রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) বিল-২০১৩ সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
সংশোধিত আইনে ব্যাংক কোম্পানির পরিচালকের সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে তিন বছর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বের সর্বোচ্চ দুই মেয়াদ ও ব্যাংকের শেয়ার নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক করার বিধান ছাড়াও লভ্যাংশ দেয়ার আইন ও পুঁজিবাজার বিষয়ে বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এছাড়া আইন লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানা অনাদায়ে প্রতিদিন আরো ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি কোনোভাবেই কোনো ব্যাংক কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারণ করতে পারবে না।
এতে বলা হয়েছে, “যদি কোনো ব্যাংক কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ম্যানেজার কোনো কোম্পানির পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট থাকেন বা তাতে তার কোনো স্বার্থ থাকে তাহলে এ আইন প্রবর্তনের তারিখ হতে এক বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ম্যানেজার ওই কোম্পানিতে কোন শেয়ার ধারণ করতে পারবে না।
”
বিলে বলা হয়েছে, অন্য কোনো আইন অথবা কোনো ব্যাংক-কোম্পানির সংঘস্মারক বা সংঘবিধিতে যাই থাকুক না কেন, এ আইন কার্যকর হওয়ার এক বছর পার হওয়ার পর কোনো একক পরিবার থেকে একজনের বেশি সদস্য একই সময়ে কোনো ব্যাংক-কোম্পানির পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত থাকবে না।
সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, বিশেষায়িত ব্যাংক ছাড়া অন্য কোনো ব্যাংক কোম্পানি তার প্রাথমিক ব্যয়, শেয়ার বিক্রি ও দালালির কমিশন, লোকসান ও অন্যান্য ব্যয়সহ পুরো মূলধনী ব্যয় অবলোপন না করা হয়ে থাকলে শেয়ারের ওপর কোনো লভ্যাংশ দিতে পারবে না।
এতে আরো বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক কোম্পানি অন্য কোনো শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে শেয়ার বাজারমূল্যে ওই ব্যাংক কোম্পানির আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংস-এর মোট পরিমাণের পাঁচ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করবে না এবং ওই কোম্পানির আদায়কৃত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করবে না।
এছাড়া কোনো ব্যাংক তার আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবন্ধ সঞ্চিতি, রিটেইন আর্নিংসের মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশের বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে না বলেও সংশোধনীতে বলা হয়েছে।
বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন লঙ্ঘন করলে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যক্তির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানা করতে পারবে।
নির্ধারিত সময়ে জরিমানা আদায় না হলে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে বাড়বে জরিমানার পরিমাণ।
বিলে ব্যবস্থাপনা থেকে অভ্যন্তরীন নিরীক্ষা কার্যক্রমকে স্বাধীনভাবে পরিচালনার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলটি জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবের সময় বিরোধী দলের ১১ জন সংসদ সদস্য এই বিলের বিরোধিতা এবং অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।
বিলটি জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।
বিএনপির পুরো বেঞ্চ গোয়েবলসে ভরে গেছে
সংসদে বিরোধী দলের বেঞ্চে বসা সব সদস্যকেই অপপ্রচারে বিশ্ব শিরোমনি নাৎসী হিটলারের সহযোগী গোয়েবলসের সঙ্গে তুলনা করেছেন অর্থমন্ত্রী।
ব্যাংক কোম্পানি সংশোধন আইন বিলের বিষয়ে বিএনপির প্রস্তাবগুলো ‘আবর্জনা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের নানা সমালোচনার জবাবে একথা বলেন তিনি।
সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বিরোধী দলের সদস্যরা দুটি শব্দ বেশি বলেন একটা ঝুট (মিথ্যা) আরেকটা লুট। এই দুটি উনারা ভালো বোঝেন। বিএনপির দুই আমলে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে লুট বেশি হয়েছে। লুটপাট বিএনপির চরিত্র।
”
বিরোধী দলের ‘অপপ্রচারের’ জবাবে তিনি বলেন, “একজন গোয়েবলসই যথেষ্ট। এখন পুরো বেঞ্চই গোয়েবলসে ভরে গেছে। আমরা ৩৫-৪০ জন গোয়েবলস পেয়েছি। গ্রামীন ব্যাংক ১৯ টুকরা করা নিয়ে বারবার যেটা বলা হচ্ছে সেটা গোয়েবলসের একই তত্ত্ব প্রচার করা হচ্ছে।
“প্রধানমন্ত্রী এই সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, খালেদা জিয়া তার ভাই, ছেলে ও মামুনকে ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন।
কু ঋণ দেয়া হয়েছে। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।