হৃদয়ে থাকুক বসন্ত
আমার বাসাতে প্রথম আলো রাখা হয়। আমি শুধু খেলার খবর দেখে রেখে দেই। আর কিছু ভালো লাগেনা। পড়ে মজা পাইনা। আমার একটা বদঅভ্যাস আছে।
বাথরুমে যাবার সময় হাতে করে পাঠ্য কিছু নিয়ে যাওয়া। ওইদিন (বুধবার ২ নভেম্বর) হাতে করে নারীমঞ্চ নামক ক্রোড়পত্রটা নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে শিরোনামে উল্লেখিত লেখাটা পড়ে মেজাজ চরম খারাপ হলো। লেখিকার নাম তৌহিদা শিরোপা। পারসোনা ইস্যুতে তার অবস্থান মনে থাকলে আপনারা ঘৃনায় অনেকে এতোক্ষনে মুখ বাঁকাচ্ছেন।
লেখাটা পড়ে মনে হলো, স্বামী-স্ত্রীর যেকোন সিদ্ধান্ত প্রথম আলো পড়ে নেওয়া উচিৎ। এখানে যাবতীয় সাংসারিক সমস্যার সমাধান আছে! সবশেষে একজন বিশেষজ্ঞ মতামত দেন। যেখানে নারীদের পক্ষে কথা বলা হয়! এটা কি সত্যিই নারীদের পক্ষে কথা? নাকি উসকানী দেওয়া! বিশেষ করে এই কুরবাণী ঈদের সময়। যেনো, আমাদের বউরা এটা পড়ে ভাবেন,"তাইতো! আমরা কত বঞ্চিত! আমরা কেনো, বঞ্চিত হবো? " আসলেই কি তাই? আমাদের বউকে আমরা যতটা সন্মান করি,বাইরের মানুষ তার চাইতে বেশি করবেনা। করতে চাইলে,সেটা উদ্দেশ্য পরায়ন হবে।
যে প্রথম আলোতে অরুন চৌধুরীর মত লোক থাকে সেখানে নারীদের সন্মান দেওয়া কতটা আশা করেন?
আসল কথায় আসি। আমার মাকে কখনো নারীমঞ্চ অথবা হিন্দি সিরিয়াল দেখে সংসার চালাতে হয়নি। তাকে আল্লাহর রহমতে সবসময় হাসি-খুশী দেখি। আমি জানি, তিনি সুখে আছেন। ভালো আছেন।
আমার বুঝজ্ঞান হবার পর দেখেছি, আমরা অনেক রমজানের ঈদ নানাবাড়ীতে করেছি। কিন্তু কোরবানীর ঈদগুলো আমাদের বাসায় অথবা দাদাবাড়ীতে করেছি। দাদাবাড়ীতে যখন করি, তখন আমার নানী ঈদের পরেরদিন এসে আমার আম্মুকে দেখে গেছেন। অথবা আমরা গিয়েছি। এসব নীরব সমঝোতায় হয়ে যায়।
নারীমঞ্চ দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়না। সুখ থাকে। কিন্তু এসব লেখা আমাদের বউকে উস্কানী দেয়। আমাদের বোনকে উস্কানী দেয়। ফলাফল, ভুল বোঝাবুঝি।
সম্পর্কের অবনতি। ওইদিন আমার শ্বাশুড়ি, আমাকে জানালেন তিনি হিন্দি সিরিয়াল দেখে বুঝেছেন, তিনি কতটা ঠকেছেন। হাড়ি-পাতিলে তার জীবন শেষ হয়ে গেছে। তার ভিতরে কি ছিলো তিনি জানতেন না। আমি কিছু বলিনাই।
দীর্ঘদিন ধরে আমার শ্বশুরের সাথে উনার ঝামেলা চলছে। একমাত্র মেয়ের দিকে তাকিয়ে তারা আলাদা হননা। তাদের বয়স ৫০+ ! যতদিন তিনি তার অধীকার বুঝেননি, তিনি সব পেয়েছেন। সুখে ছিলেন। আজ কয়েকবছর ধরে তার অধীকার জ্ঞান হয়েছে।
এখন তার সুখ কোথায়? কে যেনো বলেছিলেন," যেসব নারী পুরুষের সমান অধিকার চায়, তারা আদতেই উচ্চবিলাসী না। " আসলেই তাই। আমার বউ যদি ইনকাম করে আনে। আর আমি ঘরে বসে থাকি তাহলে বেশ হয়। জানি আমাকেও ঘরে অনেক কিছু সামলাতে হবে।
তবু মাঝে মাঝে দু-দন্ড বসে বিশ্রাম নিতে পারবো। সারাদিন অফিসের ঝুটঝামেলা আর সহ্য হয়না। দুপুরে একটা ভাতঘুম দিতে পারবো। একটু সোফায় হেলান দিয়ে আরাম করে টিভি দেখতে পারবো।
জানিনা, কেনো এমন হবে? ওরা কেনো ফুঁসলিয়ে আমার বৌকে-বোনকে পথে নামাবে।
ওদের উদ্দেশ্য কি? অরুনেরা লালায়িত জিহবা নিয়ে অপেক্ষা করে। তবুও বলি, অনেক বোন চাকরি করেন। প্রয়োজনে অথবা শখে। প্রতিকূল পরিবেশ দেখলেই চাকরি ছেড়ে দিতে পারবেন। কিন্তু সমস্যা হয়, অধিকাংশ বোন তার পরিবারের সাথে চ্যালেঞ্জ করে চাকরি করতে আসেন।
তখন তার অফিসের প্রতিকূলতাকে গোপন করে যান। পরিবারকে জানালে পরাজিত হবেন ভেবে। এভাবে কত বোনের নীরব কান্না কর্পোরেট দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়,সেটা তারা জানেন।
আমি বলি, আমার সংসার। তুমি-আমি মিলে সিদ্বান্ত নেবো।
আমাদের ভালো,আমরা বুঝবো। তৌহিদারা বলে দিতে হবেনা। আমরাই আমাদের সবচাইতে আপন। আর কেউ নয়।
যে খবরটার কারনে এই লেখা-
ঈদ কোথায়? শ্বশুরবাড়ি নাকি বাবার বাড়ি ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।