আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাতীয় ঐক্য

গেন্দু মিয়ার চরিত্র – ফুলের মতন পবিত্র! বাঙ্গালীরা – টু বি মোর স্পেসিফিক – বাংলাদেশের বাঙ্গালীরা সব কাজেই দ্বিধা বিভক্ত। কিছু মানুষ একটা জিনিস সমর্থন দিলে বাকিরা দৌড়ে যায় ঠিক বিপরীত দিকটাতে। জাতীয় স্লোগান কী হওয়া উচিৎ? ১) জয় বাংলা ২) বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্বাধীনতার ঘোষক কে (অপশন গুলা আর বললাম না) ক্ষমতায় কার আশা উচিৎ? ১) চার দল ২) আঠারো দল কে সবচেয়ে বড় চোর? ১) আওয়ামী লীগ ২) বি,এন,পি, বিশ্বকাপ ফুটবলে কাকে সমর্থন দেয়া উচিৎ? ১) আর্জেন্টিনা ২) ব্রাজিল (শহুরে ফুটবল বিশারদ রা অবশ্য ব্যতিক্রম) … তালিকা চলতেই থাকবে… এর কোন শেষ নাই। যখন-ই দেখবেন রাস্তায় কোন দু’জনের একটা ঝগড়া লেগে গেছে উপস্থিত জনতা সাথে সাথে দুই ভাগে ভাগ হয়ে পন্ডিতি করা শুরু করবে (এক্ষেত্রেও অল্প কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া)। এমনকি, আমার মনে হয় কখনো যদি এই প্রশ্নটিও করা হয়, যে “বাংলাদেশের বাঙ্গালীরা সব কাজেই দ্বিধা বিভক্ত- আপনি এটি মানেন কিনা?” অর্ধেক মানুষ হ্যাঁ বলবে, আর বাকি অর্ধেক না বলবে।

বুঝুন অবস্থা! বাঙ্গালীদের একত্র করতে পারে এমন ‘কনসেপ্ট’ আল্লাহর দুনিয়াতে কমই আছে। এই প্রসঙ্গে আমার এক বন্ধুর এক অভিজ্ঞতা শেয়ার করিঃ এই বন্ধুটি একটি দুস্টু(!) প্রকৃতির। ঢাকা শহরের ট্রাফিক পুলিশদের সাথে হাতাহাতি করা থেকে শুরু করে সদলবলে প্রতিপক্ষের দৈহিক ও মানসিক ক্ষতিসাধন পর্যন্ত তার কর্মকান্ডের ব্যপ্তী। তার দুষ্টুমি মাঝে মাঝে স্বদেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও বিকশিত হয়। তো, সে একবার সবান্ধব দুষ্টুমি করতে গেলো থাইল্যান্ডের ব্যাংককে।

সারাটাদিন এখানে সেখানে ঘুরে অবশেষে সন্ধ্যায় গিয়ে ঢুকল একটা পানশালায়। সেখানেও তার দুষ্টুমি অব্যাহত। সেটা একটা ‘নো স্মোকিং জোন’ হওয়ায় এক বাউন্সার এসে বারকয়েক তাকে ধূমপান করতে নিষেধ করে এবং যথারীতি সে কোন রকম গুরুত্ব না দিয়ে আপন আনন্দে বিদ্যমান থাকে। কয়েক পেগের পর সে কিছুটা ভারসাম্যহীন, এরকম এক পর্যায়ে বাউন্সার এসে তাকে দিলো এক ধাক্কা। প্রচুর অভিজ্ঞতা থাকায় বন্ধুটি জানে যে কখন হাত পা চালাতে হয় আর কখন মুখ।

তো, সাড়ে ছয় ফুট লম্বা নাক চ্যাপ্টা বডিবিল্ডার মুর্তিমান থাই দানবের সামনে পড়ে দ্বিতীয় অপশনটাই তার বেশি পছন্দ হোল। কি আর করা? ঢাকা হলে না হয় ১৫ মিনিটের নোটিসে দশ-বারো জন জোগার করে পালটা জবাব দেয়া যেত, কিন্তু শ্যামদেশে আর আপন জন পাবে কই? সাথে থাকা সহচরেরা আবার এই বন্ধুটির তুলনায় নিতান্তই অ্যামেচার , তাদের কাছ থেকে বিশেষ সহযোগিতার আশা করা মূর্খামি। তো, যাই হোক। সে শরীরের সবটুকু শক্তি একত্র করে চিৎকার করে গালি দিয়ে উঠলোঃ- “**কির *লা!” হঠাৎ করে সবাই চুপ – মৃদু গুঞ্জন বন্ধ। হালকা লয়ে বাজতে থাকা মিউজিক যেন প্রকট হয়ে উঠলো।

এমনকি, নাচের ফ্লোরের সবাই-ও যেন স্ট্যাচু। কী ব্যাপার! আমার সে বন্ধু এবং তার সঙ্গী-সাথীরা পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মানে মানে কেটে পড়ার তাল করছে, এমন সময় দূরের একটা টেবিল থেকে শোনা গেলঃ “কী হইসে ভাই? বেদ্দপী করসে?” তারপর সে এক ইতিহাস। মুহুর্তের মধ্যে বিশ-পঁচিশ জন জড়ো হয়ে গেলো। “কী হইসে? কী হইসে?” … “হারামজাদার সাহস কত?” … “আপনার গায়ে হাত তুলসে নাকি?” … “এক্ষন ফাটায়া লামু” … আসল ঘটনা হোল কী – ঐ পানশালায় অনেক বাঙ্গালী ছিল। এই বিশেষ গালি শুনে আর আর কারো বুঝতে বাকি নেই যে চিৎকারটা করেছে সে আর কেউ নয়, তাদেরই প্রিয় স্বদেশী – খাঁটি বঙ্গদেশীয় বাঙ্গালী।

তা ছাড়া এই মহিমান্বিত গালি সারা দুনিয়ায় আর কে দিতে পারে? পশ্চিমের দাদারা কি আর এতো স্মার্ট? ‘একতাই বল’ বলে একটা কথা আছে – এর সত্যতা ঐ থাই ব্যাটারা উপলব্ধি করলো। এর মধ্যে উৎসাহী জনতার মুখে গালির ফুলঝুরি ফুটছে। কয়েকজন অতি উৎসাহে একসাথে সিগারেট ধরিয়ে ফেললো – একটা দু’টো লাথিও চললো সামনে থাকা টেবিল গুলো টার্গেট করে। যাচ্ছেতাই অবস্থা! পরে ম্যানেজার এসে হাতজোর করে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংলিশে মাপটাপ চেয়ে কোনমতে সামাল দেয়ায় আমার বন্ধু তার সঙ্গী-সাথী সহ সসম্মানে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলো। আমি অভিজ্ঞতাটা শুনে বললাম, “হায়রে বাঙ্গালী, জয় বাংলা – বাংলাদেশ জিন্দাবাদ দিয়ে তোগো এক করা যায় না… অবশেষে “**কির *লা শুনে এক হলি? প্রথম প্রশ্নে ফিরে যাই – বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান কী হওয়া উচিৎ? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.