জীবনের প্রত্যেক প্রবাহ অমৃত চায়।
ট্র্যাজেডির নায়ক গাদ্দাফির জাতিসংঘে ভাষন দিচ্ছেন।
আধুনিক লিবিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির প্রায় অর্ধশত বছরের (৪২ বছর) শাসনকাল অনেক ব্যাপারে অগ্রহনযোগ্য কার্যক্রম দেখা গেছে সত্য। একটি প্রায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্যের কাঠামোর ভেতরে তাঁর রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছিল। জনগণের মৌলিক চাহিদা - অন্ন-বস্ত্র-স্বাস্থ্য-শিক্ষা-বাসস্থান ইত্যকার বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা থাকলেও তাঁদের বাক স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করা হতো।
রাষ্ট্রের একচ্ছত্র শাসন কর্তা ছিলেন স্বয়ং কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি। গাদ্দাফি প্রায় সময় সদম্ভে নিজের পরিচয় তুলে ধরতেন এভাবে- ‘আমি আফ্রিকা মহাদেশের রাজাদের রাজা’। গাদ্দাফির এরূপ দাম্ভিকতার কারনেই তাঁর নাম স্বৈরশাসকের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হলো। অবশ্য এহেন দুর্ণামের পেছনে তথাকথিত গণতান্ত্রিক বলে পরিচিত রাষ্ট্রসমূহের উস্কানি ও ভূমিকা কম ছিল না।
গাদ্দাফি রাজকীয় বেশে।
আফ্রিকার এ লৌহমানব-এর অমানবিক ও বর্বরোচিত হত্যা দেখে পৃথিবীর বিবেকবান মানুষ স্তম্ভিত ও মর্মাহত হয়েছেন। প্রায় মধ্যযুগীয় জীবনাচার ও মূল্যবোধে ডুবে নিজের জনগোষ্ঠীকে তাঁর নিজের ভঙ্গিতে আধুনিকতায় নিয়ে এসেছিলেন গাদ্দাফি। দশ বছর পূর্বেও বিশ্ব মিডিয়ায় তাঁকে দেখানো হয়েছিল একজন জীবন্ত বিংবদন্তি শাসক হিবেবে। ১৯৮৮ সালের লকারবি বিমান হামলা পর কর্ণেল গাদ্দাফি পাশ্চাত্য দুনিয়ার চক্ষুশুল হয়ে দাঁড়ান।
বিধ্বস্ত বিমান
স্বদেশীয়দের ভাগ্য উন্নয়নে তিনি নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে নিবেদিত করার পাশাপাশি প্রায় সময়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন ও প্রশয় দিয়েছেন।
১৯৭৪ সালের ও আই সি সম্মেলনে সদাহাস্য ও তারুণ্যদীপ্ত গাদ্দাফিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সাথে দেখা গেলেও ১৯৭৫ সালে আমাদের জাতির পিতার স্বঘোষিত খুনিদের গাদ্দাফির আশ্রয় দিয়েছিলেন। যদিও পরে তিনি তা ভুল বুঝতে পেরেছিলেন বলে জানা যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে।
এসবই এখন ধুসর অতীত। গত পঁচিশ অক্টোবর, ২০১১ এনটিসি ( ন্যাশনাল ট্রানজিশন কাউন্সিল) এর ‘স্বাধীনতাকামী’ যোদ্ধারা কর্নেল গাদ্দাফিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে।
এনটিসি-এর যোদ্ধারা
পৃথিবীতে অনেক নিষ্ঠুর অত্যাচারী একনায়ক ছিলেন - পাকিস্তানের আইয়ুব খান ও ইয়াহিয়া খান, ইটালির মুসোলিনি, জার্মানির হিটলার, ফিলিপাইনের মার্কোস এদের কারো পরিণতি কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির মতো হয়নি।
গাদ্দাফি ছিলেন বিষাদিত অধ্যায়ের (ট্র্যাজেডি) এক নায়ক।
বিষাদিত অধ্যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।