আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রেমিকার সাথে সাইবার ক্যাফে সেইদিন, কোন রকমে জানটা হাতে নিয়ে বাহির হইছিলাম।

আমার এখানে প্রবেশের পূর্বে একবার ভাবুন, ভাল কিছু পাবেননা। ভাল কিছু দিয়ে যেতে পারলে ওয়েলকাম। -হ্যালো? কে ?? -ওই আমার আওয়াজটা না তোমার সুইট সুইট লাগে?? তা একদিনেই আমার আওয়াজটাও ভুলে গেছো??? -আরে রোযায় ধরছেতো তাই। -ওই এখন কয়টা বাঝে হুহ? কয়টা বাজে?? সকাল ১০টায় তোমাকে রোযায় ধরে, না?? -আরে শুরুতেই বেশি টায়ার্ড.. .. .. .. কথা কইবানা, জলদি বাইর হও। -ওক্কে? ডার্লিং তুমি কই এখন? -একদিনেই ভুইলা গে‌লা?? তুমিইনা বলেছিলা মতি টাওয়ার খারাইতে?? সব ভুইলা যাও কেন?? -ওহ আইচ্ছা।

রোযাতো সব ভুইলা যাই। ক্ষিধা লাগলে আমার হুশ থাকেনা। -ক্ষিধা লাগলে নাকি আমার আওয়াজ শুনলে?? জলদি আসো। -ওক্কে কুঁ কুঁ কুঁ। বাসা থেকে বের হয়ে যে রিক্সা নিতে হবে তাও বেমালুম ভুলে গেলাম।

দৌড়াইতে দৌড়াইতে টাওয়ারে পৌছলাম। এদিক ওদিক তারে কোথায়ও খুইজা না পায়া ফোন দিলাম। -কই লক্ষী ? -খবরদার আমারে লক্ষী কইবানা। তুমি কই ?? -মতি টাওয়ারের ভিতরে খাড়ায় আছি। -চোখ কানা কইরা দিবো এক্কেরে।

চোখ খুইলা থাকাও কই তুমি । জলদি টাওয়ার হইতে বাইর হইলাম। আরে মরা, আমি গুলজারে ঢুইকা গেছি ভুলে। দৌড় লাগাইলাম। তারে দেইখাই বাংলা লায়ক ইসটাইলে একখান হাসি দিলাম।

আমার এ্ই পবিত্র ? হাসিটারে পাত্তা না দিয়া কয় টেক্সি ডাকো। এমন ভাবে মুখ ফিরাইলো যেনো আমি কয়েক বছর দাঁত মাজিানাই। মনে মনে ভাবছিলাম রিক্সা কইরা যামু, একটু রুমান্টিক ভাবে হাতখানা ধইরা বসবো, আস্তে আস্তে যামু। কিছু হইলোনা। জি,সি’র মোড় গিয়ে নেমে পকেটে হাত দিয়ে দেখি মানি ব্যাগ আনিনাই।

আমাকে আবুল হইতে দেখে বলে -কোন দিন মানি ব্যাগ সাথে থাকে তোমার বলো দেখি। টাকা দিতে দিতে বলে, চলো ভিতরে চলো তোমার খবর আছে। টেক্সিওয়ালা আমার দিকে চেয়ে চেয়ে হাসে। মানে ভাব খানা এমন, কতো প্রেমিক দেখছি মাগার তোমার মতো আবাল মার্কা দেখিনাই। ইচ্ছা করছিলো একটা থাপড়ানি দিই বেটারে।

-আরে লক্ষী প্লিজ লাগে ওইখানে অনেক লোক থাকে আমার ইজ্জতের পাংচার কইরোনা। -একটা কথাও না, চুপচাপ চলো চুপ চাপ ভিতরে ঢুকলাম। একটা কর্ণারে গিয়ে বসবো ভাবছি ও বলে এইখানে খোলামেলা জায়গা আছে এইখানেই বসো। কি আর করা। বইসা পড়লাম।

