বাংলা আমার দেশ কালো টাকার নেপথ্য কালো হাত ছাড়াও এ নির্বাচনে জনগণের এ মনোভাবের ফলে রাজাকারতন্ত্রের নিকট স্পর্শ আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী বিরোধী দলরূপে ম্যাডাম খালেদার বিএনপি স্থায়ী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ প্রতিষ্ঠা পাকপন্থি ধর্মাশ্রিত দলসমূহের মাথায় বটপাঁকুড়ের বিরাট ছায়াশ্রয় রূপে কাজ করে। ৯১তে তারা ক্ষমতায়ও যায় তাদের নিয়ে। আর এ কৃতজ্ঞতার বদলা হিসেবে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনে জেনারেল জিয়ার অসম্পূর্ণ কাজটির সম্পূর্ণতা দান করেন ম্যাডাম খালেদা। জিয়াউর রহমান গোলাম আযমের নাগরিকত্ব লাভের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।
ম্যাডাম তার অপূর্ণ খাহেশ পূরণ করেন। তাকে বাংলাদেশের নাগরিকে পরিণত করেন। হয়ত বলা যায় দেশের প্রচলিত আইনেই তার নাগরিকত্ব বহাল হয়। কিন্তু ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ স্বাধীনতার সকল স্বপক্ষ শক্তি আগেই সতর্ক করেছিল প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার ফাঁক-ফোকরে গোলাম আযম পার পেয়ে যেতে পারে। তার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হোক।
কে শোনে কার কথা। তখন যদি ক্ষমতায় স্বাধীনতার পক্ষশক্তি আওয়ামী লীগ থাকত তাহলে চোখ মুদে বলা যায় ট্রাইব্যুনাল হত, গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বহাল হত না। একটি বৈরী সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্মূল কমিটিই বা কেন গোলাম আযম বিরোধী আন্দোলন শুরু করল তাতে হয়েছে হিতে বিপরীত। শেষ পর্যন্ত সর্বজন শ্রদ্ধেয়া জাহানারা ইমামকে আদালতে অভিযুক্তরূপে ইহলোক ত্যাগ করতে হল।
পক্ষান্তরে এ নাটকীয় ঘটনার মাধ্যমে এ দেশে রাজাকার শক্তির ষোলকলা পূর্ণ হয়।
অতপর ৯১'র বিএনপি আমলেই তাদের শক্তির অগ্রযাত্রা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যে সরকার তাদের প্রতিরোধে হিমসিম খায়। একে তো তারা ক্ষমতার অংশীদার। দ্বিতীয়ত, গোলাম আযমের স্বপক্ষে এ রায় তাদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে। বিশেষত তাদের ছাত্রসংগঠন শিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে শুরু করে নজিরবিহীন তান্ডব। এতে ছাত্রদল বেকায়দায় পড়ে।
শেষ পর্যন্ত সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থানে যেতে বাধ্য হয়। তখন আরেকটি খবর বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের গোপন অরণ্যে মিলিটারিদের সঙ্গে শিবিরের ফাইট হয়। তাতে শিবির পলায়ন করে ঠিকই কিন্তু একটি রকেট লাঞ্চার তাদের ঘাটিতে পাওয়ার যায়। অবশ্য তৎকালীন সরকারের তখনো এ উপলব্ধি হয়েছিল কিনা কে জানে যে তারা দুধ কলা দিয়ে সাপ পুষছে।
অন্তত এখন পর্যন্ত তাদের কর্মকান্ডে তেমনটি তো মনে হয়না।
পরবর্তী ৯৬'র আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি এবং তাদের বৈরী সরকার। তাবলে তখন তাদের গোপন ক্রিয়াকান্ড চোরাগুপ্তা আক্রমণ সমান হারেই চলতে থাকে। তবে আগের সরকারের আমলে যতটুকু ছিল প্রকাশ্য এখন সে তুলনায় অনেক গোপন। কবিশ্রেষ্ঠ শামসুর রহমানকে অতর্কিত আক্রমণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় তাদের তৎপরতা।
এরপর কোটালিপাড়ায় বোমা হামলার পরিকল্পনা কমিউনিস্ট পার্টির সভায় বোমা হামলা সর্বশেষ পয়লা বৈশাখে রমনা বটমূলে সৃষ্ট ট্র্যাজেডি অথচ এর কোনটিই তদন্তে সন্দেহাতীত রূপে প্রমাণিত নয়। মাঝখান থেকে অনেকগুলো জীবন নষ্ট হল। আর দুষ্কৃতকারী মৌলবাদীদের কিছুই হয়নি। তাদের মনোবল আরো বৃদ্ধি পায়।
পরবর্তী বিএনপি সরকার।
এ দেশে ক্ষমতারোহনের সর্বোচ্চ সুলভ হাতিয়ার ধর্মের জিকির তুলে জমাতকে সঙ্গী করে ক্ষমতায় আসে। তাই বলে জামাত থেমে থাকেনি। এ সময় তাদের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব সিরিজ বোমা হামলা। এ সময় তাদের চোখমুখ, হাবভাব, কথাবার্তার রূপ বদলে যায়। স্বাধীনতার পক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে নিজামী সাহেবের শ্লেষাত্মক, অলীক কথার বান ছুড়তেও কম যাননি।
