আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কমেডি নাকি ট্রাজেডি !! ১৫

কত কিছু যে করতে চাই, তবুও কিছু করতে না পারার দায়ে মাথা খুঁটে মরি । (এই কাহিনীতে কমেডি হবার কোন চান্সই নাই। এইটা পুরাই ট্রাজেডি। তবুও শত্রুপক্ষের লোকের কাছে কমেডি হলেও হতে পারে। সেই চিন্তায় উল্লেখ করা হল।

) পার্ট ১ আম্মু যখন অফিস থেকে আসে, বাস ১০ নাম্বারে নামিয়ে দেয়ার পর বাকি রাস্তা আম্মা হেঁটেই আসে। এটার মূল কারণ হল, রিকশাওয়ালার পায়ে ধরে যদি বলা হয় ভাই দুপুরে আমার বাসায় লাঞ্চ কইরেন, ৫০ টা টাকা বেশি নিয়ে যাইয়েন, তবু আমাকে বাসায় পৌঁছে দেন – তাও উনারা রাজী হন না। উলটা এমন চোখে তাকান যেন কী এক গভীর চিন্তার মাঝে তাঁকে বিরক্ত করা হল। ত, হাঁটার পথে আম্মু বেশির ভাগ সময় টুকটাক বাজার করেও নিয়ে আসে। আসতে আসতে সাড়ে ৫ টা বা ৬ টার মত হয়।

সাধারণত আমি বাসায় থাকলে এমন রুটিনই দেখি। কয়েকদিন আগের এইচএসসির রেজাল্ট দেবার মৌসুমের ঘটনা। আমার ক্লাস শেষ হয়ে গেল দুপুর ২টায়। বাসে উঠে জায়গা পেলাম রোদের দিককার জানালায়। সেই অবস্থাতেই পড়লাম জ্যামে।

বাস নামিয়ে দেয়ার পর শুরু হল রিকশাওয়ালার পায়ে ধরা। নাহ, উনারা কেউ রাজি না। হাঁটতে হাঁটতে বাসায় যখন এসেছি তখন ৫ টা। ক্লান্তির চূড়ান্ত। কোনমতে ঘরে ঢুকেই দেখি হায়রে, ইলেক্ট্রিসিটি নেই, আইপিএস এর চার্জও নেই।

কুঁ কুঁ করতেছে। ওটা অফ করে দেয়ার পর ভরসার জায়গা একটাই। বাথরুম, শাওয়ার। তাড়াতাড়ি ড্রেস খুলে বাথরুমে যাওয়াটাই তখন মাথায় ঘুরতেছে। এমন অবস্থায় দরজায় নক।

নক নক। আমি ভাবলাম আম্মু আসছে। অতক্ষণে আমি পাগল হয়ে গেছি শাওয়ারের নিচে দাঁড়ানোর জন্য। ত এত কিছু না ভেবে সামনের টাওয়েলটাই কোমড়ে পেঁচিয়ে নিয়ে গেট খুলে দিলাম। চুল পুরা এলোমেলো, গরমে ঘামে আমি পুরা ভর্তা।

কিন্তু না !!!!!!!!!! আম্মা না !!!!!!! পার্ট ২ এইচএসসির রেজাল্ট দিছে তার আগে দিন। জিপি ৫ পাওয়ায় খুশিতে মিষ্টি নিয়ে আসছে নিচের ফ্লাটের মেয়েটা !!!! ওহ নো। ইন্টারপাশ মেয়ে। মেয়ে সুন্দরী হওয়ায় তার মা সবসময় তার সাথে থাকে। গত দু তিন বছরে তার সাথে আমার বড়জোর ২-৩ বার কথা হয়েছে (আমাকে সিড়িতে বলছিল, “একটু সাইড দিন প্লিজ।

” )। সেই মেয়ে এসেছে এবার একা, তার হাতে ট্রে; সেখানে কয়েকটা পিরিচ। তার মধ্যে একটা আমাদের জন্য। এক হাতে কষ্ট করে ট্রে ধরে আরেক হাতে কোন মতে পিরিচ টা এগিয়ে দিল। এখন ত আমি ফেরত যেয়ে প্যান্ট শার্ট পড়ে আসতে পারি না।

এগিয়ে ধরা পিরিচ রেখে দরজা লাগিয়ে ফেরত যাবো ? বললাম, “ওয়েইট, আমি আমাদের বাটিতে রেখে দিচ্ছি। তুমি এখনই পিরিচ নিয়ে যাও। ” বলে পিরিচ হাতে নিলাম। এই সময় মনে পড়ল আমার বডি সাইজ আর টাওয়াল সাইজের রেশিও টা যুতসই হয় নি। এমনিতেই খালি গা, খালি পা, তার মাঝে নড়তে যেয়ে যদি মাঝের অংশটাও খালি হয়ে যায়, এই জীবনে তাহলে থাকবে টা কী? ঢাকায় নাকি ভূমিকম্প হবে ! তখন ভাবতেছিলাম হয় না কেন, হউক।

