আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অরন্য রোদন......

...............................................................................................................................................................। ০১/০৬/২০১১ আমাদের ভবিষ্যত কোথায়,আমরা নিজেরাও তা জানিনা। ভবিষ্যত সম্পর্কে সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউই নিশ্চিত নয়। যদিও মানুষের চলাফেরা,আচার আচরন,কর্ম দেখে তার ভবিষ্যত রুপরেখার চিত্র সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারনা পাওয়া যায় …। আমাদের দেশটাও তেমনি কোন পথে এগুচ্ছে আমরা জানিনা।

এর ভবিষ্যত কোথায় তা সম্পর্কে আমরা কখনোই কোন সুস্পষ্ট ধারনা পাইনা। কারন তার চলাফেরায় যে আভাস পাওয়া যায় তা মোটেও কোন সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেয় না। বুদ্ধিজীবীদের অবাধ বিচরন আমাদের ভুমির উর্বরতা বাড়াতে মোটেও ভুমিকা রাখতে পারছেনা বা রাখছেনা। তাদের বুদ্ধিতে চিড় ধরেনি ,পচনও ধরেনি। কিন্তু তাদের বুদ্ধি বিশুদ্ধতা হারিয়ে ফেলেছে।

তাদের বুদ্ধিতে মিশে আছে দুষিত প্রানের টান। ০২/০৬/২০১১ যে কারনে তারাও এখন গুরত্ব হারাতে চলেছেন। তাদের রুপ কাঠি এখন আর সুফল বয়ে আনেনা। আমরা বুঝতে সক্ষম অইনা যে তারা প্রকৃত অর্থে কি চাচ্ছেন,দেশের সুফল কামনা করছেন নাকি অন্য কিছু। উনারা নিজেরা নিজেদের জায়গা পাকা করেছেন বিধায় দেশ নিয়ে তাদের কিছু যায় আসেনা।

নিজের পছন্দমত যুক্তি তুলে ধরে দেশে নতুন সমস্যার উদ্ভব ঘটান। পত্রিকার পাতা ভরে থাকে তাদের বুদ্ধিদীপ্ত যুক্তি/মতামত দিয়ে। কেউ লন্ডন থেকে,কেউ কানাডা থেকে,কেউবা আমেরিকা থেকে ,আবার কেউবা দেশে থেকে। তবে সাম্প্রতিক পত্রিকার পাতা খুললে দেখা যায় আমাদের প্রবাসী বুদ্ধিজীবীরাই দেশ নিয়ে বেশি ভাবেন। তাদের ভাবনার বেশির ভাগ অংশই আমাদের দেশকে ঘিরে এ তাদের লেখনিতেই স্পষ্ট।

তারা উসকানি দিতে একেবারে পাকা। রাজনৈতিক দলগুলোর মাথা তারাই নষ্ট করছেন। তারাই সুস্থ রাজনীতি ধ্বংসের একটা কারন। নিজেদের জ্ঞানকে বিলিয়ে দিচ্ছেন অযথাই। এতসব বলতে আমাকে ভেতর থেকে বেশি অনুপ্রানিত করেছে কিছুদিন আগে একটি দৈনিকে প্রকাশিত একজন প্রবাসীর বিশাল জায়গা জুড়ে বিরোধী দলের জন্য মধ্যবর্তী নির্বাচনের ইশতিহার নামা।

দেশের রাজনীতিকে কতখানি অস্থিতিশীল করার অনুপ্রেরনা তিনি দিয়েছেন!আপনি পারলে বর্তমান সংকট নিরসনের উপায় দেখান,যত ভোগান্তি ভোগ করি আমরা,আপনারা নই,আপনারা অনেক আরামেই আছেন। দয়া করে আমাদের আর ভোগান্তি বাড়াবেন না,যথেষ্ট! আমাদের অধিকাংশ বুদ্ধিজীবীরা মুক্তিযোদ্ধাদের মত ভিবক্ত হয়ে গেছেন চিরচেনা দুটি গোত্রে। তারা এখন গোত্রের অধীনে মতামত দেন পত্রিকার পাতা ভরিয়ে দেন। আমাদের সম্পাদক মন্ডলীরাও তা অবলীলায় ছাপিয়ে দেন। কারন তিনি জানেন পাঠকও তা অবলীলায় অধিক স্বাদে গলাধঃকরন করবেন।

