আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুমি আসলে কি চেয়েছিলে??

“অস্থির কিছু স্বপ্ন আজও আমায় ভাবায় । যখন দেখি স্বপ্ন গুলোই হঠাৎ করে থমকে দাড়ায়; তখন ভাবি, আমার নিশ্চুপ দিনগুলোকে তুমি শব্দময় না করলেই পারতে ! ১। “আজও বুঝি স্কুল যেতে লেট হবে, আবারও স্যার এর ঝাড়ি খাইতে হবে। কি করবো আমি, আমি যে নিজেকে বেধে রাখতে পারি না, ওকে দেখতে প্রচণ্ড ইচ্ছা করে। “- এটা ২০০৫ এর প্রথম দিক্কার ঘটনা।

তখন মাঝে মাঝেই এরকম হত। প্রথম থেকেই বলি। ওর নাম নাফিসা। আমার বাসার কাছাকাছি ওর বাসা। আমরা একই ক্লাস এ পড়তাম(ক্লাস ৯ পর্যন্ত কিন্তু আমি পারিবারিক কারনে ক্লাস ৯ এ দুবার থাকার কারনে আমি ওর জুনিয়র হয়ে যাই) কিন্তু দুজনের স্কুল আলাদা ছিল।

তাই ও যখন স্কুল এ যেত, তখন ওর রিক্সার পাশে আমি আমার সাইকেল চালিয়ে যেতাম আর ওকে দেখতাম। ওর স্কুল থেকে আমার স্কুল এ আসতেই ক্লাস টিচার ক্লাস এ ঢুঁকে যেত। এরপর যথারীতি স্যার এর ঝাড়ি। যাইহোক ওর জন্য ঝাড়ি খাব এইটা আমার কাছে কোন ব্যাপার না। ওকে ভাললাগত সেই ছোটবেলা থেকেই।

যখনকার কথা বলছি তখন আমি ক্লাস টেন এ। নাফিসা কে ল্যান্ডফোনে থেকে ফোন দিলাম, দিয়ে বললাম ”দেখ নাফিসা তুমি জানো নিশ্চয় যে তোমাকে আমার ভাললাগে, প্লীজ তুমি তোমার মতামত টা আমাকে জানাও। ” সেদিন ভাবতেও পারিনি ও রাজি হয়ে যাবে। ও বলেছিল আমাকে ওরও ভালো লাগে। আমিতো খুশিতে আত্মহারা।

তারপর আমার অনেক কিছুই পাল্টাই যায়। যেমন আমার ভালো ভালো কিছু বন্ধুর সঙ্গে ইন্টার্যা কশন কমে যায়, আমার পৃথিবীটা ওকে নিয়েই সম্পূর্ণ হতে থাকে। আমি অন্য সব কিছু থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নেই। ওর সঙ্গে আমার ফোন এ বেশি কথা হত। ওর এস.এস.সি পরীক্ষা চলে আসল, আর আমি ক্লাস টেন এ।

যাইহোক ওর পরীক্ষা ভালই হল, আমিও ওর সাথে এফেয়ার করার সাথে সাথে পড়াশুনাও করছিলাম ভালভাবেই। দিনগুলা যেন স্বপ্নের মত চলে যাচ্ছিল। নাফিসার যেদিন এসেসসির রেজাল্ট হল সেদিন দুজনি অনেক খুশি হলাম, ও ভালই করল। এরপর ও আমাদের শহরেই মেয়েদের কলেজে ভর্তি হল। আমাদের প্রেম ভালই চলতে লাগলো।

দেখতে দেখতে আমার এস.এস.সি চলে আসল, আমি এক্সাম খুব ভালো দিলাম। আমার রেজাল্ট হল, গোল্ডেন এ+ পাইলাম। বাসায় সবাই খুব খুশি, নাফিসা অনেক খুশি। কিন্তু আমি খুব খুশি না কারন ওকে ছেড়ে আমাকে চলে যেতে হবে ঢাকায়। ২।