আমি লুকাই। পিরিচ হাতে নিছি কিন্তু আমি ত আর নড়াচড়া করি না। ঠায় দাঁড়িয়ে আছি। নড়লেই যদি খুলে যায় !!! পার্ট ৩ আমার বয়স যখন ৫ বছর ছিল, তখন আমি হর্লিক্স খেয়েছিলাম একদিন। সেই জোরে আমার তখন ব্রেইন খুলে গেল।

পিরিচ যেহেতু নিয়েই ফেলেছি, এখন দরজা লাগানো যায়। কিন্তু দরজা লাগাতে হলে আমাকে একটু পিছে সরতে হবে। ভাবলাম, আমি যেহেতু হিরো আর হিরো থাকলে যেহেতু রিস্ক নাই, তাই লাফ দিয়ে পিছে সড়েই দরজা লাগিয়ে দিলাম। অতক্ষণে আমার টাওয়েল প্রমাণ করে দিল, রেশিওর অংকে আমি খারাপ না। আমার ধারণাই সঠিক ছিল।

এটা একটু নড়লেও কোমড়ে থাকবে না। এরপরে এখন পিরিচ কোথায় রাখি !! আরেক পিরিচে সেটা রেখে খালি পিরিচ কী খালিই ফেরত দিব? তখন মনে পড়ল ইফতারের সময় প্লেট ফেরত দেবার সময় ভরে দেয়া লাগে, ইন্টারের রেজাল্টের বেলায় লাগে না। এদিকে সময় বয়ে যাচ্ছে। একবার ভাবলাম মিষ্টি রাখার দরকার কী, সব খেয়ে খালি পিরিচ ফেরত দেই। পরে মনে হল, অনেক সময়ের ব্যাপার।

আমি খাদ্যপ্রিয় হলেও মিষ্টি প্রিয় না তেমন। যখন আমার বয়স ৫ ছিল তখন আমি একবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়েছিলাম । সেই জোরে সেদিন আমার চোখে খুলে গেল। আমি দেখি আরে সামনেই ত এত্তগুলা পিরিচ। পরে এগুলাতে মিষ্টি রেখেই খালি পিরিচ ফেরত দেবার মিশন নিলাম।

এসব চিন্তা করতেছি, টাওয়েল গিট্টু দিতেছি আর সেই ইন্টারপাশ মেয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে। টাওয়েল রেশিওর অংক অনুযায়ী এমনিই কম, এর উপর গিট্টু দিলে আর থাকে কী ! এখন আবার প্যান্ট পড়ে আসব? কতক্ষণ লাগবে? অনেক এংগেলে চিন্তা করেও অংক মিলছে না। “এংগেল” !! এটাই আমার সমাধান হয়ে গেল। টাওয়েল আমার যেই অংশে নেই, সেই অংশ থাকবে দরজার একপাশে। মেয়েটা তার এংগেল থেকে দেখতে পাবে না।

বাকি দিক দিয়ে পিরিচ ফেরত দিব। ত দরজার এক পাশে দাঁড়িয়ে গেট খুলে দিলাম। দেখি ইন্টারপাশ মেয়েটা একটু পিছে সড়ে দাঁড়ালো। আরে, সে এমন করে ক্যান । আমি বললাম, “এদিকে আসো।

” সে খুবই ক্যামন ক্যামন করে যেন আসল। পরে আমি তার হাতের ট্রের উপর পিরিচ রেখে দিলাম। এ দেখি তাড়াতাড়ি চলে গেল। ফাইনাল পার্ট আমি ভাবছিলাম এই ক্যামন ক্যামন ভাবটা করল ক্যান? তবে কী সে আমার সাথে ভাব দেখালো ? হঠাৎ বুঝলাম তাড়াহুড়ায় এংগেল ভুল হয়ে গেছে। টাওয়েল উন্মুক্ত অংশ দরজার বাইরে; উলটা ঢাকা অংশই দরজার ভিতরে।

ও মাই গড। ইন্টারপাশ মেয়ে না জানি কী মনে করছে, ভাবছে হয়ত যে ভিতরে আরও সময় নিয়ে এই রকম গিট্টু দিছি যেন এমন একটা সিন ক্রিয়েট হয়। হায়রে !! নাকি ভাবছে আমি ঘরে এভাবেই থাকি !! আমার এখন শিক্ষা হইছে, নিজের রুমেও আর খালি গায়ে থাকি না। এই সিরিজের নিয়মিত পাঠক যারা, তারা জানেন, সাধারণত এই সিরিজটা সত্য কাহিনীর উপর বেইজ করে লেখা হয়। একই সাথে আমার পার্সোনাল ব্লগ সাইটে প্রকাশিত।

সবাইকে আমন্ত্রণ। http://wings.rizvanhasan.com আমার ব্লগ সাইটের ফ্যান পেইজ। এখানে লাইক দিলে নতুন যে কোন লেখার লিংক পেয়ে যাবেন। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।