অসুস্থ বলতে গেলে আমাকেই পাবনা পাঠানোর জোগাড় হবে। তসলিমা নাসরিন যখন বইতে লেখেন ঘরের কাজের বাচ্চা মেয়েটার উপর নিজে নির্যাতন করেছেন, কখনো হাত মুচড়ে দিয়ে, কখনো আরো ভয়াবহ কায়দায় তখন আমরা তার উদারতা খুঁজে পাই, কতটা উদার হলে নিজের অন্যায়ের কথা স্বীকার করে? তার জন্য অকালে হারিয়ে যাওয়া রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর জন্যও কিন্তু আমাদের অনেক মায়া, যদিও তা তসলিমার চেয়ে বেশি না! কিছু বিজ্ঞানের কথাও বলি, জনাব স্টিফেন হকিংস, সাসকিন্ড এর মত এত মেধা খুব কম মানুষেরই আছে, তাদের চিন্তা শক্তির প্রখরতার কারনে, আমার এক বন্ধু তো সাসকিন্ড কে গড বলে বসল! আর জনাব হকিংস কিছু লিখলেই হইছে হয়ে গেল অমোঘ বানী! নিজেদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারনে অসীমকে স্বীকার করার প্রয়াস আর কি।

ডারউইন সাহেবের তত্ত্বের বেলায়ও এ কথা সত্যি। কারন একদল মানুষ কিছু খুঁজে পাচ্ছিল না কোরান কে চ্যালেঞ্জ করার, তাদের জন্য তার তত্ত্ব সত্য মিথ্যার বিবেচনায় না এসে হয়ে গেল পূজনীয়! সবশেষে, যারা এতক্ষন খুশি হয়েছিলেন তাদেরকে একটু কষ্ট দেই। আমাদের সমাজে কিছু পীর-আলেম-ওলামা আছেন যাদের কে আবার আমরা বিশেষ মানুষ মনে করি। তারা যা কিছুই করুক তাই বৈধ! তারা মাঝে মাঝে পাগল হয়ে যান, পাগল হয়ে অনেক অসাধ্য সাধন করে ফেলেন। আল্লাহর প্রেমে(!) এমন মশগুল হয়ে যান যে নিজের উপর আর নিয়ন্ত্রন থাকে না, আর এই অবস্থা প্রাপ্ত হলে মরা মানুষ জিন্দা করে ফেলতে পারেন, সূর্যকে হেলিয়ে দিতে পারেন, কবরে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

কিন্তু তারা পাগল হয়ে উলংগ হয়ে ঘুরে বেড়ান না, কাউকে কামড় দেন না। আল্লাহর উপর কর্তৃত্ব চলে আসে (নাউজুবিল্লাহ), তাই রুহ ছিনিয়ে নিয়ে আসতে পারেন। কোরান পড়তে হয় না গলায় ঝুলালেই নাকি সব বালা মুছিবত দূর হয়ে যায়, জ্ঞানী বুজুর্গ লোকের কবরে গিয়ে চাইলেই নাকি সব পাওয়া যায়। এভাবেই বিশেষ মানুষগুলো বিশেষ বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে পূজনীয় হয়ে উঠেছেন, তাদের ব্যাপারে কিছু বলতে গেলে জীবন বাঁচানো দায়! তাই লিখতে পারছি, হাতের কাছে না পেলে কিছু করতে পারবে না। আর আমিও বাক স্বাধীনতা না পেলেও টাইপিং স্বাধীনতার সদ্ব্যবহার করতে পারছি! আমি আবার এই সকল বিশেষ মানুষও যে ভুল করতে পারেন আর সেই ভুল যে শোধরানো উচিত তা মনে করি, তাই বিকল্প ধারায় চলতে চাই, কিন্তু সেইটা আবার বি চৌধুরী সাহেব নিয়ে নিয়েছেন।

কি আর করা ধারাহীনই না হয় থাকি! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.