প্রতিশোধ
পর্ব: ১
৮ বছর ধইরা রিকসা চালাই। ঢাকা শহরের সব অলিগলি মাথায় ম্যাপ হইয়া গেছে ভাই। মানিক মিয়া এভিনিউতে এক প্যাসেন্জারকে রহমত মিয়া নিজ থেকেই বলতে বলতে সামনে এগোতে থাকে। প্যাসেন্জার নামার পর গামছায় বাধা আকিজ বিড়ির প্যাকেট থেইকা একটা বিড়ি জালাইয়া রিকসার সিটে একটু আরাম কইরা বসে।
এই মিয়া যাইবা নাকি মিরপুর? রহমত মিয়া ঘাড় ঘুড়িয়ে একটু দেখে নিয়ে বলে "না"।
প্যাসেন্জার বলে- কেন যাবা না? টাকা কি কম দেমু নাকি? রহমত মিয়া বলে- ভাল লাগতাছে না তাই যামু না। প্যাসেন্জার বিরক্ত হয়ে চলে যায় অন্য রিকসার দিকে।
কত দেখলাম হালার...কিছুতেই কিছু অয় না। রহমত নিজে নিজেই বিরবির করে আপন মনে বলতে থাকে।
ঘরের দায়ে,প্যাটের দায়ে ঘর ছাইরা ঢাকায় আসে ৮ বছর আগে।
২ বছর পর ফিরে যাইয়া দেখে ঘর ঠিকই আছে কিন্তু ঘরের আসল মানুষটাই নাই। দূর গেরামের এক মেম্বাররে বিয়া কইয়া গায়েব হইয়া গেছে।
হের পর থেইকা রহমতের কয়েকটা বাজে অব্যাস হইয়া গেছে। দিনে ৩ প্যাকেট বিড়ি না খাইলে ভালই লাগে না। মাজে মাজে হামদুর লগে বইসা একটু আধটু শুকনা ও খায়।
(হামদু- রহমতের গ্যারেজেরই আরেক রিকসা ড্রাইভার)
রহমতের একটা দু:খ সে প্রায়ই হামদুরে কয়। আমাগো কি কিছু হইব না?আর কত দিন এই একই জিনিস চালামু? আচ্ছা আমাগো নেতারা কি খায়? হেরা কি হুটকির ভড়তা খায়? হেগো বিছানাডা কি দিয়া বানানো? ঐ বিছানায় কি বেশী আরাম? এ রকম হাজার প্রশ্ন করে সে রিকসা নিয়ে চলে আসে সংসদ ভবনের সামনে। এক পাশে রিকসা রাইখা। সাইডে গিয়ে দাড়ায়। একটা বিড়ি জ্বালাইয়া দুই পাশ ভালো কইরা দেখে।
যদি পুলিশ থাকে তাইলে দাড়াইয়া আরেকটা বিড়ি জ্বালাইয়া অপেক্ষা করে।
বিড়ি টানতে টানতেই লুঁঙ্গি উপড়ে তুইলা সংসদের দিকে তাকাইয়া মুততে থাকে আর মনেমনে বিরবির করে বলে- এই খান থেইকাই আমগো পেটে হাজার বার লাত্তি মারা হইছে। আর কত লাত্তি খামু.....আর কত.....আর কত....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।