এখানে আমার মনে জা আসে আমি তাই লিখি। যদি কোন দিন কোন প্রকার খারাপ কিছু লিখে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন সূত্রঃ প্রথম আলু
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার দশম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এতে চাকরিচ্যুত শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম এবং বসুন্ধরা শাখার ভারপ্রাপ্ত শাখাপ্রধান লুৎফর রহমানকে অভিযোগ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা পুলিশের অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করে প্রথম আলোকে জানান, পুলিশ প্রভাবিত হয়ে মামলা তদন্ত করে অধ্যক্ষসহ দুই শিক্ষককে অভিযোগ থেকে বাদ দিয়েছে।
তাঁরা এ অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেবেন বলেও জানান।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক এস এম শাহাদত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ১১ আগস্ট মামলার অভিযোগপত্র তৈরি করা হয় এবং তা ১৪ আগস্ট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম ও বসুন্ধরা শাখার প্রধান লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তাই তাঁদের অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানায়, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ভাড়া বাসার কোচিং সেন্টারের একটি কক্ষে আটকে রেখে পরিমল জয়ধর তাকে দুই দফা ধর্ষণ করেছেন। গত ১১ জুলাই পরিমল জয়ধর মেয়েটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আদালতে দেওয়া মেয়েটির জবানবন্দি ও আসামি পরিমলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা এবং সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামি পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ৯(১) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।
অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম ও শাখাপ্রধান লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে আলামত বিনষ্ট করা, ভয়ভীতি দেখানো ও মেয়েটিকে স্কুল থেকে বহিষ্কারের হুমকির অভিযোগে মামলা করার পর ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়।
এ ঘটনায় ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এ জন্য তাঁদের অব্যাহতির জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।
অভিযোগপত্রের ব্যাপারে জানতে চাইলে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, অধ্যক্ষ মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছিলেন। মেয়েটির স্বজনদের বক্তব্য অভিযোগপত্রে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও মেয়েটির স্বজনেরা অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত থেকে তিনি এ মামলার নিরপেক্ষ তদন্ত করেছেন।
গত ৭ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিমল জয়ধরকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১১ জুলাই তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষ পরিমলকে চাকরিচ্যুত করে।
তবে এ ঘটনার পর অধ্যক্ষ হোসনে আরার অপসারণের দাবিতে ভিকারুননিসার ছাত্রী ও অভিভাবকেরা আন্দোলন শুরু করেন। এ অবস্থায় হোসনে আরাকে তিন মাসের ছুটি দিয়ে মঞ্জুআরা বেগমকে অধ্যক্ষের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন: ছাত্রী ধর্ষণ ও পরবর্তী সময়ে সৃষ্ট ঘটনার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাহিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, কাল রোববার প্রতিবেদনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিবেদনে এই ঘটনায় সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য অধ্যক্ষ হোসনে আরাসহ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা হয়েছে।
কমিটি মনে করে, কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেছে। এরপর পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্যের কার্যকলাপ দেখে মনে হয়েছে তাঁরা ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কিছু শিক্ষকও দায়ী। ২৪ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে এত বেশি শাখা না খোলা, এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের কমিটি করার সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিটির প্রধান ছিলেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।