আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাতু মালয়েশিয়া - ৯

আগের পর্ব- Click This Link গেনটিং নিয়ে আরেক প্রস্থ একের পর এক পাহাড় পার হয়ে পৌঁছুলাম মনজিলে মকসুদে ! কেবল উঠতেই থাকে কেবল কার ! অবশেষে নেমে হাঁফ ছাড়লাম। কেবল কারের পেট থেকে বের হয়ে খুশ মেজাজে ! এরপর গাইড আমাদের নিয়ে হোটেলের ভেতর দিয়ে পার হতে হতে এর বৃত্তান্ত জানালেন। বাহাসা মালায়ুতে এর নাম তানাহ তিঙ্গি গেনটিং। সেলাঙ্গর আর পাহাং রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত এই দুর্দান্ত ট্যুরিস্ট রিসোর্টটি। মূল অংশ অবশ্য পাহাং-এ পড়েছে।

বর্তমান মালয়ী প্রধানমন্ত্রী নজীব তুন রাজাক এক সময় পাহাংয়ের মুখ্যমন্ত্রী ( বাহাসা মালায়ুতে মেনতিরি বেসার) ছিলেন। গেনটিংয়ের দজ্ঞযজ্ঞ পরিচালনা করে গেনটিং মালয়েশিয়া বেরহাড। আগে নাম ছিলো রিসোর্টস ওয়ার্ল্ড বেরহাড। ১৯৬৪ সালে ক্যামেরন হাইল্যাণ্ডে বেড়াতে গিয়ে প্রয়াত তান সেরি লিম গোহ টং-এর মাথায় আসে এরকম একটা রিসোর্ট তৈরীর কথা। ভাবনা মোতাবেক কাজে নেমে পড়লেন।

২৭ এপ্রিল ১৯৬৫ মরহুম তান সেরি হাজী মোহাম্মদ নোয়াহ বিন ওমরকে সাথে নিয়ে তান সেরি লিম গড়ে তোলেন গেনিটিং হাইল্যাণ্ড বেরহাড। এজন্য পাহাং সরকার থেকে ১২ হাজার একর এবং সেলাঙ্গর থেকে ২৮০০ একর (সব মিলে প্রায় ৬০ বর্গ কিলোমিটার ) জমি লিজ নেন তারা। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে এগিয়ে চলে কাজ। ৩১ মার্চ ১৯৬৯ মালয়েশিয়ার প্রথম প্রধানমন্ত্রী টুংকু আবদুল রহমান পুত্রা প্রথম হোটেলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। সে হোটেলের নাম প্রথমে ছিলো হাইল্যাণ্ডস হোটেল।

১৯৭১ সালে হোটেলটির নির্মান শেষ হয়। এখন নাম থিমপার্ক হোটেল। এখন সেখানে আছে আরো ৫টি হোটেল- ম্যাক্সিমস হোটেল, ফার্স্ট ওয়াল্ড হোটেল, গেনটিং হোটেল,হাইল্যাণ্ডস হোটেল ও রিসোর্ট হোটেল। এই ছয়টি হোটেলে আছে ১০ হাজারের মতো কক্ষ। একটিতেই আছে সাড়ে ৬ হাজার রুম।

গাইড জানালেন রুম সংখ্যায় এটিই বিশ্বের বৃহত্তম হোটেল। ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড হোটেল হোটেলের সাথে আছে চোখ ধাঁধানো ইনডোর আর আউটডোর থিম পার্ক। আমরা ইনডোরটায় ঘুরেছি, কিছু রাইডে চড়েছি। বাইরে একবারও পা ফেলতে পারিনি তুমুল বৃষ্টির জন্য। ভেতর থেকে দেখা বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা বাইরের থিমপার্ক শিশুদের জন্য এক স্বপ্নের ভূবন এইসব ঘোরাঘুরির সাথে আছে অনেকগুলো রেস্তোরাঁ, থ্রিডি মুভি দেখার সুযোগ, প্যাভিলিয়ন হল, কনভেনশন সেন্টার।

আর আছে বিশাল ক্যাসিনো ! চারপাশে লোকে লোকারণ্য ! মেঘ বৃষ্টির কারণে বেশ ঠাণ্ডা। ভাবলাম নিশ্চয়ই সেন্ট্রালি এয়ার কণ্ডিশনড। শেষ পর্যন্ত বুঝলাম আসলেই এয়ার কণ্ডিশনড। তবে সেটা আক্ষরিক অর্থেই ন্যাচারাল ! এক জায়গায় বড়োসড়ো জায়গা ফাঁকা রয়েছে। সেখান দিয়ে অবাধে হু হু করে ঢুকছে মেঘলা বাতাস।

সেই মেঘের শীতলতা দিয়ে ঠাণ্ডা রাখা হচ্ছে। ঢুকছে মেঘলা বাতাস ! এভাবে ঘুরে ঘুরে দেখলাম। দুপুরে খেলাম এক ভারতীয় রেস্তোরাঁয়। এক সময় সময় ফুরালো। উঠে বসলাম বাস পারসিয়ারানে।

বেরিয়ে পড়লাম ঝুম বৃষ্টিতে। ভিজতে ভিজতে ফিরে চললাম কুয়ালা লামপরের পথে। মনটা ভিজে রইলো ভালো লাগা আর গেনটিংকে ছেড়ে আসার বেদনায়। (চলবে)  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।