আগের পর্ব-
Click This Link
স্পাইস অব ইণ্ডিয়া
পরদিন দুপুরে আমাদের দাবীর মুখে নেয়া হলো ভারতীয় রেস্তোরাঁয়। নাম ''স্পাইস অব ইণ্ডিয়া''। হাতী সাইজের কুচকুচে কালো এক ভদ্রলোক আকর্ণবিস্তৃত হাসিতে আমাদের স্বাগত জানালেন। বেশ চটপটে। হাতী সাইজের লোক দেখি হরিণের মতো চঞ্চল ! জানতে চাইলাম আপনার বাড়ী ভারতের কোথায় ? জবাবে বললেন, আমি মালয়েশীয়।
তার মানে শ'খানেক বছর আগে আসা ভারতীয় কোন পরিবারে জন্ম। রেস্তোরার অন্য ভারতীয়দের সাথে তামিল ভাষা ব্যবহার করছিলেন। ( এর দু'দিন পর পাশের রেস্তোরাঁয় বসে খাবার সময় শুনি ওই ভদ্রলোক আরেক ভারতীয় কাস্টমারের কাছে নিজের পরিচয় দিলেন ভারতীয় বলে ! আজব !!)
এখানে মেন্যু নির্ধারিত। পছন্দ ভেজ, ননভেজ। ননভেজ দুই প্রকার মাটন (পাঁঠা কিনা আল্লাহ মালুম) আর চিকেন।
আমি চিকেন চাইলাম। অনেকে গেলেন মাটনে। এক সহকর্মী চাইলেন, বীফ। সবিনয়ে বললেন, নো বীফ স্যার। আমি বললাম, আপনি কাজ পেলেন না।
ভারতীয় রেস্তোরাঁয় খোঁজেন বীফ !
বিশাল থালায় খাবার এলো। একটা নানরুটি, একবাটি সাদা ভাত, মুরগীর ঝোল, মটরশুটির ঝোল ইত্যাদি। ঝাল মসলায় সয়লাব। তারপরও পেট পুরে খেলাম সবাই। স্যুপটাও সুস্বাদু।
ডেজার্ট দই। তার আগে আইস কফি।
দুই সপ্তাহে চার বার গেছি স্পাইস অব ইণ্ডিয়ায়। আমি সবসময় চিকেনেই ছিলাম।
ব্লগার সত্যচারীর সাথে প্রথম সন্ধ্যা
যাবার আগে মালয়েশিয়ায় থাকা দু'তিন জনের ব্লগে ঢুঁ দিয়েছিলাম।
অলস ছেলে জানালেন তিনি আর মালয়েশিয়ায় নেই। সত্যচারী সাড়া দিলেন। মেইলে তার সেল নাম্বার পেলাম। সেখানে গিয়ে ফোনে কথা হলো। প্রথম দফায় তিনি সিডিউল মেলাতে পারলেন না কুয়ালা লামপুরের সান্ধ্যকালীন ট্রাফিক কনজেশনের জন্য।
এর পরদিন তিনি এলেন। হোটেলের কাছেই ওল্ডটাউন হোয়াইট কফি শপে বসে কফি সামনে নিয়ে দুই ব্লগারের পরিচয়। আকাশ পাতাল বহু আলাপ হলো। সত্যচারী ওখানে থাকতে থাকতে মালয়ী চেহারা পেয়ে গেছেন যেন। প্রায় ঘন্টা দুয়েক চললো আড্ডা।
মালয়েশিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হলো। কথা হলো বাংলাদেশ নিয়েও। ভারতীয় মালিকানাধীন একটা এনজিও আর আনোয়ার ইব্রাহীমের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট মিলে নির্বাচনী সংস্কারের দাবীতে আন্দোলন গড়ার চেষ্টা চলছিলো। সত্যচারী জানালেন ক্সমতাসীন বারিসন কোয়ালিশন এখনো বেশ জনপ্রিয়।
এয়ার এশিয়া বৃত্তান্ত
ঢাকা - কুয়ালা লামপুর রুটে এয়ার এশিয়া বেশ জনপ্রিয় ছিলো।
একদিকে বাজেট এয়ার হিসাবে সাশ্রয়ী ভাড়া অন্য দিকে বিকেল বেলা পৌঁছাতো বলে শহরে যেতে সুবিধা ছিলো, হোটেলে উঠতেও সুবিধা ছিলো। মালয়েশিয়ান এয়ারে গেলে সকাল ৭টায় পৌঁছে। ইমিগ্রেশন, ব্যাগেজ পাওয়া মিলে শহরে পৌঁছাতে সাড়ে ৯টা বাজে। হোটেলে রুম পেতে দুতিন ঘন্টা বসে থাকতে হয়। বাংলাদেশ বিমান পৌঁছে রাত সোয়া দুইটায়।
সাড়ে ৩টা বাজে সব ঝামেলা মিটতে। বিমান লেট হলে অবশ্য ভিন্ন কথা। এরপর সকাল ৭টা পর্যন্ত বসে থাকতে হয় বাস ট্রেন বা টেক্সির জন্য। এর আগে গেতে হলে মূল ভাড়ার সাথে ৫০% বেশী দিতে হয়। হোটেলে ওঠার জন্য বেলা ১২টা/১টা পর্যন্ত বসে থাকতে হয়।
না হলে একদিনের ভাড়া বেশী দিয়ে হোটেলে উঠতে হয়।
বাংলাদেশ কি করলো ? সেটা দিলো বন্ধ করে। ২২ জুলাইয়ের স্টার-এ দেখলাম এয়ার এশিয়া এবং জাপানের বৃহত্তম এয়ার লাইনস এএনএ ( অল নিহন এয়ারওয়েজ গ্রুপ) জয়েন্ট ভেঞ্চার চুক্তি করেছে। সরকারী অনুমতি পেলে ২০১২ সালের আগস্ট থেকে এয়ার এশিয়া জাপান নামে মালয়েশিয়া জাপানের আন্তর্জাতিক রুটের পাশাপাশি জাপানের অভ্যন্তরীন রুটেও চলবে সাশ্রয়ী এই বিমান সার্ভিস। সেক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো নারিতা বিমানবন্দরে ল্যাণ্ঢ করলে লো-কস্ট এয়ার লাইনসের কোন বিমান।
বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের অন্যতম জাপান য়েখানে সাশ্রয়ী এয়ার এশিয়ার জন্য দরজা খুলছে সেখানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গরীব দেশ বাংলাদেশ বন্ধ করে দিলো সাশ্রয়ী ( এবং সবচেয়ে সুবিধাজনক) বিমান ভ্রমনের সুযোগ।
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।