আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কলরব (অনুগল্প)

হীরণকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই তাড়াহুড়ো করে একটি শুভ কাজে বের হতে হল আজ। দুঃখ এই, শুভ কাজটি করতে তাকে যেতে হচ্ছে ‘ও-পাড়া’ মাড়িয়ে। না জানি কার মুখ দেখে বেরিয়েছিল আজ, ছিঃ। যাক, কি আর করা। পাড়া দিয়ে ঢুকতেই কানে হাত দেয়ার উপক্রম হল হীরণের (যদিও হাত দেইনি ভয়ে, পাছে আবার নিজের উপর এসে পড়ে খিস্তি-খেউর) হাঁটতে হাঁটতে পাড়ার দু’এক বাড়ী পরের সর্দারনির কর্কশ কণ্ঠস্বর শোনা গেল।

‘মাঙ্গির পো শুক্কুইর্র্যার মায়রে বাপ্, নগদ তিরিশ হাজার টাকা লইয়া তিন দিন আগে এক ছুরিরে আয়ন্ন্যা দিসে আমারে। ছুরি খালি কান্দে। অ ছুরি তুই কান্দস্ ক্যান, তিন দিনেও বুঝবার পারস্ নাই কই আয়া পড়সস্? এইহানে পেত্যেক রাইতে তর নয়া নয়া লাঙ্গ আইবো, তাগোরে খাওন দেওন লাগবো। হেরা এহানে আহে খালি গোস্ত খাইতে, মাইয়া মাইনষের গোস্ত তাগো বড় পছন। তুই ভাবসস্ তারা এহানে তর কান্দন হুনবার আহে? কালহা কত্ত দামী এক খদ্দের আইলো আহা.. পরে কান্দন হুইনা তর ঘরতুন বাড়ায়া অন্য ঘরে চইলা গেল, দেহস্ নাই? ফের যদি দেহি কান্দস্, তরে আমি ওই চাম উঠা কুত্তারে দিয়া... ’।

আরো অনেক খেউর চলছিল। না শোনার ভান করে দ্রুত হেঁটে পাড়ার প্রায় শেষ প্রান্তে চলে এসেছে হীরণ। হীরণ হঠাৎ দেখতে পায়, সামনে হাতেগোনা ক’জন মানুষ পালকি কাঁধে হেঁটে আসছে টুপি মাথায়। চেহারাগুলো প্রায় চেনা, সব এপাড়ারই বাসিন্দা। মনে পড়ল তার, গতরাতে বাড়ী ফেরার সময় বাস স্ট্যান্ডে কয়েকজন বলাবলি করছিল; গতকাল রাতে নাকি এপাড়ার এক বয়োজ্যেষ্ঠার মৃত্যু হয়েছে।

মাথা নীচু করে এক পাশে সরে দাঁড়াল হীরণ। দলটি তাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। তাদের মুখে মুখে রব উঠেছে সরব হয়ে, ‘আল্লাহু রাব্বি – মোহাম্মদ নবী, আল্লাহু রাব্বি – মোহাম্মদ নবী, আল্লাহু রাব্বি – মোহাম্মদ নবী..’। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।