বিশ্বের নিপীরিত মানুষের শত্রু একটাই এবং তদের ধরন একই, এরা রয়েছে অনেক দূরে। এই শত্রুরা রয়েছে যেখানে থেকে পুঁজিবাদী এলিটদের জন্ম, যেখান থেকে এরা সরকার প্রধানদের ব্যাবহার করে তাদের শক্তি প্রেরণ করে, আর ঐ সরকাররা তাদের তাঁবেদারি করে লাভবান হয়। মাদ্রাসার পাঠ্য বইয়ে জাতীয় সঙ্গীত নেই। এই দেশের পতাকাও নেই। ব্যাপারটাতে কম জানা খুব বেশি ধর্ম পালনকারী ইসলামী লোকেরা সমর্থন করছে।
তাদের অন্তর্চক্ষু খোলার প্রয়াসে আমার পাশের বাড়ির মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলেটির কাছ থেকে তাদের দাখিল আরবী সাহিত্য বইটি চাইলে সে আমাকে দিয়ে যায়। বইটি পড়ে দেখলাম সেখানে ইসলামের সবচেয়ে বিতর্কিত লেখক ইমরুল কায়েসের কিছু কবিতা শোভা পাচ্ছে। কবিতা গুলো পরিমার্জিত ও সংশোধিত। আমি ইমরুল কায়েসের কিছু কবিতা পড়েছি বেশ কয়েক বছর আগে। কবি ইমরুল কায়েস Confession জাতিয় কবিতায় ফুফাত বোনের সাথে কেলেঙ্কারীর কথা অত্যন্ত রসঘন ও আকর্ষনীয় করে কাবা ঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখেন পাঠকদের পড়ার উদ্দেশ্যে।
[সূত্রঃ শফিকুর রহমাননের সম্পাদনা ও অনুবাদে রুবাইয়াত ই ওমর খৈয়াম। ]
আমাদের মাদ্রাসা কতৃপক্ষের লোকেরা কাফির ও ইসলামের প্রকাশ্য শত্রু ইমরুল কায়েসের কবিতা পাঠ্য বইয়ে স্থান দেন কিন্তু জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা স্থান দেন না। কেন কে জানে। এ ব্যাপারে বার বার আমিনীকে জরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত বলতে হচ্ছে এই লোকটির কোন যোগ্যতাই নেই এই ব্যাপারে কথা বলবার।
তারপরও এই বিতর্কিত এই লোকটার উদৃতি দিয়ে তাকে কেন বার বার মিডিয়া হাইলাইট্স করছে বোঝা যাচ্ছে না।
আসি মূল প্রসঙ্গে সৌদি আরব তো কঠোর ধর্মপালনকারী রাষ্ট্র। তাদের পতাকায় একটা তলোয়ার ও আরবী লেখা সম্বলিত ছবি আছে। আমাদের পতাকায় কি মানুষের তৈরি কোন বস্তুর ছবি আছে? নেই। তারপরও মাদ্রাসার পাঠ্যবইয়ে পতাকা নেই।
যাই হোক কথা না বাড়িয়ে ইমরুল কায়েসের একটি Confession জাতিয় কবিতা এখানে পাঠকদের সামনে উপস্থিত করছি। তারাই বিচার করুক কেমন কবিতা গুলোকে তারা পরিমার্জিত করে পাঠ্য বইয়ে স্থান দিচ্ছে।
অনেক কুমারী নারীর... মুরগীর ডিমের মত
দাগহীন দেহের সৌষ্ঠব, আর কোনদিন ভুলে
যাদের তাবুতে অন্য পুরুষের পদক্ষেপ পরেনি কখোন-
নির্বিঘ্নে করেছি খেলা সেইসব রমনীর সাথে।
যখন উন্মত্ত আমি প্রেম-অভীপ্সায়, নিকুঞ্জের
