আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাতু মালয়েশিয়া - ১

মালয়েশিয়া বো'লে ! Click This Link অবতরনিকা মাত্র এক বছরের মধ্যেই আবার মালয়েশিয়া যাবার সুযোগ পাবো এটা কখনোই ভাবিনি। গত বছর ট্রেনিং ছিলো ১২ থেকে ২৩ জুলাই, এবার ১৮ থেকে ২৯ জুলাই। এবারো জ্বালানী বিষয়ক ট্রেনিং। এবারের উদ্যোক্তা আমরাই। ফলে যাওয়া আসা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা আমাদেরকেই করতে হয়েছে।

প্রস্তুতি চলেছে অনেক আগে থেকে। এবার ১৩ জনের দল। মালয়েশিয়া ভ্রমনের পূর্ব অভিজ্ঞতা শুধু আমার। বাকী সবাই এবারেই প্রথম। ফলে নেতা বনে গেলাম।

( নেতা হবার মজাই আলাদা ! হা হা হা ! ) গত বারের অভিজ্ঞতার আলোকে লিখেছিলাম ''মালয়েশিয়া বোলে''। এবারের অভিজ্ঞতা নিয়ে সাতু মালয়েশিয়া। মানে ওয়ান মালয়েশিয়া। বিদেশী কর্মীদের (বাংলাদেশ সহ) বৈধকরণ জটিলতা চলছে মালয়েশিয়ায়। তার পরও ভিসা পেতে কোন সমস্যাই হয়নি।

বরং স্পেশাল খাতিরও পেয়েছি। আমাদের একজনের মা অসুস্থ বলে শেষ মুহূর্তে নতুন এক জন দলে ঢুকলেন। সকালে আবেদন নিয়ে বেলা তিনটায় ভিসা দিয়েছে মালয়েশীয় হাই কমিশন। অথচ আমার এক সহকর্মীর অফিস আদেশে একদিন দেরীর কারণে ভারতের ভিসা পেতে ৭ দিন বেশী লেগেছে। শুভযাত্রা ১৬ জুলাই রাত সাড়ে ৮টায় ফ্লাইট।

এবারের বাহন বাংলাদেশ বিমান। বোর্ডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেশন পেরিয়ে ভেতরে ঢোকার পর জানলাম বিমান উড়বে সোয়া ঘন্টা বিলম্বে। কিন্তু এয়ারপোর্টের মনিটর দেখিয়ে চলেছে আসেল সময় ! রাত সোয়া ৮টায় মনিটর চেহারা বদল করে রাত পৌনে দশটার কথা জানালো। ভেতরে ঢুকে মন ভালো হয়ে গেলো। বিমানের চেহারা সুরত মাশাল্রাহ ভালোই।

সবুজ বলাকার ছবিওয়ালা বোয়িং ৭৩৭। ঢোকার মুখে খালাম্মার বদলে স্বাগত জানালেন এক বড়ো আপা। এর আগে ঢাকা-কলকাতা ফ্লাইটে যাওয়া আর আসার সময় দুই সেট মেজাজী খালাম্মার পাল্লায় পড়েছিলাম। খোশ মেজাজে ভ্রমন শুরু হলো। আবহাওয়া ভালো ছিলো।

মাঝে সাগরের ওপরে কিঞ্চিৎ ঝাঁকি বাদে পুরো পথ আরামে গেলাম। স্থানীয় সময় রাত পৌনে চারটায় নামলাম সিপাং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। মালয়েশিয়ায় যার জনপ্রিয় নাম কেএলআইএ। (কুয়ালা লামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট) বিমানবন্দরের চোখ ধাঁধানো রূপ পুরোটাই বজায় আছে। ট্রেনে চেপে কনভেয়ার বেল্টে চেপে পৌঁছুলাম ইমিগ্রেশনে।

ঘুমঘুম চোখে বসে আছেন এক ভদ্রলোক। প্রথম যাত্রী আমি। আমার এক সহকর্মী আমার পাশে দাঁড়াতেই হজুরের চেহারা বদলে গেলো। আমার সহকর্মীকে আঙুলের ইশারায় অপেক্ষার জায়গায় দাগের ওপারে যেতে বললেন। আমার মেশিন রিডেবল পাসপোর্টখানা দেখে ঢুলুঢুলু চোখে চেহারা মেলালেন।

এরপর ইশারা করলেন একটু বামে সরার জন্য। সরলাম। তারপর তুলে দেখালেন দুই হাতের তর্জনী। আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরে বুঝলাম সামনে রাখা মেশিনের কাঁচে দুই তর্জনী রাখতে হবে।

আঙুলের ছাপ রাখা হলো। বেশ সময় নিয়ে সব দেখে ধুমধাম সিল মেরে ইশারায় পথ দেখালেন। তার ইশারাবাজী চলতেই থাকলো। আমার ধারনা বস এবং বউয়ের ডাবল পেদানী খেয়ে তার এই দশা হয়েছিলো ! করোনেড হোটেল (বুকিত বিনতাং) এবার থেকেছি বুকিত বিনতাং এলাকায় জালান ওয়াল্টার গ্রানিয়ের-এ হোটেল করোনেড-এ। বাহাসা মালায়ুতে বুকিত মানে পাহাড় আর বিনতাং মানে তারা।

বুকিত বিনতাং আসলে তারার মেলাই। পর্যটকবান্ধব মালয়েশিয়া এই এলাকাটিকে পর্যটকদের অভয়ারন্য বানিয়ে রেখেছে। তবে মালয়ীদের জন্য বিধিনিষেধ আছে। সারাদিন পর্যটনরত পরীদের পদচারনায় মুখর থাকে বুকিত বিনতাং। সন্ধ্যার আলোতে বসে প্রকৃত তারার মেলা।

রাত যতো বাড়ে রংও তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে। নাচগান পানাহারে জমজমাট থাকে চারপাশ। স্থানীয়দের মধ্যে চীনা আর ভারতীয়রা এই রঙের মেলায় সামিল থাকে। পার্টির পর পার্টি চলে। ট্রেনিংক্লান্ত আমরা পথে পথে এইসব দেখে করোনেডের নিরস কক্ষে ফিরে আসি আর হাহুতাশ করি।

(চলবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।