তার মতে ৭১'র ১৪ ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড নাকি আওয়ামী লীগেরই সৃষ্টি! আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের ভাষাজ্ঞানের প্রতিও তার বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য, ওরা শুদ্ধ করে রেজাকার শব্দটিও উচ্চারণ করতে পারেনা বলে রাজাকার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য 'রেজা'র জায়গায় 'রাজা' বললে তাদের সম্মান কিছু কমেনা, বরং বাড়ে। আর নিজামী সাহেবকে এ জ্ঞান কে দেবে যে ভাষাতত্ত্বের নিয়মে এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় শব্দের স্থান পরিবর্তন হলে নবাগত ভাষায় এর উচ্চারণের কিছু পরিবর্তন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তৎকালীন সরকারের শেষ পর্যায়ে নেত্রকোণায় উদীচীর বোমা হামলাও তাদের নগন্য নয় বরং একটি জঘন্য কর্ম।
পুনরুত্থিত রাজাকারদের ইতিহাস এত সংক্ষেপেই শেষ হয়ে যাবার নয়।
বিগত বিএনপি আমলে ক্ষমতার শরীক হিসেবে তাদের দেহ ও মনোবল যেন হাতির পাঁচ পা। বিএনপিকে জিম্মি করে তাদের অগ্রগতি। ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে গ্রেপ্তারকৃত বিএনপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর প্রদত্ত বিবৃতিটি গুরুত্বপূর্ণ। তার মতে তিনি জামাতের অনেক লোককেই জেলে পুরেছিলেন। কিন্তু রাখতে পারেননি ক্ষমতাসীন শরীকদল জামাতের চাপে।
২৮ অক্টোবর ক্ষমতা ত্যাগের পূর্ব মুহূর্তে জামাত তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে পরদিন পল্টনে আওয়ামী লীগ অবস্থান নিলে বৃষ্টির মত গুলি করে তারা অন্তত পঞ্চাশটি লাশ ফেলে দেবে। পুলিশ যাতে তখন নিরব থাকে এ মর্মে একটি অর্ডার লিখে যাওয়ার জন্য তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অনুরোধ জানায়।
॥ খালেদ মতিন ॥
(পূর্ব প্রকাশের পর)
কালো টাকার নেপথ্য কালো হাত ছাড়াও এ নির্বাচনে জনগণের এ মনোভাবের ফলে রাজাকারতন্ত্রের নিকট স্পর্শ আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী বিরোধী দলরূপে ম্যাডাম খালেদার বিএনপি স্থায়ী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ প্রতিষ্ঠা পাকপন্থি ধর্মাশ্রিত দলসমূহের মাথায় বটপাঁকুড়ের বিরাট ছায়াশ্রয় রূপে কাজ করে। ৯১তে তারা ক্ষমতায়ও যায় তাদের নিয়ে।
আর এ কৃতজ্ঞতার বদলা হিসেবে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনে জেনারেল জিয়ার অসম্পূর্ণ কাজটির সম্পূর্ণতা দান করেন ম্যাডাম খালেদা। জিয়াউর রহমান গোলাম আযমের নাগরিকত্ব লাভের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। ম্যাডাম তার অপূর্ণ খাহেশ পূরণ করেন। তাকে বাংলাদেশের নাগরিকে পরিণত করেন। হয়ত বলা যায় দেশের প্রচলিত আইনেই তার নাগরিকত্ব বহাল হয়।
কিন্তু ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ স্বাধীনতার সকল স্বপক্ষ শক্তি আগেই সতর্ক করেছিল প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার ফাঁক-ফোকরে গোলাম আযম পার পেয়ে যেতে পারে। তার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হোক। কে শোনে কার কথা। তখন যদি ক্ষমতায় স্বাধীনতার পক্ষশক্তি আওয়ামী লীগ থাকত তাহলে চোখ মুদে বলা যায় ট্রাইব্যুনাল হত, গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বহাল হত না। একটি বৈরী সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্মূল কমিটিই বা কেন গোলাম আযম বিরোধী আন্দোলন শুরু করল তাতে হয়েছে হিতে বিপরীত।
শেষ পর্যন্ত সর্বজন শ্রদ্ধেয়া জাহানারা ইমামকে আদালতে অভিযুক্তরূপে ইহলোক ত্যাগ করতে হল।
পক্ষান্তরে এ নাটকীয় ঘটনার মাধ্যমে এ দেশে রাজাকার শক্তির ষোলকলা পূর্ণ হয়। অতপর ৯১'র বিএনপি আমলেই তাদের শক্তির অগ্রযাত্রা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যে সরকার তাদের প্রতিরোধে হিমসিম খায়। একে তো তারা ক্ষমতার অংশীদার। দ্বিতীয়ত, গোলাম আযমের স্বপক্ষে এ রায় তাদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