প্রহরী এবং তার শক্তির শিবির
অনায়াসে পার হয়ে গেছি।
অথচ তাদের হাতে আমার মৃত্যুর সম্ভবনা, ছিলো
ছিলো এতটা জেনেও সঙ্গোপনে গিয়েছি সেখানে।
তখন আকাশে জ্বলে কৃত্তিকা নক্ষত্র;
পৃথিবী নিমগ্ন ঘুমে। জানালার শার্শিতে কেবল
দ্বীপ্তমান মুক্ত ছিলো একাকিনী ইচ্ছার বিলাশে।
দরজার কাছে যাই সে তখন সম্মুখে দাঁড়িয়ে
পর্দাটা আরাল করে। নিছক আমার প্রতীক্ষায়
এতক্ষন জেগেছিলো, শুধু মাত্র ঘুমের পোশাক
জড়িয়ে সোনার অঙ্গে। অবশিষ্ঠ আবরন তার
খুলছে পালঙ্কে যাবে বলে।
‘খোদার কসম’ বলে মহীয়সী সুন্দরী তখন
বাড়ালো নরম হাত, বললো; কি করে অস্বিকার
করবো তোমার প্রেম, কারন জেনেছি আমি ঠিক
দুর্বার কামনা তবু কিছুতেই এড়াবার নয়।
দুজনে উঠেছি। আর নিশ্চুপে পালিয়ে যাব বলে
নেমেছি পথের প্রান্তে; সে তখন মাথার ওরনা
বিছিয়ে দিয়েছে পথে। আমাদের পদচিহ্ন রেখা
ধুলোয় না পড়ে যেন কোন ক্রমে আর।
অথবা কাটেনা দাগ লোকচক্ষুর পথের সীমায়।
আত্মীয় স্বজন তার পর হলে পরে
আমরা মিলেছি দূর উপ্ত্যাকা ভূমির নির্জনে।
অজশ্র বালির স্তুপ পাহাড়ের মত দড়িয়ে
অন্তরাল দিয়েছিলো আমাদের গোপন মিলনে।
কুঞ্চিত চুলের গুচ্ছ আস্তে রেখে মোলায়েম হাত।
সান্নিধ্যে টেনেছি তাকে। কী আশ্চর্য আত্মসমর্পন
আমার সত্তার কাছে।
নরম বুকের গরমে
নিমগ্ন হয়েছি আমি।
সেই তার নিতম্ব সুঠাম
আশ্চর্য চিকন হয়ে মিলেছে মসৃন কোমরে।
হীরা-মুক্তা অলঙ্কার দ্যুতিময় সেখানে দেখেছি।
ছন্দময় দেহলতা, অপরূপ সুন্দরী সে নারী,
লোভনীয় দেহরেখা, আর যুগল দুই স্তনের
মাঝখানে মনে সচ্ছ এক মুকুর বসানো।
অথবা নিটল উঠপাখির ডিমের প্রতিচ্ছবি,
কাচা হলুদের আভা বিচ্ছুরিত যেন তার থেকে
মধ্যভাগা প্রবাহীত বিচিত্র ঝর্ণার জলধারা।
একটু ঝাকিয়ে কাঁধ সেই বর-নারী
আমাকে দেখালো তার গালের নরম; অতঃপর
তাকাল আমার পানে। লাজ নম্র চোখের চাহনি।
বনের হরিনী সেও হার মানে যেন
মায়াময় সে আখির চাহনীতে।
তখন গ্রীবায় কাঁপে দুধের মত সাদা তিতিরের শোভা
বাঁকালে মায়াবী গ্রীবা কীবা ছাড় বনের তিতির-
তুলনা হয়না তার অন্য কোন রমনীর সাথে।
মেঘের মত কালো হাটুঁ পর্যন্ত চুলগুলো
বিলম্বিত পিঠ, সে যেন খেজুর বৃক্ষ থেকে
বুলান আনম্র শাখা সবুজ পাতার সমারোহে।
চুলের খোপাটা যেন গুচ্ছবদ্ধ সবুজ খেজুর
মনে হত খসে যাওয়া সুবিন্যস্ত বেনীর বাঁধন
কিছুটা বিনুনিবন্ধ, বাকীসব আলোমেলো, ওড়ে।
মুখের আলো তা দূর করে রাতের আঁধার,
যেমন সন্ধায় ঘরে নিঃসঙ্গ সাধুর মোম জ্বলে’
আলোকিত প্রহর জানায়।
এমন সুন্দরী নারী, ষোল বছরের
