চলছে রমজান। এই রমজানকে সামনে রেখে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্যের পাশাপাশি রোজাদারেরা দুধ পান করে থাকেন। তাই গরুর দুধের চাহিদা বর্তমানে অনেক বেশি। কিন্তু ভেজালের এই সময়ে আমরা কি কিনতে পারছি নির্ভেজাল গরুর দুধ? নাাকি কিনছি পাউডার মেশানো গরুর দুধ? নাকি যেটা কিনছি সেটা মহিষের দুধ? খাঁটি দুধ চিনতে হলে আমাদের অবশ্যই কিছু বিষয়ের দিক নজর রাখতে হবে, আর সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল-
দুধবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম.এ.সামাদ খান জানান, বাহ্যিকভাবে ক্রেতাকে গরু ও মহিষের দুধ পার্থক্য করতে হলে প্রথমত দুধের রঙ দেখে নিতে হবে। যদি দুধের রঙ ধবধবে সাদা হয় তবে বুঝতে হবে তা মহিষের দুধ এবং রঙ সোনালি হয় তবে বুঝতে হবে এটা গরুর দুধ।
অন্যদিকে হাত দিয়ে দুধের ঘনত্ব বুঝে গরু ও মহিষের দুধ আলাদা করা যায়। এক্ষেত্রে মহিষের দুধ ঘন হবে কারণ মহিষের দুধে ফ্যাট বেশি থাকে এবং ফ্যাট কম থাকার কারণে গরুর দুধ তুলনামূলকভাবে ঘন কম হবে। এছাড়াও অভ্যন্তরীণভাবে বিভিন্ন ধরনের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ভেজাল দুধ চিহ্নিত করা যায়।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও দুগ্ধবিজ্ঞানী সহযোগী অধ্যাপক ড, মো. হারুন-আর-রশীদ বলেন, বাহ্যিকভাবে গরুর দুধের সাথে পাউডার ও পানি মেশানে দুধ আলাদা করা খুব কঠিন। তবে ক্রেতা যদি কিছুটা অভিজ্ঞ হয় তবে তা নিরুপণ করতে পারে।
পাউডার মেশানো দুধ তুলনামূলকভাবে মিষ্টি গন্ধের হবে। যখন গরম করা হয় তখন পাতিলের নিচে গায়ে লেগে যাবে কারণ পাউডার দানা হয়ে তলানি পড়ে।
পাউডার মেশানো দুধ তুলনামূলকভাবে গরুর দুধের চেয়ে ঘন। এছাড়াও হাত দিয়ে স্পর্শ করেও বোঝা যায়। প্রকৃতপক্ষে পাউডার দুধ কোনোমতে ব্যবহার করা ঠিক না।
কেননা অতিরিক্ত গরম করে পাউডার দুধ তৈরি করা হয় ফলে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রাসায়নিক নিউট্রিয়েন্টের গুণগতমান নষ্ট হয়ে যায়। উন্নত গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘদিন পাউডার দুধ ব্যবহারের ফলে আলসার ও পরবর্তীতে তা ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে।
আবার বাজারে দুধ বিক্রি করার সময় অনেকে দূষিত পানি মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করছে। এমনকি অনেক সময় খবর পাওয়া যায় যে দুধে রঙ আনতে চিটাগুড় ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও দুধ বাজারজাত করতে যে পলিথিন ব্যবহার করা হয় তা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভাল না।
গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন পলিথিন ব্যবহারে শরীরের মধ্যে মিউটেশন হয় এবং কোষের পরিবর্তন দেখা দেয়। ফলে এক সময় শরীরের অভ্যন্তরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত দেখা দেয় এবং পরবর্তীতে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনে তা ক্যান্সারে পরিণত হয়। তাই শুধু এই রমজানে নয় সারা বছরই ভেজাল দুধ পান থেকে দূরে থাকুন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।