এবং তাই হয়। কারন আমরা আম জনতারাও এ খেলায় বেশ মজা পাই। আমাদের কাছে পাঁচ বছর ইনি ভালো আবার পাঁচ বছর পর ইনি হয়ে যান বিষের মত। তখন আবার আরেকজন হয়ে যান চোখের মনি,যিনিও কোন এক পাঁচ বছর আমাদের কাছে বিষের মত ছিলেন। কিছুদিন আগে আমাদের বিরোধী দলীয় নেত্রী বিদেশ সফর করে এসেছেন।

লন্ডন সহ ঘুরে এসেছেন। আরেকবার প্রচার করতে গেলেন যে বাংলাদেশের রাজনীতি কোন কালেই পরিবর্তন হবার নয়। আমরা বেহায়া জাতি। এটা শুধু যে তিনি-ই করেন তাই নয়। সরকারও বিদেশ গিয়ে বিরোধী দলের সমালোচনা করেন।

বিদেশ গিয়ে সরকারের বিরোধিতা/বিরোধী দলের সমালোচনা করে আমরা ভালো মজা পাই। এতে আমাদের সত্তার কতটুকু মৃত্য ঘটে আমরা তা ভুলে যাই………। ২৭/০৯/২০১১ এ ধারা আমাদের বহু জনমের। কালের গর্ভে তা হারিয়ে যায়নি,বরঞ্চ আরো শক্তিশালী রুপ নিচ্ছে ক্রমান্বয়ে। আমরা জানি আমাদের রাজনৈতিক নেতারা বিদেশ গেলেই সেখানে সরকার কিংবা বিরোধী দলের সমালোচনা করবেন,যা আমরা অতীত থেকে দেখে আসছি।

তবু সাম্প্রতিক ঘটনা আমাকে ভীষন ভাবে পীড়া দিয়েছে। মাত্র কিছুদিন হল আমাদের বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য নিউইয়র্ক গিয়েছেন। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রায় সকলেরই সেখানে উপস্থিত থাকার কথা। প্রধানমন্ত্রী অধিবেশনে ভাষন প্রধান করলেন। আর বাহিরে সদর দপ্তরের পাশেই বিরোধী দল সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষনের বিরোধিতা করলেন।

কী ন্যাক্কারজনক ঘটনা!কত বড় ন্যাক্কার জনক ঘটনা তারা বুঝবেন না,যদি বুঝতেন-ই তাহলে হয়ত এমনটা করতেন না। প্রশংসা কিংবা সাধুবাদ জানাতে নাই পারেন এত গুলো দেশের সামনে এর বিরোধিতার যোক্তিকতা কী?নিজেদের মাথা উচু হয়েছে?আগামী নির্বাচনের জন্য পাচ হাজার ভোট বাড়িয়েছেন?নিজেদের জায়গা শক্ত করেছেন?দেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করেছেন?কোনটাই না। আমার কাছে মনে হয়েছে বর্তমান অধিবেশনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ভাষন-ই উপস্থিত সবার জন্য অনুকরনীয় হয়েছে। নিজেদের মাতৃভাষায় ভাষন দিয়ে বাংলাকে বিশ্বের কাছে আরো একবার পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন,এর মহত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন। সেই সাথে বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার জন্য আবেদন করেছেন।

এ তো আমাদের জন্য গর্বের-ই ব্যাপার। আমারা উন্নত রাষ্ট্র নই,স্বয়ংসম্পুর্নতা আমাদের কোথাও নেই,তবুও একটা ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে এত দেশের সামনে বিশ্বের শান্তি কামনা করলেন,শান্তির মডেল উপস্থাপন করলেন। এত গুলো রাষ্ট্রের সামনে এমন বিষয় তুলে ধরা সত্যি সাহসের ব্যাপার। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। জাতিসংঘের ভেতরে দেশের যতটুকু উজ্জ্বলতা বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন ঠিক ততটুক উজ্জলতাই ম্লান করে দিয়েছেন বাহিরে বিরোধী দলের নেতারা এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে,প্রধানমন্ত্রী পরে সংবাদ সম্মেলনে বিরোধী দলের সমালোচনা করে।

