একইসঙ্গে সরকারকে যারা ‘বিব্রত’ করছে, তাদের সরে যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় নাসিম বলেন, “সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আমাদের প্রচণ্ড ধাক্কা দিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। ভুল এবং ত্রুটি শুধরাতে হবে। এখন আমরা কোন দিকে যাব এ সিদ্ধান্ত আমাদেরকেই নিতে হবে, এটা চরম বাস্তব। ”
গত ১৫ জুন রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট এবং ৬ জুলাই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমথির্ত প্রার্থীদের পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা।
গাজীপুরের নির্বাচনের পর দলীয় নেতাদের কথায় স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভাজনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাও বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে নেতা কর্মীদের ‘অন্তর্কলহ’ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘হাতে সময় খুবই কম’ মন্তব্য করে নাসিম বলেন, এর মধ্যেও ‘ক্রুটি-বিচ্যুতি’ সংশোধন করতে হবে। জনগণের ওপর আস্থা রাখতে হবে।
“বিভ্রান্তির কুয়াশা কেটে যাবে।
একদিন সত্য বেরিয়ে আসবে। তবে আমাদের কাজ করতে হবে। শুধু স্লোগান দিলে কাজ হবে না। দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কীভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়। ”
কারো নাম উল্লেখ না করে নাসিম বলেন, “সরকারকে বিব্রত যারা করেন, সরকার থেকে সরে যান।
জনগণের কথা বুঝুন। আমরা আপনাদের দায়িত্ব নিতে পারি না। ”
এই আওয়ামী লীগ নেতার আশা, জনগণ সামায়িকভাবে ‘ভুল বুঝতে না পারলেও’ এক সময় তারা তা বুঝতে পারবে।
একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান নাসিম।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের দিকে ইংগিত করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে ঠেকানোর নামে জামায়াত ও হেফাজতে ইসলামের মতো ধর্মভিত্তিক দলকে সমর্থন দিয়ে দেশকে ভয়াবহ সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
ক্ষমতার লোভ ও ক্ষমতার মোহের পরিণতি এই সমাজ ও দলটিকে একদিন ভোগ করতে হবে। ”
রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার রোধে সিদ্ধান্ত নিতে হবে মন্তব্য করে নাসিম বলেন, “ধর্মীয় অনুভূতিকে উস্কে দিয়ে, মিথ্যাচার করে কেউ যেন জনগণকে বিভ্রান্ত করতে না পারে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি। ”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের সময়ে সব নির্বাচন ‘সুষ্ঠুভাবে’ অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
নাসিম বলেন, “নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে তা মেনে নেব।
সরকার নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেনি, কোনো নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেও না। ”
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “সামনের পথ কঠিন পথ। সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করে এগিয়ে যেতে হবে। গণতন্ত্রের বিকল্প গণতন্ত্রই। তবে একে ধ্বংস করার চক্রান্তও চলবে।
”
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে নাসিম বলেন, “আন্দোলনের হুমকি দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যায় এগিয়ে আসবেন না। লেবু বেশি টিপলে তিতা হয়ে যায়। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তাহলে অবিশ্বাস কিসে?”
স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতি ‘রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার রোধে শিক্ষক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে কৃষক লীগের সহ-সভাপতি এম এ করিম ও শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু সভায় বক্তব্য দেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।