মদির যৌবনের যার দেহ লীলায়ীত
নিছক সুবোধ কোন লাজুক পুরুষ,
আত্মহারা হবে সেই সুন্দরীর
রূপের বিলাসে। ।
-ইমরুল কায়েস।
এখানে ইমরুল কায়েসের কবিতাটি থেকে আমরা বুঝতে পারছি ঠিক কি ধরনের আলোচনা কবি এখানে তুলে ধরেছেন। এখানে বর্নিত হয়েছে নারী দেহের রসাল মন্ত্যব্য, লোক চক্ষুর অগোচরে করা জেনা। এই প্রাক ইসলামী যুগের কবি ইমরুল কায়েস সম্পর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স) বলেন ‘যে সকল কবি দোজখের আগুনে জ্বলবেন ইমরুল কায়েস তাদের নেতা। ’(A Literary History of Arabs)।
জ্বহেলীয়া যুগের ‘ক্বাদীসা’ ফিলিপ হিট্টির মতে মাত্রা ও দৈর্ঘের হিসাবে গ্রীক কবি হোমারের ‘ইলিয়ড’ ও ‘ওডেসী’ মহাকাব্যকেও হার মানায়।
কারন আবু সালমার কবিতা, আর যত লম্বায় হোক না কেন তার প্রথম থেকে শেষ একই ছন্দে অনুসারিত এতে অন্তঃমিল রক্ষা করা হয়। ক্বাদীসায় থাকে কবির প্রেমকলয়ের বর্ণনা,স্মৃতি-চারণ করতে গিয়ে রেমিকার জন্য আক্ষেপম প্রেমিকার বংশের প্রশংশা ও নিন্দা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের বর্ণনা, ব্যার্থতার উচ্ছাস, নীতিবাক্য ইত্যাদি।
কিন্তু জাহেলী যুগের ইমরুল কায়েসের ও আবু সালমার এই কবিতা গুলো পরবর্তি কালে মুসলমানরা ইসমালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সম্পাদনা করতে গিয়ে নষ্ট করে ফেলেন।
ইমরুল কায়েস আবু সালমারা যে ধরনের কবিতা লিখে গেছেন রবি ঠাকুর তার সিকি ভাগও লেখেন নাই। অথচ সেই কবিতা গুলো পরিমার্জিত করে মাদ্রাসার পাঠ্য বই গুলোতে স্থান দেয়া হচ্ছে আরবী সাহিত্য চর্চার নাম করে।
আরবী সাহিত্য চর্চা করাবে তো ইসলাম পরবর্তি যুগের সাহিত্য চর্চা করাক। তা না করিয়ে ইসলাম পূর্ববর্তি ভুলভাল আরবী চর্চা শেখান হচ্ছে কোন উদ্দেশ্যে? আমি আরবী বুঝি না। কবিতা গুলো আরবীতে লেখা আছে। দেখে শুনে যতটুকু বুঝেছি এই প্রতিভাধর কবিদের কবিতা না দিয়ে অনেক সন্মানিত কবিদের কবিতা পাঠ্য বইয়ে উল্লেখ করা যেত। আমি সুনির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করতে চাই না।
আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। আমি কোনভাবেই ইসলামের অপমর্জাদা করি নাই। আমি শুধু মাত্র তথাকথিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে আরবী সাহিত্যের একটা দিক তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমার ভুল হয়ে থাকলে, এবং ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে আমি যারপরনাই আনন্দিত হব।