নটরডেম কলেজে ভর্তি হলাম। ঢাকায় এসে নতুন জীবন শুরু। এখন মোবাইল এ ওর সাথে কথা হয়। প্রত্যেক দিন ওর সাথে কথাবলি প্রায় সারা রাত। মাঝে মাঝে এমনও হত কথা বলতে বলতেই সকালে ৮ টায় ক্লাস এ যাই।

এভাবে চলল আমার ১ বছর, আর ওর আসল ইন্টার পরীক্ষা। আমি কলেজে খারাপ করতে লাগলাম, ও এক্সাম দিয়ে কোচিং করল, এরপর ও ভর্তি হল ইডেন কলেজে। ও যখন ঢাকা আসল তখন আমি যেন স্বর্গ হাতে পেলাম। প্রচুর ডেট করতে লাগলাম ওর সাথে। এদিকে আমার পড়াশুনার ১২ টা বেজে গেছে।

ওর সাথে ঝগড়া হত অনেক, রাগারাগি করে আমি পড়াশুনা করতাম না। আমার ইন্টার পরীক্ষা আসল, আর ধীরে ধীরে ও যেন কেমন হতে লাগলো। আমার সাথে কারনে অকারনে ঝগড়া বাধিয়ে রাখত, আর আমি পরতে পারতাম না। আমার পরীক্ষা খারাপ হল, তবুও কোচিং করতে লাগলাম। এরই মাঝে এক ছুটিতে ও বাসা চলে গেল।

ওর সঙ্গে সম্পর্কটা খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। হঠাৎ আমার হোম ডিসট্রিক্ট এর এক কাছের বন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে বলল নাফিসাকে ও একটি ছেলেদের মেস এ অন্য ছেলের সঙ্গে ঢুকতে দেখেসে। আমি আমার আর এক বন্ধুকেও পাঠালাম ঘটনা সত্য কিনা দেখে আসার জন্য। যা শুনলাম তাতে আমার মাথা খারাপ হবার অবস্থা। ও অন্য একটা ছেলের সঙ্গে এক রুম এ প্রায় দু ঘণ্টা ছিল, এবং আমি খোঁজ নিয়ে জানলাম ঐ ছেলের সাথেও ওর রিলেশন আছে।

এটা ছিল বিকালের দিক্কার ঘটনা। তখন ওকে অনেক ফোন দিলাম আমি কিন্তু ও ফোন ধরে না। সন্ধ্যার পর ও ফোন ধরে বলল এত ফোন দিচ্ছ কেন? আমি কোনকিছু না লুকিয়ে ওকে সরাসরি চার্জ করি কেন আজ বিকালে তুমি সোহাগের মেস এ গেসিলা? ও আমাকে জবাবে বলল ও যায় নি। তারপর আমি ওকে কিছু প্রমান দেখালাম, কে কে ওকে দেখছে তাও বললাম, শেষে স্বীকার করল যে ও মেস এ গেছিল সোহাগের সাথে সুধুমাত্র দেখা করতে। আমি অবশ্য ওকে বিশ্বাস করতে পারলাম না।

ওর সাথে অনেক রাগারাগি করলাম। ও আমার সাথে ব্রেকআপ করে দিল সাথে সাথে। ও ওর বাবাকে অনেক ভয় পেত, আমি ঠিক করলাম ওর সব ঘটনা ওর বাবাকে জানাবো। আমি জানিয়েও দিলাম। এরপর ওর বাসায় কি হইছে আমি জানিনা, কিন্তু আমি শেষ হয়ে গেছি।

আমার রেজাল্ট হল খারাপ, তারপর আমি ঢাকা কলেজে ভর্তি হলাম। ভালো কোথাও ভর্তি হতে পারলাম না। ও আমার কাছ থেকে চলে গেছে, কিন্তু নিয়ে গেছে সবকিছু। এখনও যখন একা বসে থাকি তখন ভাবি, আমিতো স্বার্থহীনভাবে তোমাকেই ভালবাসতাম, কিন্তু কেন তুমি আমার সাথে প্রতারনা করলে। তুমি আমার কাছে আসলে কি চেয়েছিলে, তোমাকে আমি কোনদিনও ক্ষমা করতে পারব না, কোনদিনও না! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.