এম এ জোবায়ের
যাদের অফিসের কাজে, ব্যবসার কাজে বা অন্য যে কোন কাজে রংপুরে যেতে হয় তারা তাদের সময়ের মধ্য থেকে একটু সময় বাঁচিয়ে তাজহাট জমিদার বাড়ী দেখে আসবেন। জমিদার বাড়িটা এমন না যে শুধু এটা দেখতেই রংপুরে যাওয়া যায়, তাই অন্য কাজে রংপুর গেলে এটা অবশ্যই দেখে আসবেন। কালের আবর্তে আমাদের দেশের অনেক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আমরা নষ্ট করেছি, যে কয়েকটা অবশিষ্ট আছে তাজহাট জমিদার বাড়ী তার একটা। তাজহাট জমিদার বাড়ী, রংপুর, শুনলেই মনে হয় রংপুরে কিন্তু রংপুর শহরে নয়। আরও কিছু জায়গার ব্যাপারে এরকম মনে হয়, যেমন আমি যে ব্যাংকে চাকরী করতাম তার একটা শাখা ছিল শেখপাড়া বাজার, খুলনায়, জায়গার নাম শুনলে মনে হয় খুলনা এলাকার কোন বাজার, আসলে শেখপাড়া বাজার খুলনা শহরের একেবারে কেন্দ্রস্থলের একটা এলাকা।
অনেক বার রংপুর গিয়েছি, প্রথমবার গিয়েছিলাম ১৯৭৮ সালে বাবার চাকরিস্থলে, আর শেষ গিয়েছি ২০১০ সালে চাকরি থেকে অবসর নেবার কয়েক দিন আগে অফিসের কাজে। শেষ বার কাজ শেষে হাতে কিছু সময় ছিল, আমাদের অঞ্চল প্রধান প্রস্তাব দিলেন তাজহাট জমিদার বাড়ী দেখার, ভেবেছিলাম বেশ দুরে কোথাও হবে, কিন্তু জানা গেল শহরের মধ্যেই, তাই রওনা দিলাম। তবে তখন ভাবিনি এটা নিয়ে ব্লগিং করব তাই তখন অনেক তথ্যই বিস্তারিত জানিনি বা জানবার চেষ্টা করিনি, যেমন জমিদার কে ছিলেন, বংশধরেরা কে কোথায় আছেন, জমিদার বাড়ীটা কবে নির্মিত হয়েছিল ইত্যাদি; দুঃখিত আপনাদের এসব তথ্য দিতে পারবনা।
এরশাদ সাহেবের আমলে যখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপিত হয়েছিল তখন এই জমিদার বাড়ীটা রংপুর হাইকোর্ট বেঞ্চ হিসাবে ব্যাবহার হতো। এখন এটা একটা যাদুঘর।
আহামরি কোন সংগ্রহ নেই তবুও কেন জানি ভাল লাগে, সম্ভবত ঢাকার ভিড় দেখেতে দেখতে এতই বিরক্ত যে, যেকোন নিরিবিলি জায়গাই ভালো লাগে। জায়গাটায় বেশ দর্শনার্থী আছে কিন্তু ভীড় নেই, তুলনামুলক ভাবে নিরিবিলি। বেশ বড় এলাকা নিয়ে জমিদার বাড়ী, ফাঁকা জায়গা গাছ লাগিয়ে বাগান করা হয়েছে, একটা আম বাগানও আছে। ঘাট বাধানো একটা পুকুর আছে সেখানে লাল শাপলা ফুটে আছে আরো একটা পুকুর আছে যেটায় ঘাট বা শাপলা কোনটাই নেই। ফুলের বাগানও আছে।
বাগানটা বেশ গোছানো এবং বাগানের ফুল গুলোও যথেষ্ঠ সুন্দর। আসলেই জায়গাটা মনোরম। ঘন্টা দুই তিন বেড়ালেও বিরক্তিকর বা ক্লান্তিকর মনে হবে না। সম্ভব হলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে যাবেন, সবাই পছন্দ করবে, বিশেষ করে বাচ্চারা। সাথে করে যদি খাবার দাবার নিয়ে যান তবে সারাদিন থাকতে পারবেন।
আর এটা কথা জমিদার বাড়ীতে ঢুকতে টিকিট কাটতে হবে, তবে বেশী টাকা না ১০ অথবা ২০ টাকা।
আমরা দেশ বিদেশের অনেক জায়গা বেড়াতে যাই, চলুন না একদিন কাজ কর্মের ফাঁকে তাজহাট জমিদার বাড়ীটা দেখে আসি, নিশ্চয় ভালো লাগবে। আমার বর্ণনা ভালো না, কিন্তু বাস্তবে জায়গাটা খুব সুন্দর।
জমিদার বাড়ীর একটা ছবি দিলাম, মোবাইলে তোলা তাই ভাল হয়নি, জমিদার বাড়ীটা আরো সুন্দর।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।