মাদ্রাসার পাঠ্য বইয়ে জাতীয় সঙ্গীত নেই।
এই দেশের পতাকা নেই। ব্যাপারটাতে কম জানা খুব বেশি ধর্ম পালনকারী ইসলামী লোকেরা সমর্থন করছে। তাদের অন্তর্চক্ষু খোলার প্রয়াসে আমার পাশের বাড়ির মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলেটির কাছ থেকে তাদের দাখিল আরবী সাহিত্য বইটি চাইলে সে আমাকে দিয়ে যায়। বইটি পড়ে দেখলাম সেখানে ইসলামের সবচেয়ে বিতর্কিত লেখক ইমরুল কায়েসের কিছু কবিতা শোভা পাচ্ছে। কবিতা গুলো পরিমার্জিত ও সংশোধিত।
আমি ইমরুল কায়েসের কিছু কবিতা পড়েছি বেশ কয়েক বছর আগে। কবি ইমরুল কায়েস Confession জাতিয় কবিতায় ফুফাত বোনের সাথে কেলেঙ্কারীর কথা অত্যন্ত রসঘন ও আকর্ষনীয় করে কাবা ঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখেন পাঠকদের পড়ার উদ্দেশ্যে। [সূত্রঃ শফিকুর রহমাননের সম্পাদনা ও অনুবাদে রুবাইয়াত ই ওমর খৈয়াম। ]
আমাদের মাদ্রাসা কতৃপক্ষের লোকেরা কাফির ও ইসলামের প্রকাশ্য শত্রু ইমরুল কায়েসের কবিতা পাঠ্য বইয়ে স্থান দেন কিন্তু জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা স্থান দেন না। কেন কে জানে।
এ ব্যাপারে বার বার আমিনীকে জরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত বলতে হচ্ছে এই লোকটির কোন যোগ্যতাই নেই এই ব্যাপারে কথা বলবার। তারপরও এই বিতর্কিত এই লোকটার উদৃতি দিয়ে তাকে কেন বার বার মিডিয়া হাইলাইট্স করছে বোঝা যাচ্ছে না। এক ছাত্রকে বলতে শুনেছি জাতীয় সঙ্গীত না থাকার একটা বড় কারন জাতীয় সঙ্গীত নাকি বিধর্মি কোন কবির লেখা। আমার মন্ত্যব্য তবে ইমরুল কায়েসও তো বিধর্মি সাথে কাফিরও ছিলেন।
আসি মূল প্রসঙ্গে সৌদি আরব তো কঠোর ধর্মপালনকারী রাষ্ট্র। তাদের পতাকায় একটা তলোয়ার ও আরবী লেখা সম্বলিত ছবি আছে। আমাদের পতাকায় কি মানুষের তৈরি কোন বস্তুর ছবি আছে? নেই। তারপরও মাদ্রাসার পাঠ্যবইয়ে পতাকা নেই।
যাই হোক কথা না বাড়িয়ে ইমরুল কায়েসের একটি Confession জাতিয় কবিতা এখানে পাঠকদের সামনে উপস্থিত করছি।
তারাই বিচার করুক কেমন কবিতা গুলোকে তারা পরিমার্জিত করে পাঠ্য বইয়ে স্থান দিচ্ছে।
অনেক কুমারী নারীর... মুরগীর ডিমের মত
দাগহীন দেহের সৌষ্ঠব, আর কোনদিন ভুলে
যাদের তাবুতে অন্য পুরুষের পদক্ষেপ পরেনি কখোন-
নির্বিঘ্নে করেছি খেলা সেইসব রমনীর সাথে।
যখন উন্মত্ত আমি প্রেম-অভীপ্সায়, নিকুঞ্জের
প্রহরী এবং তার শক্তির শিবির
অনায়াসে পার হয়ে গেছি।
