আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিজাব এবং এযুগের হিজাব

হিজাব নিয়ে লিখব বলে অনেকদিন ধরেই ভাবছি। আজকের সমাজ ব্যবস্থার সাথে হিজাবকে যদিও অনেকেই খ্যাঁত /সেকেলে বলে থাকেন ,অনেক আজকের নারীরাই হিজাবকে এড়িয়ে চলতে চান,তবুও হিজাবের গুরুত্ব অপরিসীম । হিজাব বলতে বোরখা পরা অথবা ঘরে বন্দী অবস্থায় থাকা বোঝায় না। হিজাব মুলত কুরআনের একটি পরিভাষা যার আভিধানিক অর্থ প্রতিহত করা,ফিরিয়ে রাখা, আড়াল করা। পারিভাষিক অর্থ সেই বিধি নিয়ম যার মাধ্যমে ঘর থেকে শুরু করে পথ-প্রতিষ্ঠান সমাবেশ সহ সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রনহীন কথাবার্তা ,দর্শন ,দৃষ্টিবিনিময় ,সৌন্দয প্রদর্শন ও সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ করা হয়।

হিজাব সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী পুরুষের মধ্যে এমন একটা সংযম শালীনতার সীমা তৈরি করতে চায় যা একদিকে ব্যক্তি ,পরিবার ও সমাজকে কিছু অসুস্থ প্রতিযোগিতা ,অশালীন ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে রক্ষা করবে। পবিত্র আল-কুরআন এ সুরা নুর এর আয়াত ২-২৬ পর্যন্ত হিজাব বিহীন সমাজে উদ্ভূত অপরাধের শাস্তি ,সমাজের বিচার প্রক্রিয়া ,সাবধানতা, আপোষ ,তওবা, ক্ষমা, পুরষ্কার এইসব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। http://quran.com/24(আয়াত ২-২৬) এরপর এইসব সামাজিক সমস্যাকে নিয়ন্ত্রন করার উদ্দেশ্যে সুরা নূর এর আয়াত ২৭ থেকে হিজাবের বিধানের বর্ণনা শুরু হয়েছে। "হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।

যদি তোমরা গৃহে কাউকে না পাও, তবে অনুমতি গ্রহণ না করা পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করো না। যদি তোমাদেরকে বলা হয় ফিরে যাও, তবে ফিরে যাবে। এতে তোমাদের জন্যে অনেক পবিত্রতা আছে এবং তোমরা যা কর, আল্লাহ তা ভালোভাবে জানেন। "-আয়াত-২৭-২৮ আরো বলা হয়েছে "মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে।

নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। "-আয়াত-৩০। আর হিজাবের সীমার ব্যাপারে বলা হয়েছে আয়াত-৩১ এ এইভাবে, "ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

" এবার কুরআনের আলোকে বলতে চাই হিজাব এর বিধান নারীকে বন্দী করে নি, নারীর অধিকার খর্ব করে নি,বরং নারীকে দিচ্ছে শ্রদ্ধা ,সন্মান। ইদানিং ঢাকা তে হিজাব পরিহিতা মেয়ের সংখ্যা আগের তুলুনায় অনেক বেড়ে গেছে,একদিকে যেমন সর্টড্রেস পরিহিতা অন্যদিকে হিজাব রমণীও কম নয়। আমি হিজাব কে সমর্থন করি কিন্তু হিজাবের নমুনা দেখে আহত না হয়ে পারি না কেননা গতদিন বনানী তে দেখলাম এক রমণী হিজাব পরেছেন ,কিন্তু এর সাথে উনি আঁটসাঁট গাঞ্জি ও টাইট জিন্স পরেছেন। এতে কেবল আমি না অনেকেই বিভ্রান্ত হবেন । হিজাবের অর্থ প্রতিহত করা,ফিরিয়ে রাখা, আড়াল করা।

তিনি তো নিজেকে অন্যদের দৃষ্টি থেকে ফেরাতে পারেন নি,নিজেকে আড়ালও করতে পারেন নি,বরং সবার দৃষ্টি কেড়েছেন,যা হিজাবের পরিপন্থী। আমার মনে হয় আমাদের হিজাব নিয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। হিজাব শুধুমাত্র কোন পোশাকের নাম নয়,এটি পূর্ণাঙ্গ নৈতিক ব্যবস্থাপনা যা পুরুষ এবং নারী উভয়ের জন্যই অবশ্য পালনীয়। বিঃদ্রঃ অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার সাহস করে ফেললাম। লেখা মানসম্মত করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি,তাও করতে পারি নি।

ব্লগে নতুন তাই ভুল গুলি শুধরে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.