আকাশটা ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে
গতকাল ল্যাপটপ দোয়েল উদ্বোধন করে
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এখন থেকে
ছাত্রছাত্রীদেরকে এভাবে আর বইয়ের বোঝা নিয়ে আর স্কুলে যেতে হবে না, কারণ দোয়েলে তাদের সকল পাঠ্যপু্স্তকের সফট কপি থাকবে
এখন থেকে তারা একটা নোটবুক নিয়ে হাসি মুখেই স্কুলে যেতে পারবে, আর এই নোট বুকের মাধ্যমেই তাদের সকল পড়াশুনা করতে পারবে
ক্লাসের পুরোনো এই চিত্রটাও আর থাকবে না
তার বদলে ক্লাসের চিত্রটা হতে পারে এই রকম
ছাত্রছাত্রীরা টিফিন পিরিয়ডে ক্লাসের চিত্রটা এমনি দেখাবে
কিন্তু ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কেউ এইভাবে ফেসবুক কিংবা অন্যকোন সামাজিক সাইটেও ডুমারতে পারবে
আরো যেসব পরিবর্তন আসতে পারে
নতুন কর্মসংস্থান
প্রত্যেক স্কুল কলেজে সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের নতুন পোস্ট তৈরি হইব। তাতে জাতির বেকার সমস্যাও দূরিভূত হইব।
বিনিয়োগ বাড়ব
ছেলেমেয়েদের পড়ালেখায় বাবা-মাদের বিনিয়োগ বাড়ব। এতদিন ক্লাস নাইনের একসেট পাঠ্য বই কিনতে তাদের ব্যয় করতে হয়েছে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। এখন তার সাথে যোগ হবে একটা ল্যাপটপের জন্য অন্তত দশ হাজার এবং তার সাথে নেটকানেকশানের পিছনে মাসে মাসে --- টাকা, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য --- টাকা।
ফাঁকিবাজ ছাত্রদের সুবিদা
নোটবুক চালাতে ব্যাটারি লাগবে, আর সেই ব্যাটারি চার্জ করতে লাগবে কারেন্ট। কিন্তু আমাদের দেশে লোডশেডিংয়ের যা অবস্থা, তাতে ফাঁকিবাজ স্টুডেন্টরা পড়া না শিখে স্কুলে গিয়ে বলতে পারবে, যে স্যার কাল রাতে কারেন্ট ছিল না তাই নোটবুক চালাতে পারিনি পড়া শিখব কিভাবে? কিংবা আমার নোটবুক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। কিংবা মাদার বোর্ড/হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে গেছে, সফটওয়্যার সমস্যা ইত্যাদি ইত্যাদি বলে পাশকাটানো কঠিন হবে না।
চ্যাপ্টারটা ডিলিট হয়েগেছে!
আগে যারা মাঝে মাঝে বই খাতা সের ধরে বিক্রি কইরা বিড়ি সিগেরেট খাইত, আর বাসায় আইয়া কইত বই হারায়া গেছে তাগো সুবিধা হইব। ল্যাপটপ বিক্রি কইরা আইসা কইব ইয়া বড় শন্ডা মার্কা এক লোক পিস্তল দেখাইয়া কাইড়া লইয়া গেছে!!
পড়ার টেবিলে বসে নোটবুকে কোন বইয়ের পেইজ ওপেন রেখেই ফেসবুকে আড্ডা দিবে।
মা, পেছন থেকে জিজ্ঞেস করলে একটা মাত্র ক্লিক করেই বইয়ের পাতায় এসে বলবে এই তো স্কুলের পড়া পড়ছি!
গল্প উপন্যাস পড়ার সুবিধা
আগে যারা পাঠ্য বইয়ের আড়ালে রাইখা অতি সাবধানে গল্প উপন্যাসের বই পড়ত তাগোও আর কষ্ট করতে হইব না। এখন গল্প উন্যাসের পিডিএফ কপি খুব সহজেই পাওয়া যায়। একবার খালি ল্যাপটপে নামাইয়া লইলেই হইল। তারপর আর ঠেকায় কে? কোন গল্প/উপন্যাস আর কোনটা যে পাঠ্য বই তা গুরুজনরা বুঝলে তবেই না কথা। আর তা না হলে অপার স্বাধীনতা!!
অটো মেকানিক তৈরি হবে
কিছু বিচ্ছু টাইপ পোলাপান থাকে, যারা হাতের কাছে যে কোন যন্ত্র পেলেই তার নাট-বল্টু খুলে দেখতে চায়।
দেখতে চায় ভিতরে কি কি আছে। এই বিচ্ছু টাইপ পোলাপানের হাতে পড়লে ল্যাপটপের ভিতর কোথায় কি আছে তাও তারা আবিষ্কার করে ফেলবে। সেই সাথে ক্রমেই এই বিষয়ে বিজ্ঞ/ অবিজ্ঞ অটো মেকানিকও তৈরি হবে।
হকারদের লাভ
আগে বই-খাতা পুরাতন হলে সের দরে বিক্রি করা হতো হকারদের কাছে/ কিংবা ভাঙ্গারির দোকানে। এখন ল্যাপটপ পুরাতন/ অকেজো হলে তাও তাগো কাছে যাইতে পারে।
এতে হকার গো দুই ধরণের লাভ। এক. তাগো স্ট্যাটাস বাড়ব। দু্ই. আর্থিক লাভও বেশি হইব।
চোরদের সুবিধা
আগে কোন চোর হয়ত ছাত্রছাত্রীদের বই চুরির চিন্তা তেমন একটা করত না। কিন্তু এখন ল্যাপটপ/ নোটবুক তাদের একটি প্রিয় লক্ষ্য বস্তুই হবে, এতে কোন সন্দেহ নেই।
ছিনতাইকারীরা আগে ছাত্রছাত্রীদের লক্ষ্য না করলেও এখন থেকে তাদের প্রিয় টার্গেট হবে। তবে দুই একটা ক্ষেত্রে স্কুলের ক্ষুদে বাহিনীর হাতে ধরাও পড়তে পারে কোন চোর বা ছিনতাইকারী। ফলে স্কুলপড়ুয়াদের কেউ কেউ চোর ধরে হিরোও বনে যেতে পারে।
পরিবর্তন আরো আসবে। কিন্তু সেগুলো কি কি জানা থাকলে আনারাই যোগ করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।