অথচ তাদের হাতে আমার মৃত্যুর সম্ভবনা, ছিলো
ছিলো এতটা জেনেও সঙ্গোপনে গিয়েছি সেখানে।
তখন আকাশে জ্বলে কৃত্তিকা নক্ষত্র;
পৃথিবী নিমগ্ন ঘুমে।
জানালার শার্শিতে কেবল
দ্বীপ্তমান মুক্ত ছিলো একাকিনী ইচ্ছার বিলাশে।
দরজার কাছে যাই সে তখন সম্মুখে দাঁড়িয়ে
পর্দাটা আরাল করে। নিছক আমার প্রতীক্ষায়
এতক্ষন জেগেছিলো, শুধু মাত্র ঘুমের পোশাক
জড়িয়ে সোনার অঙ্গে। অবশিষ্ঠ আবরন তার
খুলছে পালঙ্কে যাবে বলে।
‘খোদার কসম’ বলে মহীয়সী সুন্দরী তখন
বাড়ালো নরম হাত, বললো; কি করে অস্বিকার
করবো তোমার প্রেম, কারন জেনেছি আমি ঠিক
দুর্বার কামনা তবু কিছুতেই এড়াবার নয়।
দুজনে উঠেছি। আর নিশ্চুপে পালিয়ে যাব বলে
নেমেছি পথের প্রান্তে; সে তখন মাথার ওরনা
বিছিয়ে দিয়েছে পথে। আমাদের পদচিহ্ন রেখা
ধুলোয় না পড়ে যেন কোন ক্রমে আর।
অথবা কাটেনা দাগ লোকচক্ষুর পথের সীমায়।
আত্মীয় স্বজন তার পর হলে পরে
আমরা মিলেছি দূর উপ্ত্যাকা ভূমির নির্জনে।
অজশ্র বালির স্তুপ পাহাড়ের মত দড়িয়ে
অন্তরাল দিয়েছিলো আমাদের গোপন মিলনে।
কুঞ্চিত চুলের গুচ্ছ আস্তে রেখে মোলায়েম হাত।
সান্নিধ্যে টেনেছি তাকে। কী আশ্চর্য আত্মসমর্পন
আমার সত্তার কাছে। নরম বুকের গরমে
নিমগ্ন হয়েছি আমি।
সেই তার নিতম্ব সুঠাম
আশ্চর্য চিকন হয়ে মিলেছে মসৃন কোমরে।
হীরা-মুক্তা অলঙ্কার দ্যুতিময় সেখানে দেখেছি।
ছন্দময় দেহলতা, অপরূপ সুন্দরী সে নারী,
লোভনীয় দেহরেখা, আর যুগল দুই স্তনের
মাঝখানে মনে সচ্ছ এক মুকুর বসানো।
অথবা নিটল উঠপাখির ডিমের প্রতিচ্ছবি,
কাচা হলুদের আভা বিচ্ছুরিত যেন তার থেকে
মধ্যভাগা প্রবাহীত বিচিত্র ঝর্ণার জলধারা।
একটু ঝাকিয়ে কাঁধ সেই বর-নারী
আমাকে দেখালো তার গালের নরম; অতঃপর
তাকাল আমার পানে।
লাজ নম্র চোখের চাহনি।
বনের হরিনী সেও হার মানে যেন
মায়াময় সে আখির চাহনীতে।
তখন গ্রীবায় কাঁপে দুধের মত সাদা তিতিরের শোভা
বাঁকালে মায়াবী গ্রীবা কীবা ছাড় বনের তিতির-
তুলনা হয়না তার অন্য কোন রমনীর সাথে।
মেঘের মত কালো হাটুঁ পর্যন্ত চুলগুলো
বিলম্বিত পিঠ, সে যেন খেজুর বৃক্ষ থেকে
বুলান আনম্র শাখা সবুজ পাতার সমারোহে।
চুলের খোপাটা যেন গুচ্ছবদ্ধ সবুজ খেজুর
মনে হত খসে যাওয়া সুবিন্যস্ত বেনীর বাঁধন
কিছুটা বিনুনিবন্ধ, বাকীসব আলোমেলো, ওড়ে।
মুখের আলো তা দূর করে রাতের আঁধার,
যেমন সন্ধায় ঘরে নিঃসঙ্গ সাধুর মোম জ্বলে’
আলোকিত প্রহর জানায়।
এমন সুন্দরী নারী, ষোল বছরের
মদির যৌবনের যার দেহ লীলায়ীত
