আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অরন্য সুন্দরী রাঙ্গামাটি

১৩ ও ১৪ মার্চ ২০১৪ এই পর্যটন শহর রাঙ্গামাটি অনুষ্ঠিত হলো আমাদের ক্লাব রোটারী ক্লাব অব চিটাগাং পোর্ট সিটির ২০১৩-২০১৪ এর বা্র্ষিক বনভোজন।

আমাদের ক্লাবের চার্টাড প্রেসিডেণ্ট শাকিল মনজুরের খালি গলায় গাওয়া পুরনো দিনের গান আর এরি সাথে মনোরম পাহাড়ী সবুজ পথের মোহময়ী হাঁতচানি, উচুঁ নীচু পাহাড়ের ঢালু পথ, কখনো দূরে আবার খুব কাছে সবুজ পাহাড়,চলমান সাপের মতোন আকাঁবাকা পিচডালা রাস্তা আর মনোরম সব দৃশ্য ও উপজেলা ভোটের মিছিল পেরিয়ে সন্ধ্যার একটু পরেই রাঙ্গামাটিতে আমাদের রাত্রিযাপনের জন্য নির্ধারিত পর্যটন কর্পোরেশনের মটেল এর একটু আগে বাস থামলো। বাস থেকে নেমে একটু হেটে আমরা মটেলে গিয়ে উঠলাম।

মটেলে রাতে খাবার পর্ব শেষ করে ঐরাতের মূল আর্কষন লটারীপর্ব শুরুহল। সবাই পুরষ্কার পাওয়ার আশায় লটারীর টিকেট এর একটি অংশে নির্ধারিত বক্সে ফেলল।

দারুন এক টান টান উত্তেজনা। ছেলে মেয়েরা সবাই সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়। শিশুদেরকে দিয়ে এক এক করে টিকেট উঠানো হচ্ছে আর ঘোষনার সাথে সাথে সবাই যার যার টিকেট নম্বর মিলিয়ে নিচ্ছে। পর পর তিনটি টিকেট তোলা হল পুরস্কার পাওয়া সবাই দারুন উচ্ছসিত। এখন চতুর্থ টিকেট এর নম্বর ঘোষনা হল আর সেটা আমার।

মুহু মুহু করতালি আর আনন্দ উচ্ছাসের মাঝে লটারী পর্ব শেষ হলো।


রাত সাড়ে দশটা হঠাৎ রেজা ভাই ঘোষনা করলো এখন আমরা মটেলের পিছনে ফায়ার ক্যাম্প করবো। পাহাড়ের সুনসান নীরবতার মাঝে কয়েকটি মরা শুকনো কাঠের লাকড়ি খাড়া দাড় করিয়ে সেখানে আগুন দেওয়া হল। গান এর তালে তালে নাচঁ হল। রং চা পরিবেশিত হলো ।

সব মিলিয়ে দারুন এক আনন্দঘন পরিবেশ রাতের পা্হাড় জুড়ে। রোটারিয়ান বন্ধুরা অনেকে নাচের তালে শরীরচর্চায় নিমগ্ন। যেন সারা বাংলাদেশে চলমান টি২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে গাওয়া এর সেই বিখ্যাত “ফ্লাশ মব” “চার ছক্কা হই হই ,বল গড়াইয়া গেল কই” উচ্ছাস আর আনন্দ উপস্থিত সবার মাঝে।
বুড়োদের যখন এই অবস্থা আর বাচ্চাদের কি বাকী রইলো।


সামনের লাগানো গাছে হলদে ফুলের সৌন্দর্য্য ও সবুজে ভরা ।

আমাদের ক্লাবের অতীত প্রেসিডেণ্ট নুরুল হুদা ও পিপি এ এইচ এম ফেরদৌস সবাইকে তাগাদা দিচ্ছেন সকালের নাস্তা খেতে যাওয়ার জন্য। খুব তাড়াতাড়ি তৈরী হতে হবে কিছুক্ষণের মধ্যে আজকের দিনের মূল আকর্ষণ নৌকায় করে লেকে ভ্রমন। গন্তব্য শুভলং এর বাজার আর ফেরার পথে পেডা টিং টিং এ দুপুরের খাবার।

আমাদের ২য়দিনের যাত্রা শুরু। আমাদের বহনকারী বোটটি কাঠের দোতালা জাহাজের আদলে তৈরী সুন্দর ছিমছাম কাঠামো।

শাকিল মনজুর এবং এ এইচ এম ফেরদৌস এর দরাজ গলায় গান আর চারিপাশের সবুজ প্রাকৃতির মোহময়ী সৌন্দয্যমন্ডিত ঝুলন্ত ব্রীজ পিছনে রেখে আমরা শুভলং এর পথে। ক্লাবের চার্টাড প্রেসিডেণ্ট শাকিল মঞ্জুর গাইছিলো আর ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দিলো………।

উত্তুন ফেগে মেঘে মেঘে
মেঘলা দিবা তলে
মোউ পরান আন জেদো মাগে
তারা লগে লগে....!!!

পাহাড়ের পাদদেশে মাটিতে লেকের দুপাশে বহমান পানির স্রোতে প্রাকৃতির নিজের তৈরী অপরুপ অংকন ও সবুজ মায়াময় গাছগুলোর পাশ দিয়ে যেতে যেতে যে দৃশ্য চোখে পড়ে তা দেখে চোখ ফেরানো প্রায় অসম্ভব। ঘন সবুজের আবরণে আবৃত পাহাড়ের সবুজ আর লেক এর স্বচ্ছ পানি যে কাউকেই মুহূর্তেই বানিয়ে দেবে প্রকৃতি প্রেমী। লেকের দুপাশের প্রকৃতির অপরুপ রুপ আর পাহাড়ী সবুজ ও হ্রদে ভ্রমন সব মিলে ভ্রমনপ্রিয় মানষের কাছে অত্যন্ত প্রিয় স্থান রাংগামাটি এর এই লেকে ভ্রমন।



রোদেলা দুপুর। সময় ৪টার ও কিছু পরে। সুর্য দক্ষিন থেকে আলো ছড়াচ্ছিল। আমাদের বাস রওনা হল চট্রগ্রামের পথে।
বিদায় রাঙ্গামাটি।

বিদায় ঝুলন্ত ব্রীজ।

রুপের রাণী, অপরুপা, লাবণ্যময়ী, ফেসবুক সুন্দরী, অনন্যা, মনোমুগ্ধকর, মধুময়, চোখ জুড়ানো ও ঐশ্বর্য্যময়ী কিংবা অরন্য সুন্দরী এমন অনেক বিশেষণে ডাকা যায় সবুজ পাহাড় ও লেক বেষ্টিত পর্যটন এলাকা রাঙ্গামাটিকে।
আমাদের দুই দিনের সফল পিকনিক শেষে আমরা ফিরে যাচ্ছি, আগামীদিনের জন্য রোটারী বন্ধুত্বের এ এক দারুন অটুট বন্ধন সমীকরন নিয়ে। যা রোটারী ক্লাব অব চট্রগ্রাম পোর্ট সিটি রোটারিয়ানদেরকে উৎসাহ যোগাবে একজন সত্যিকারের রোটারিয়ান হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে। দেশ ও দশের সেবা করতে।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।