বিশেষত তাদের ছাত্রসংগঠন শিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে শুরু করে নজিরবিহীন তান্ডব। এতে ছাত্রদল বেকায়দায় পড়ে। শেষ পর্যন্ত সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থানে যেতে বাধ্য হয়। তখন আরেকটি খবর বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের গোপন অরণ্যে মিলিটারিদের সঙ্গে শিবিরের ফাইট হয়।
তাতে শিবির পলায়ন করে ঠিকই কিন্তু একটি রকেট লাঞ্চার তাদের ঘাটিতে পাওয়ার যায়। অবশ্য তৎকালীন সরকারের তখনো এ উপলব্ধি হয়েছিল কিনা কে জানে যে তারা দুধ কলা দিয়ে সাপ পুষছে। অন্তত এখন পর্যন্ত তাদের কর্মকান্ডে তেমনটি তো মনে হয়না।
পরবর্তী ৯৬'র আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি এবং তাদের বৈরী সরকার। তাবলে তখন তাদের গোপন ক্রিয়াকান্ড চোরাগুপ্তা আক্রমণ সমান হারেই চলতে থাকে।
তবে আগের সরকারের আমলে যতটুকু ছিল প্রকাশ্য এখন সে তুলনায় অনেক গোপন। কবিশ্রেষ্ঠ শামসুর রহমানকে অতর্কিত আক্রমণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় তাদের তৎপরতা। এরপর কোটালিপাড়ায় বোমা হামলার পরিকল্পনা কমিউনিস্ট পার্টির সভায় বোমা হামলা সর্বশেষ পয়লা বৈশাখে রমনা বটমূলে সৃষ্ট ট্র্যাজেডি অথচ এর কোনটিই তদন্তে সন্দেহাতীত রূপে প্রমাণিত নয়। মাঝখান থেকে অনেকগুলো জীবন নষ্ট হল। আর দুষ্কৃতকারী মৌলবাদীদের কিছুই হয়নি।
তাদের মনোবল আরো বৃদ্ধি পায়।
পরবর্তী বিএনপি সরকার। এ দেশে ক্ষমতারোহনের সর্বোচ্চ সুলভ হাতিয়ার ধর্মের জিকির তুলে জমাতকে সঙ্গী করে ক্ষমতায় আসে। তাই বলে জামাত থেমে থাকেনি। এ সময় তাদের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব সিরিজ বোমা হামলা।
এ সময় তাদের চোখমুখ, হাবভাব, কথাবার্তার রূপ বদলে যায়। স্বাধীনতার পক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে নিজামী সাহেবের শ্লেষাত্মক, অলীক কথার বান ছুড়তেও কম যাননি। তার মতে ৭১'র ১৪ ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড নাকি আওয়ামী লীগেরই সৃষ্টি! আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের ভাষাজ্ঞানের প্রতিও তার বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য, ওরা শুদ্ধ করে রেজাকার শব্দটিও উচ্চারণ করতে পারেনা বলে রাজাকার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য 'রেজা'র জায়গায় 'রাজা' বললে তাদের সম্মান কিছু কমেনা, বরং বাড়ে। আর নিজামী সাহেবকে এ জ্ঞান কে দেবে যে ভাষাতত্ত্বের নিয়মে এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় শব্দের স্থান পরিবর্তন হলে নবাগত ভাষায় এর উচ্চারণের কিছু পরিবর্তন হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
তৎকালীন সরকারের শেষ পর্যায়ে নেত্রকোণায় উদীচীর বোমা হামলাও তাদের নগন্য নয় বরং একটি জঘন্য কর্ম।
পুনরুত্থিত রাজাকারদের ইতিহাস এত সংক্ষেপেই শেষ হয়ে যাবার নয়। বিগত বিএনপি আমলে ক্ষমতার শরীক হিসেবে তাদের দেহ ও মনোবল যেন হাতির পাঁচ পা। বিএনপিকে জিম্মি করে তাদের অগ্রগতি। ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে গ্রেপ্তারকৃত বিএনপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর প্রদত্ত বিবৃতিটি গুরুত্বপূর্ণ।
তার মতে তিনি জামাতের অনেক লোককেই জেলে পুরেছিলেন। কিন্তু রাখতে পারেননি ক্ষমতাসীন শরীকদল জামাতের চাপে। ২৮ অক্টোবর ক্ষমতা ত্যাগের পূর্ব মুহূর্তে জামাত তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে পরদিন পল্টনে আওয়ামী লীগ অবস্থান নিলে বৃষ্টির মত গুলি করে তারা অন্তত পঞ্চাশটি লাশ ফেলে দেবে। পুলিশ যাতে তখন নিরব থাকে এ মর্মে একটি অর্ডার লিখে যাওয়ার জন্য তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অনুরোধ জানায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।