আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে মানবতাবিরোধী অপরাধে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দেওয়া ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশের রায়টি।
আজ রায় ঘোষণার পর থেকে প্রায় সারা দিনই বিবিসি অনলাইনের শীর্ষ খবর ছিল গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দেওয়া এই রায়। এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যেসব মিলিশিয়া নৃশংসতা চালিয়েছিল, সেগুলো গঠনের পেছনে মুখ্য ভূমিকা আছে গোলাম আযমের। মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬০টির বেশি অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা ফাঁসির আদেশের আবেদন করেছিলেন।
কিন্তু তিন সদস্যের ট্রাইবুন্যাল তাঁর বয়স বিবেচনা করে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেন। ’ প্রতিবেদনে রায়পরবর্তী সহিংস পরিস্থিতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক আরেক শীর্ষ পত্রিকা ‘টেলিগ্রাফ’-এ গোলাম আযমকে উল্লেখ করা হয়েছে ইসলামি নেতা হিসেবে। দেশজুড়ে রায়পরবর্তী সহিংসতার কথা জোর দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের প্রধান ইসলামি দল জামায়াতে ইসলামীর ডাকা দিনব্যাপী হরতালে বেশির ভাগ দোকান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।
দলের নেতা-কর্মীরা রাজধানী ঢাকাসহ বন্দরনগর চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লা, বাগেরহাট, বরিশালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ’
গোলাম আজমকে জামায়াতে ইসলামীর আধ্যাত্মিক নেতা উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। তবে এখানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে ‘বিতর্কিত’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গোলাম আযম (৯০) মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর প্রধান। আর এখন তিনি দলটির আধ্যাত্মিক নেতা।
তাঁর বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বিতর্কিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। ’
গোলাম আযমের রায়ের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে আল জাজিরার প্রতিবেদনেও। শুরুতে রায়ের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনার পর তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গোলাম আযমের তত্পরতার প্রসঙ্গটি। ‘বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধে দোষী প্রমাণিত আযম’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনে লেখা হয়, ‘গোলাম আযমকে বর্ণনা করা হয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে। তাঁর নির্দেশে হত্যা করা হয় অনেক শিক্ষক, নাট্যকার, চিকিত্সক ও সাংবাদিককে।
চোখ ও হাতবাঁধা অবস্থায় অনেকের মৃতদেহ পাওয়া যায় শহরের বাইরে একটি জলাভূমিতে। ’
গোলাম আযমকে ‘বাংলাদেশের হিটলার’ নামে আখ্যায়িত করেছে দুবাইভিত্তিক পত্রিকা ‘গালফ নিউজ’। তাদের রায়সংক্রান্ত প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের দায়ে ৯০ বছরের কারাদণ্ড বাংলাদেশের হিটলার গোলাম আযমের। ’ এ ছাড়া, ভারতের ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’, এনডিটিভি, পাকিস্তানের ‘ট্রিবিউন’ পত্রিকার শীর্ষ সংবাদ আকারে স্থান পেয়েছে গোলাম আযমের রায়সংক্রান্ত খবরটি।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর সহিংসতার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে।
তবে গণজাগরণ মঞ্চ ও দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের রায় প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভের খবরটি সেভাবে উঠে আসেনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।