নিঝুম রাতে, একটি টিনের ঘরে একা, বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে , বৃষ্টির শব্দ আমাকে জাগিয়ে রাখে অনেকক্ষন গত কয়েক দিন যাবৎ স্নিগ্ধার মনটা খুবই বিষন্ন। সারাক্ষন অস্থিরতায় ভুগছে। কারনটা ওর নিজের কাছেও পরিষ্কার নয়। কেন যেন ওর কিছু করতে ভাল লাগছে না। এই সময় রুদ্র ওর পাশে থাকলে খুব ভালো লাগত ।
ফোনটা বেজে ওঠায় চিন্তায় ছেদ পরে । খুব দ্রুত উঠে গিয়ে ফোনের স্ত্রিন দেখে রুদ্রর ফোন । কিন্তু এখন ফোন ধরে রুদ্রর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। ফোনটা অনেকক্ষন যাবৎ বেজে বন্ধ হয়ে যায়।
ও কি আসলে পাগল হয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ এরকম চিন্তা দোলা দেয় ওর মাথায়। না ও পাগল হচ্ছে না। পাগলরা এত ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে পারেনা ।
ও এখন খুব ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করছে । চিন্তা করার সময় ওর দৃষ্টি শক্তি ঘোলা হয়ে যায়।
আশেপাশের সবকিছু ঝাপসা দেখে । ও খুব ঠান্ডা মাথায় প্লান করছে ।
একটি খুন করবে ও হ্যা সত্যিই খুন করবে । খুনটা করার আগে খুব সুন্দর করে ঘটনা টা সাজাতে হবে । যাতে করে কেউ কিচ্ছু টের না পায় এমনকিও রুদ্র ও না এবং যা করার আজকের মধ্যেই করতে হবে ।
নইলে কালকে রুদ্র বাবা-মা চলে এলে আর সম্ভব হবে না । তখন থেকে কড়া নজরদাড়ি মধ্যে থাকতে হবে । কিন্তু কাকে ?
আফা ফোন বাজে তো । রুনার কথায় চমকে উঠে ।
হ্যা কিক কি।
আফা ফোন বাজতেছে ।
তো বাজতেছে বাজতে দেনা মাগী তোর এত মাথা ব্যাথা কেন?
ওর কথা শুনে রুনা অনেকটা ভ্যাবলার মত ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। এতে আর ও মজা পায় স্নিগ্ধা। এবার আরও জোরে বলে উঠে কিরে দাড়িয়ে রইলি ক্যাণ, গেলি না কি থাপড়ায়া দাত ফালায়া দিমু। রুনা জোড়ে দৌড় দেয়।
এবার নিয়ে তিনবার কনসিভ করলো । প্রথম বার যখন কসনসিভ করলো। ওর আর রুদ্র সেকি আনন্দ । প্রথম ২ মাস ভালোই গেল তৃতীয় মাসে শুরু হল ঘূমের ঘোরে স্বপ্ন দেখা।
ও স্বপ্ন দেখতো একটি অদ্ভুত সুন্দর বাচ্চা হয়েছে ওর ।
আর বাচ্চাটা ওর দিকে মায়া মায়া চোখ নিয়ে তাকিয়ে বলছে, মা তুমি পিল খাও পিল খেয়ে আমাকে মেরে ফেল । তুমি আমাকে মেরে ফেলো । প্রথম দুদিন পাত্তা দেয় নি। তৃতীয় দিন থেকে রাতে ওর ঘুম হতো না চোখ বন্ধ করলেই ভেসে উঠতো সেই মুখ । শেষে থাকত না পেরে রুদ্র কে জানায় ।
রুদ্র দেড়ি না করে সেদিন ড: মেহতাব খানমের সাথে যোগাযোগ করেন । বেশ নাম করা সাইক্রিয়াটিস্ট্র তিনি।
তিনিও ট্রাই করেন প্রথম ২/১ দিন ভালোই যায় । তারপর আবার যেই সেই। সপ্তম মাসে ওর তলপেটে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়।
তারপর হাসপাতাল মাকে বাচাতে গেলে সন্তানকে বাচানো যায় না। রুদ্র সিদ্ধান্ত নিল মাকে বাচানো দরকার । বাচলো ও ।
২য় বার কনসিভ করার তিন মাসের মধ্যে আবার সেই দুস্বপ্ন । আবার সেই একই ঘটনা ।
তবে এবার আর রুদ্র সিদ্ধান্ত দিতে হয় না। ডাক্তাররা নিজ উদ্যোগে কাজটি করে ফেলেন। ডাক্তারার এর কোন কারন খোজে পায় না।
তৃতীয় বার এবার ওর জোরাজুড়িতে রুদ্র রাজী হয়েছে নইলে । ডাক্তাররা বলেই দিয়েছেন যে এবার সন্তান নিতে গেলে মাকে এবং শিশু দুজনকেই হাড়াতে হবে।
রুদ্র মনে মনে চিন্তা করছে ওর পাপের শাস্তি কেন আল্লাহ স্নিগ্ধা কে দিচ্ছে । সীমা রুনার চাচাতো বোন গ্রাম থেকে এসিছিল ঢাকা দেখবে বলে। যখন এ বাসায় আসে তার দু মাস পর সে দিন রাতে স্নিগ্ধা ও বাসায় ছিলনা । কি কারনে মনটা ওর বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠে নিজেকে আর নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারেনি সেদিন । ঘটনার পর বেশ কিছু দিন পর ও লক্ষ্য করে মধ্যে পরিবর্তন আসছে ।
সেদিন রাতে আবারও সীমার ঘরে যায় । সাথে এক প্যাকেট পিল এটা খায়া নিও । আর দুই মাস গ্রাম থেকে বেরায়া হয়ে আইসো। কোন কথা না বলে মেয়েটা পিলের প্যাকেটটা নিয়ে চলে যায়।
আর ফেরে নি গ্রাম থেকে ।
গাড়ী টা বাসার সামনে এনে রাখতেই শুনতে পায় । রুনার চিৎকার স্যার ম্যাডামের তলপেটে কেমন জানি ব্যাথা করতেছে । রুদ্রর মাথাটা আবার চক্কর দিয়ে উঠে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।