আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিটলার :: একনায়ক/স্বৈরাচারী ? না কি গণতান্ত্রিক নেতা?

অদ্ভুত আঁধার এক চারিদিকে হিটলার কি একনায়ক/স্বৈরাচারী ? না কি গণতান্ত্রিক নেতা? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে আজ থেকে ষাট বছর আগে। স্বাভাবিক যে, আমরা তার সম্পর্কে যা জানবো তা লেখা হয়েছে বিজয়ী পক্ষ দ্বারা। আমার নিজের ধারনাটা ছিল এরকম- হিটলার একজন ভয়াবহ লোক। অবৈধভাবে দেশের ক্ষমতা দখল করেছে। তারপর পুরা ইউরোপ জুড়ে যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছে(একদম প্রাথমিক ধারণা)।

বেশ কিছু দিন আগে নীলক্ষেত থেকে একটা বই পাই। লেখক পরিচিত কেউ নন। বই এর নামটাও ভুলে গেছি। আবার বই এর তথ্যগুলো যে খুব প্রামাণ্য তাও দাবী করতে পারছি না। কিন্তু যে জিনিসটা একেবারেই নতুন লাগল তা হচ্ছে হিটলারের ক্ষমতা দখল করার প্রক্রিয়া।

হিটলার সম্পুর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকার গঠন করেছিল বলে দাবী করা হয়। স্মৃতি থেকে লিখছি,ভুল-টুল হতেই পারে। হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে অংশ নিয়েছিল। যুদ্ধে জার্মানি পরাজিত হল। ভার্সাই চুক্তি করতে বাধ্য করা হল।

যুদ্ধের পর জার্মানিতে (সম্ভবত) সংসদীয় সরকার ছিল। প্রধাণমন্ত্রীর নাম মনে নেই, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ছিল হিন্ডেনবুর্গ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এক বীর সেনাপতি। ওই সময় জার্মানি বেকারত্ব,দারিদ্র্য এবং যুদ্ধে পরাজিত হলে যে যে সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়-বিজয়ী পক্ষকে নানা রকম কর/ট্যাক্স/সম্পদের হিস্যা দেওয়া ইত্যাদিতে জর্জরিত ছিল। হিটলার একটা খুবই ছোট , প্রায় নাম না জানা একটা রাজনৈতিক দলে যোগ দেয়(খুব সংক্ষেপে লিখছি)। হিটলারের আবার ভাল বক্তৃতা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল।

যাহোক, চাপা পিটিয়ে পিটিয়ে বেশ শক্ত পজিশন আদায় করলো দলে। তার বক্তৃতা শুনে লোকজনও আকৃষ্ট হতে লাগলো। তার দল খুবই ধীরে ধীরে সমাজে প্রভাব বিস্তার করতে লাগলো। ১৯২৯ সালে (বোধহয়) তাকে গ্রেফতার করা হল সমাজে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর অপরাধে। এতে উলটা তার জনপ্রিয়তা আরো বাড়লো।

মুক্তি পাওয়ার পর জার্মানির অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল এবং দলের নেতা হিসেবে পরিচিতি পেল। এরপর বেশ কয়েকটা সাধারণ নির্বাচন হল। প্রতিটাতেই তার দল অংশ নিল। ফলাফল গুলো ছিল এরকম- ১. হিটলার এম পি নির্বাচিত। ২. দলের অনেকে এম পি নির্বাচিত।

৩. দল সরকারে অংশ নিল। ৪. দল সরকারে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পেল। ৫. হিটলার প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কি একটা অভিযোগ আনলো, অভি্যোগে কিছুটা সত্যতা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ। ৬. জাতীয় সরকার টাইপ একটা সরকার গঠন।

হিটলার ও তার দলের অংশগ্রহণ। ৭. পর্যাপ্ত ক্ষমতা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে হিটলার তার দল নিয়ে পদত্যাগ করল। ৮. হিটলারের জনসমর্থন বেড়ে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ অফার করলো। (হিটলার-পাইছি তোরে!!) ৯. কিছুদিন পর প্রেসিডেন্ট কাজ চালানোর মত সক্ষম নন,এই বলে প্রেসিডেন্টকে অপসারণ এবং পদ দখল। ১০. এর কিছুদিন পর আরেকটা সাংবিধানিক পদ দখল করে হিটলার,বাট পদটা কি ছিল মনে নাই।

ধরলাম চ্যান্সেলর। এখন হিটলারের মত করে চিন্তা করেন- আমি(হিটলার) একই সাথে প্রধানমন্ত্রী,প্রেসিডেন্ট(অটোমেটিক্যালি সশস্ত্র বাহিণীর প্রধান) এবং চ্যান্সেলর । ফলাফল-নিজেকে ফুয়েরার(ত্রাণকর্তা) ঘোষণা। আমার জিজ্ঞাশা হল-তাহলে তো হিটলার মামা সম্পুর্ণ গণতান্ত্রিক ভাবে দেশের সর্বোচ্চ ব্যাক্তি হয়ে তারপর যুদ্ধ শুরু করেছে। তাহলে তাকে কিভাবে একনায়ক বা স্বৈরাচারী বলবো? তাহলে আমি যদি বলি-গণতন্ত্র এমন এক ব্যাবস্থা যা একজন মানুষকে গণতান্ত্রিকভাবেই একনায়ক হওয়ার সুযোগ করে দেয় তা কি ভুল বলা হবে? তাহলে তো গণতন্ত্র নিয়ে এত চিল্লাচিল্লির কিছু নাই।

কি বলেন?? ইহা সম্পূর্ণই ব্যাক্তিগত চিন্তা।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।