"কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরিয়া গেছে.। " রোজকার অভ্যাস বশত ল্যাপি টা কোলে নিয়ে ব্রাউজারটা খুলে লিখলাম
www.........com.
কিন্তু জানালাটা খুলার নাম নাই।
"একবার না পারিলে দেখ শতবার".. মনে পড়ল কালী বাবুর মহান বাণী।
দেখলাম শতবার কিন্তু তাতেও খুল্লোনা।
হাতুড়ি,শাবল, গাঁইতি দিয়ে চেষ্টা করলাম;
মজিলা খাতুন, অপেরা খালা, গুগল মামা, মি এক্সপ্লোরার সবার সাহায্য নিলাম কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হোলনা....
কথা একটাই ৫০৪ নম্বর বিপদ সংকেত।
তাই জানালা খুলা যাবেনা।
এদিকে মেজাজ ক্রমশ ফোর্টি নাইন হয়ে গেল।
কোন কিছুতেই শান্তি পাচ্ছিলাম না। রোজ এই জানালাটায় উঁকি মেরে বায়োস্কোপ না দেখলে রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়।
"লাগ ভেলকি লাগ চোখে মুখে লাগ"
ভিতরে কি হচ্ছে আল্লাহ জানে !
নতুন কোন হুজুগ নিয়ে ক্যাঁচাল লাগে নাইতো ?
মারামারি লাগে নাইতো?
আস্তিক নাস্তিক ,আম্লিক-বিম্পি কিংবা ছাগু-ভাদা ?
নাস্তিকের কোন অমর বাণী কিংবা হুজুরের কোন হেদায়েত মিস করলামনাতো?
বিপ্লবীরা আবার কোন বিপ্লবের ডাক দিয়েছে কি?
আজ কি শাহবাগে কোন প্রতিবাদ কর্মসূচি আছে।
হাসিনা,খালেদা, সাহারা আপনার কি খবর কে জানে !
দুর আজকের ১৮+ গুলো দেখাই হলনা !
মাথা পুরাটাই আউলাইয়া গেছে। ইহাহু তে বন্ধুরা বাজ মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু আমি নির্লিপ্ত। কিছু ভাল লাগছেনা। মাথায় একটাই পোকা ডুকে গেছে ।
www. /// .com। কোন কিছুর নেশায় পড়ে গেল বুঝি এমনই হয়। নেশা জিনিসটা আসলে খুব খারাপ। পাঠক ভাবছেন কোন জানালার কথা বলছি। বলবো তবে তার আগে নেশার কথা যখন আসলো তখন একটা কথা না বল্লেই নয়..
তখন কলেজে পড়ি।
ইন্টারনেট নাম শুনলেও জিনিসটা কি খায় না পরে জানতাম না। সামু,ফেইসবুক, টুইটারের নামগন্ধও ছিলনা।
আমরা তখন পত্রিকার পাতায় লিখালিখি করতাম। কেউ পাঠক ফোরাম, কেউ বন্ধু সভা, কেউ স্বজন আরো কত কি। বিভাগীয় সম্পাদক বরাবরে কত চিঠি কত দেন দরবার ! কত লিখা যে ওয়েষ্ট পেপার বক্স উৎকৃষ্ট খাবার হিসেবে খেয়ে নিয়েছে তার কোন হিসাব নাই।
আমি তখন আশিকে পাঠক ফোরাম। প্রতি সম্তাহে হুলদ খামে চিঠি লিখতাম বাংলা মটরের ঠিকানায়। আর নির্ঘুম অপেক্ষা করতাম কখন আসবে মঙ্গলবার ! কখন আমার লিখাটি ছাপার অক্ষরে দেখতে পাব ! আরিফ জেবতিক, সালাম ফারুক, য়াযাদ হারুন, ইন্দ্রনীল তাঁতী এদের কে পাশ কাটিয়ে আমার লিখা ছাপা হবে। চাট্টিখানি কথা নয়। তো কোন এক সপ্তাহে আমার একটা লিখা ছাপা হবে ঢাকা থেকে বন্ধু সরফরাজের মাধ্যমে নিশ্চিত হলাম।
আমাকে আর পায় কে? সোমবার থেকে উত্তেজনায় আমার সব কাজ বন্ধ । সারারাত ঘুম হয়নি। সকাল ৮ টায় হন্তদন্ত হয়ে ছুটে গেলাম আনিস ভাইয়ের সংবাদ বিতান। সমস্ত শরীরে তখন চিকন ঘামের আনাগোনা।
পকেট থেকে একটা পাঁচ টাকা আর একটা ২ টাকার নোট আনিস ভাইয়ের হাতে দিয়ে বল্লাম, " আনিস ভাই একটা পাঠক ফোরাম দেন"
আনিস ভাই আমার গালের দিকে হা করে থাকিয়ে থাকলো !
="আরে ভাই জলদি করে দেন না" - খেঁকিয়ে বল্লাম"
="কিসের পাঠক ফোরাম? আমার কছে পাঠক ফোরাম নামে কোন কাগজ নাই" - কপট রাগত স্বরে জবাব দিল আনিস ভাই।
আনিসের ভাইয়ের কথায় সম্বিত ফিরে পেলাম।
= ঈসৎ লজ্জায় গলার স্বর নামিয়ে বল্লাম, " আনিস ভাই না মানে ভোরের কাগজ?
এভাবে নেশা সবকিছু ওলট পালট করে দেয়।
সে যাকগে কি যেন বলছিলাম?
ও হ্যাঁ আমার অন্তর্জালীয় জানালা খুলার কথা।
আমাদের প্রিয় ব্লগ সাইট সামহয়্যারইনব্লগ আজ অনেকটা সময় বন্ধ ছিল। সামুর ওয়েভে ডুকতে না পেরে আজকে সারা বিকালটাই আমার মেজাজ খারাপ ছিল।
অনেক উত্তেজনা, অস্থিরতা আর চেষ্টার পর অবশেষে পৌনে তিন ঘন্টা পর খুলতে পারলাম সামুর জানালা।
খুলেই দেখলাম প্রিয় ব্লগার জাহাজী পোলার সাগর কথন।
সেটা পড়লাম। ইতি উতি চোখ বুলালাম। এইতো ভাললাগা।
এই অদ্ভুত এক ঘুম জাগানিয়া নেশা। ধীরে ধীরে মেজাজ ঠান্ডা হয়ে এসেছে।
এখন জানালাটা খোলা রেখে ইহাহুতে যাব যেখানে বন্ধুরা বিরক্ত হয়ে গুমিয়ে পড়েছে। তাদের কে জাগিয়ে কথা না বল্লেতো আবার ফোনে গালাগালি খেতে হবে!
সবাই ভাল থাকুন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।