আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাংসের নামে ‘বর্জ্য’ খাচ্ছেন আদিবাসীরা

কালো রং, মোচড়ানো, দেখতে অবিকল শুকনো মাংসের মতো। আসলে এগুলো মাংস নয়, চামড়া কারখানায় চামড়া শোধনের পর বর্জ্যের একটি অংশ। একটি চক্র এগুলোকে মহিষের চামড়া বলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। আদিবাসীরা চামড়া কারখানার এই বর্জ্যগুলোকে মহিষের চামড়া হিসেবে কিনে রান্না করে খান। খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন হাসান ইমাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারখানায় চামড়া শোধনের জন্য যেসব রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়, তা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

আর সেই কারখানার চামড়া শোধনের পর বর্জ্যের একটি অংশ এনে মহিষের চামড়া বলে বাজারে বিক্রি করছে। রাসায়নিক দ্রব্যমিশ্রিত এসব চামড়া মাংস হিসেবে রান্না করে খেলে শরীরে ক্যানসার ও লিভারসিরোসিসসহ নানা জটিল রোগ হতে পারে। এসব বর্জ্য মূলত বিষাক্ত, যা খেয়ে প্রথমে বুঝতে না পারলেও ধীরে ধীরে শরীরে এর বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়বে। ’ ফেব্রুয়ারি মাসের বিভিন্ন সময়ে সরেজমিনে খাগড়াছড়ির থানা বাজার, মেরুং বাজার ও বোয়ালখালী নতুন বাজারে দেখা গেছে, সাপ্তাহিক হাটের দিন মাংস বিক্রির ছোট দোকানের পাশে বসে এসব চামড়া বিক্রি করা হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা আদিবাসীরা চামড়াগুলো বেশি করে কিনে নেন।

বোয়ালখালী নতুন বাজারে আসা দুর্গম জারুলছড়ি, শুকনাছড়া ও শিবছড়ির শুক্রধন চাকমা, চন্দ্র মণি চাকমা, গুরিমিলা, সোনাবীসহ কয়েকজন জানান, তাঁদের বাড়ি অনেক দূরে। সপ্তাহে এক দিন বাজার করেন। প্রতি সপ্তাহেই মহিষের চামড়া (তাঁদের মতে) কিনে নিয়ে যান। ৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি চামড়া নিলে এক সপ্তাহ খেতে পারেন। এগুলো খেলে শরীরের ক্ষতি হয় কি না, তা তাঁরা জানেন না।

তবে এগুলো চট্টগ্রাম থেকে এনে বিক্রি করা হয় এবং এগুলো মহিষের চামড়া বলে তাঁরা জানেন। মাংস হিসেবেই এগুলো তাঁরা কিনে খান। বোয়ালখালী বাজারে এসব চামড়া বিক্রি করতে আসা অমর চাকমা ও বিশ্বজিৎ চাকমা বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামের আতুরের ডিপো এলাকার একটি চামড়ার কারখানা থেকে প্রতি বস্তা এক হাজার ২০০ টাকা করে এগুলো কিনে আনি। আদিবাসীদের কাছে তরকারি হিসেবে চামড়াগুলোর বেশ চাহিদা। ’ দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শতরুপা চাকমা বলেন, ‘চামড়াগুলো যে ট্যানারির বর্জ্য, আমিও আগে জানতাম না।

এগুলো খেলে শরীরে মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হলে অবশ্যই সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন এবং আমরাও সহযোগিতা করব। ’ জেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক রত্ন জ্যোতি চাকমা বলেন, ‘মহিষের চামড়ার নামে বাজারে যে চামড়াগুলো বিক্রি হয়, তা আসলে ট্যানারির বর্জ্য। আমরা বিষয়টি জানতে পেরে গত কয়েক মাস বিভিন্ন হাটবাজারে অভিযান চালিয়ে এগুলো জব্দ করে বিক্রেতাদের সতর্ক করেছি। বর্তমানে চামড়াগুলো খাদ্য হিসেবে না কেনার জন্য সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছি। Ref: Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।