নিছক সুবোধ কোন লাজুক পুরুষ,
আত্মহারা হবে সেই সুন্দরীর
রূপের বিলাসে। ।
-ইমরুল কায়েস।
এখানে ইমরুল কায়েসের কবিতাটি থেকে আমরা বুঝতে পারছি ঠিক কি ধরনের আলোচনা কবি এখানে তুলে ধরেছেন।
এখানে বর্নিত হয়েছে নারী দেহের রসাল মন্ত্যব্য, লোক চক্ষুর অগোচরে করা জেনা। এই প্রাক ইসলামী যুগের কবি ইমরুল কায়েস সম্পর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স) বলেন ‘যে সকল কবি দোজখের আগুনে জ্বলবেন ইমরুল কায়েস তাদের নেতা। ’(A Literary History of Arabs)।
জ্বহেলীয়া যুগের ‘ক্বাদীসা’ ফিলিপ হিট্টির মতে মাত্রা ও দৈর্ঘের হিসাবে গ্রীক কবি হোমারের ‘ইলিয়ড’ ও ‘ওডেসী’ মহাকাব্যকেও হার মানায়। কারন আবু সালমার কবিতা, আর যত লম্বায় হোক না কেন তার প্রথম থেকে শেষ একই ছন্দে অনুসারিত এতে অন্তঃমিল রক্ষা করা হয়।
ক্বাদীসায় থাকে কবির প্রেমকলয়ের বর্ণনা,স্মৃতি-চারণ করতে গিয়ে রেমিকার জন্য আক্ষেপম প্রেমিকার বংশের প্রশংশা ও নিন্দা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের বর্ণনা, ব্যার্থতার উচ্ছাস, নীতিবাক্য ইত্যাদি।
কিন্তু জাহেলী যুগের ইমরুল কায়েসের ও আবু সালমার এই কবিতা গুলো পরবর্তি কালে মুসলমানরা ইসমালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সম্পাদনা করতে গিয়ে নষ্ট করে ফেলেন।
ইমরুল কায়েস আবু সালমারা যে ধরনের কবিতা লিখে গেছেন রবি ঠাকুর তার সিকি ভাগও লেখেন নাই। অথচ সেই কবিতা গুলো পরিমার্জিত করে মাদ্রাসার পাঠ্য বই গুলোতে স্থান দেয়া হচ্ছে আরবী সাহিত্য চর্চার নাম করে। আরবী সাহিত্য চর্চা করাবে তো ইসলাম পরবর্তি যুগের সাহিত্য চর্চা করাক।
তা না করিয়ে ইসলাম পূর্ববর্তি ভুলভাল আরবী চর্চা শেখান হচ্ছে কোন উদ্দেশ্যে? আমি আরবী বুঝি না। কবিতা গুলো আরবীতে লেখা আছে। দেখে শুনে যতটুকু বুঝেছি এই প্রতিভাধর কবিদের কবিতা না দিয়ে অনেক সন্মানিত কবিদের কবিতা পাঠ্য বইয়ে উল্লেখ করা যেত। আমি সুনির্দিষ্ট নাম উল্লেখ করতে চাই না।
আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে।
আমি কোনভাবেই ইসলামের অপমর্জাদা করি নাই। আমি শুধু মাত্র তথাকথিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে আরবী সাহিত্যের একটা দিক তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমার ভুল হয়ে থাকলে, এবং ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে আমি যারপরনাই আনন্দিত হব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।