তাহলে লাভ কী হল? হিংসা ধরে রাখার ক্ষমতা আপনাদের যখন নেই,পেটের ভেতরে এর উর্ধ্বমুখী প্রভাব আপনাকে যখন বমি করতে বাধ্য করেছে,আপনি নির্দ্বিধায় অতীতের মত আপনার শান্তির কাজটুকু করে যান,দেশের বাহিরে নয়,দেশের অভ্যন্তরে যেমনটা করেছেন আমাদের বিরোধীদলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। আপনারা দেশের ভেতরে সমালোচনা করেন। দয়া করে বাহিরের দেশে এমনটা করবেন না। লাজ লজ্জা হারিয়ে দেশপ্রেম আপনাদের উতলিয়ে পড়ছে। একের পর এক ন্যক্কারজনক কান্ড ঘটাবেন আর বলবেন আমরা গনতন্ত্রের সুষ্ঠ প্রয়োগ করছি।

আপনাদের দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের গনতন্ত্র আলাদা,বিশ্বের গনতন্ত্রের সাথে আমাদের গনতন্ত্রের কোন মিল নেই। আমরা বিশ্বে নতুন ধারার গনতন্ত্রের প্রবর্তন করতে যাচ্ছি। টেলিভিশনের পর্দায় আপনাদের বক্তব্য দেখে হয়ত কয়েকজন নিরক্ষর লোকের চিন্তা বদলাবে প্রকৃত পক্ষে এতে কোন লাভ হবেনা,কারন অধিকাংশই আপনাদের খেলা দেখতে দেখতে অভ্যস্ত। মানুষ এখন বুঝতে শিখছে,নিরক্ষরতার হার কমছে। এসব মন ভোলানো বুলি নিয়ে আর সামনে আগানো যাবেনা।

বিশেষ করে তরুন সমাজকে আপনারা হারাবেন। দয়া করে হিংসা বন্ধ করে সুষ্ঠ গনতন্ত্রের চর্চা করুন। সরকারের ভালো কাজের সমালোচনা/বিরোধী দলের ভালো সমালোচনা আপনার জনপ্রিয়তা কমাবে না বরঞ্চ বাড়াবে এতে আপনি শতভাগ নিশ্চিত থাকতে পারেন। দেশের মঙ্গলের জন্য কিছু করতে না পারেন ক্ষতিকারক কিছু করবেন না। আপনারা হয়ত মনের খুশিতে আরো কিছু কাল দেশ শাসিয়ে যাবেন নিজেদের ইচ্ছেমত কিন্তু কালের হাওয়ায় যুগ পাল্টাবে,ক্ষমতার বদল হবে।

একসময় ক্ষমতার ভার বর্তমান প্রজন্মের কাঁধে আসবে। আপনার হয়ত বেচে থাকবেন না। কোন লাভ হবেনা,আপনি যদি দেশের জন্য একবিন্দু করেও থাকেন আমরা স্মরন করবোনা,কারন আপনার সব ভালোকে আপনি-ই মুছে দিয়েছেন। পরিবারের সাথে আনন্দে সময় না কাটিয়ে সময় কাটিয়েছেন সংবাদ সম্মেলনে,সময় কাটিয়েছেন সমাবেশে,সময় কাটিয়েছেন জনসংযোগে,অন্যায় কে করেছেন ন্যায়,ন্যায় কে করেছেন অন্যায়,সত্যকে মিথ্যা,মিথ্যাকে সত্য বানিয়েছেন অজস্রবার। কী লাভ হল?এর চেয়ে যন্ত্রনা দায়ক আর কী হতে পারে?ওপারেও রেহাই পাবেননা,এপারেও কেউ মনে রাখল না।

উলটো ধিক্কার দিবে দেশের জনতা,কারন আপনারা দেশকে পেছনে নিয়ে গেছেন অনেকদুর,সামনে একপা ও না। বর্তমান প্রজন্ম বিশ্বের সাথে আমাদের এত বড় ব্যবধান কিছুতেই মানতে পারবে না। অতএব এখনো সময় আছে এত ত্যাগ বিসর্জন ভালো কাজে করুন,দেশ জাতি আপনাকে স্মরন রাখবে চিরকাল। যদি মনে করে থাকেন আমি উপদেশ দিয়েছি তবে ভুল ধারনা। আদেশ উপদেশ কিছুই না।

এত সাহস কিংবা যোগ্যতা আমি এখনো অর্জন করি নাই। সত্যিকার অর্থে আমরা মনে মনে সব সময় ভালোই চাই। যা কিছু করেছেন আপনারাই। ধিক্কার কিংবা অভিশাপ নয়,এতসব বহু কষ্টে,যন্ত্রনায় অকপটে বেরিয়ে আসা বর্তমান তরুন প্রজন্মের ক্ষোভ,রাগ কিংবা অভিমান। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।