-খোল কম্পিউটার। খুল্লাম, -তোমার সামুরাই না কি ওইটা খোল, জলদি খোল। -এত খোল খোল করো কেন?? লোকে মাইন্ড করবেতো। -চুপ, একদম চুপ সামুরাই খুলেতো আমি আকাশ হতে পড়লাম। ওইদিন সব পোষ্ট ড্রাফট করে ফারা তন্বীর পোষ্টটা ড্রাফট করতে বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম।

ওইটা দেখেই আমার মাথায় যেন ঠাডা পড়লো। অনেকেই ওই পোষ্টের কথা বলার পরও আমি কিভাবে যে ভুলে গেলাম মাথায় আসছেনা। আমার কাপাল বেয়ে ঘাম বেয়ে পড়তে লাগলো। ভাবছিলাম ফারা নানীর পোষ্ট দেইখা চিক্কুর দিবো। তার পরিবর্তে দেখি আমাকে জিগায় ওই তুমি কি পার্টি করো?? ও মোর জালারে তাকে কতো করে বুঝালাম ওইটা শুধু শিরোনাম, ভিতরে বন্ধুদের নিয়ে লিখছি।

তুমি পড়েতো দেখো। -না আমার পড়ার দরকার তুমি পার্টি করো তা আগে বলোনাই কেন?? -আরে তোমার কসম আমি পার্টি করিনা, -ওই আমার নামে কসম খাইবানা। কথায় কথায় মিছা কথা বলো আবার আমার নাম নিয়ে কসম খেয়ে আমাকে মারার চিন্তা না?? পরে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে শেষে বলে তাইলে শিরোনাম পাল্টাও। কি আর করা শিরোনাম পাল্টায়া দিলাম। মনে মনে ভাবি যেইটা নিয়ে ডরাইছি তুমি সেইটা দেখলানা।

তুমি যে খোদার গজব কোন দিক দিয়া নিয়া আসো তার কোন আন্দাজ নাই। -ওই কি ভির ভির করো?? এইগুলোকি তুমি লিখছো?? এতগুলা বানান ভুল কেনো?? ঠিকমতো বানান লিখতে পারোনা আবার নেটে বসে লিখোও লজ্জা করেনা তোমার??? এবারও পাশের রুম থেকে গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম, মানে আস্তে কথা বলুন এই টাইপ। -সে বল্লো কই দেখাও সব লেখা তোমার। সব লেখা দেখাইলাম। -বল্লাম দেখো দেখো তোমাকে নিয়ে আমি কিছু লিখছি ?? লিখছি ? দেখো দেখো।

সব দেখে কেমন জানি চুপ মেরে গেল। একটা শুকনা মুচকি হাসি দিয়ে বলে চলো যাই। আহা আমিও বিরাটা খুশি মনে বের হয়ে আসলাম। যাক জানটা বাইচা গেল। এই লক্ষীসোনা দেখি রিক্সায় উঠতে চায়।

উঠলাম। উঠেই হঠাৎ খোদার গজব নাজিল করল। দাঁত কিড়মিড় করে হাতের কনুই দিয়ে গুতা দিয়ে বলে -ওই ফারাটা কে?? আামর জন্মদিনের কোন খবর তোমার থাকেনা। এখানে বসে বসে ফারা মারাকে জন্মদিন উইশ করো, না??? এজন্যইতো আজকাল তোমাকে খুজে পাওয়া যায়না। সারাদিন নেটে বইসা থাকো।

তার চিল্লাচিল্লি শুনে রিক্সাওয়ালা পিছন ফিরে চায়। কেমন জানি মুচকি মুচকি হাসেও। ও দেখি আমার প্যান্টে হাতা হাতি আরম্ভ করল। -আরে আরে করো কি?? রিক্সায় বসে প্যান্ট টানাটানি করো কেন?? -তোমার প্যান্ট খুলতে যায় কে??? তোমার পকেটে না ওই নেটটা আছে ওইটা বাইর করো। বাইর করে দিলাম।

দেখি কিভাবে তুমি নেটে বসো। আর একদিন যদি সামুরাইতে বসো তাহলে তোমার একদিন কি আমার। নারে ভাই আর না, আজ থাক আমার মাথা ঘুরতেছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।