ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা নিয়ে বিতর্ক উঠলেও বিউটি পারলার পারসোনা কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিভিন্ন কক্ষের ভেতর থেকে ক্যামেরা সরিয়ে নেবে না তারা।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কানিজ আলমাস খান শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থেই ক্যামেরাগুলো সেখানে রাখা দরকার। ক্যামেরার কারণে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হচ্ছে বলেও মনে করেন না তিনি।
এদিকে শুক্রবারের ঘটনায় অভিযোগকারী নারী চিকিৎসক কোনো মামলা করবে না বলে জানিয়েছেন।
ওইদিন বিকালে পারসোনার বনানীর ১১ নম্বর রোডের শাখায় 'স্পা' করাতে যান একজন নারী চিকিৎসক।
সেখানে একটি কক্ষে তিনি পোশাক পরিবর্তনের পরে কক্ষে সিসিটিভি দেখতে পান।
ভিডিও করার জন্য তিনি পারসোনা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশ ও সংবাদ মাধ্যমে মৌখিক অভিযোগ আনেন। তিনি তার স্বামীকে খবর দেন। স্বামী এলে সেখানে ব্যাপক হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেইসবুক ও বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলোতে এ ঘটনার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
শনিবার বিকালে পারসোনার বনানী শাখায় 'এক্সক্লুসিভ সুইট' নামের রুমটিতে গিয়ে দেখা যায়, ক্যামেরাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে আশেপাশের অনেকগুলো কক্ষে সিসি ক্যামেরা রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ব্যবস্থাপক ফারহানা জানান, কিছুদিন আগে পারসোনার এই শাখাটি থেকে চুরি হয়। এরপর থেকেই নিরাপত্তার খাতিরে এসব কক্ষে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
অভিযোগকারী চিকিৎসকের স্বামী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মামলা করলেই আদালতে যেতে হবে। আমার স্ত্রীর ছবি সেখানে দেখাতে হবে। তাই সম্মানের কথা ভেবে আর মামলা করতে যাচ্ছি না। তবে সবাইকে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেই। "
ক্যামেরায় ধারণকৃত ছবি সম্পর্কে তিনি জানান, সেখানে পোশাক পরিবর্তন, স্পা করার যাবতীয় দৃশ্য রয়েছে।
তাই অন্য কেউ দেখার আগে তিনি ধারণকৃত ভিডিও মুছে ফেলেন।
তিনি বলেন, "আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না, আপনার স্ত্রীর নগ্ন ছবি অন্য কেউ দেখুক?"
তবে ভিডিওতে এজাতীয় কিছু থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন কানিজ আলমাস খান।
তিনি বলেন, "আমাদের কর্মকর্তাদের সামনেই তিনি ভিডিওটি দেখেছেন। সেখানে তার শুধুমাত্র গলা পর্যন্ত দেখা যায়। সিসি ক্যামেরাটিতে শুধুমাত্র রুমের দরজাটি কাভার করার হয়েছে।
সেখানে আপত্তিকর কিছু ভিডিও করার সুযোগ নেই। "
কানিজ বলেন, "কী উদ্দেশ্যে আমরা আপত্তিকর ভিডিও করব? শুধুমাত্র নিরাপত্তা ও কর্মীদের পর্যবেক্ষণের কথা চিন্তা করেই ক্যামেরাগুলো বসানো হয়েছে। আর এগুলো তো গোপন ক্যামেরা নয়। "
এরকম একটি রুমে ক্যামেরা বসানো ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন হয়েছে বলে মনে করেন কি না জানতে চাইলে তিনি পুনরায় বলেন, "এই ক্যামেরাটি শুধুমাত্র রুমের দরজাটি কভার করে। কারও গোপনীয় ছবি এতে তোলা হয় না।
"
গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক মেহেদী মাসুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "শুক্রবার বিকালে আমরা সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, ক্যামেরাটি আগেই নামিয়ে ফেলা হয়েছে। রুমটির যেখানে ক্যামেরা রয়েছে, সেখান থেকে পুরো রুমটিই কাভার করা সম্ভব। "
শুক্রবারের ঘটনার পর ঘটনাস্থলে যান মেহেদী। পুলিশ ক্যামেরা ও কম্পিউটার হার্ডডিস্কটি হেফাজতে নিয়েছে।
মেহেদী বলেন, পারসোনা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছে, নিরাপত্তার জন্যে প্রতি রুমেই তারা ক্যামেরা বসিয়েছেন।
পুলিশের পর্যবেক্ষণ, রুমটিতে যেহেতু ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয় রয়েছে, সেখানে ক্যামেরা রাখা উচিত হয়নি।
মেহেদী জানান, ঘটনার শিকার নারী চিকিৎসক ও তার স্বামীকে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
লিংক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।