আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কমেডি নাকি ট্রাজেডি !!!!!

কত কিছু যে করতে চাই, তবুও কিছু করতে না পারার দায়ে মাথা খুঁটে মরি ।

প্যাকেজ পর্ব (এইটা বোধহয় ৭ নাম্বার) টেক্সটাইল ওয়ার্কশপে অসাধারণ একটা ভাইভা দিলাম আজকে। ভাল অর্থে অসাধারণ না, মানে, আক্ষরিক অর্থেই অ(নয়)সাধারণ। লেদ মেশিনের উপর মিড টার্ম। ১০ মার্কস প্র্যাকটিকাল, ১০ মার্কস ল্যাব রিপোর্ট, ১০ মার্কস ভাইভা।

একটা হোল্ডারে একটা লোহার খণ্ড রাখতে হয়। এরপর ইলেক্ট্রিক গিয়ার দিয়ে সেটা অনেক জোরে ঘুরাতে হয়। সামনে একটা ছুরির ফলার মত থাকে। ওটা সেই লোহার খণ্ডে লাগিয়ে খণ্ডটাকে বিভিন্নভাবে সাইজ করতে হয়। সহজ বাংলায় এই হল লেদ মেশিনের মূল কাজ।

ভাইভাতে যখন গেলাম, ম্যাডাম বসতে বললেন (এই ম্যাডাম, সেই ম্যাডাম। জ্ঞানী আর নিয়মিতরা বুঝে নিন। আমি এখন বড় হইছি, তাই উনার ক্লাস পাইছি)। ম্যাডামের চোখ দেখে আমি আবার অতল সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি। মাথা পুরা খালি।

ম্যাডাম প্রশ্ন শুরু করলেন। > ক্যারেজ দিয়ে কী করে? - ইয়ে মানে, ইয়ে করে। > কী করে? -ইয়ে মানে, লোহার খন্ডটাকে সাইজ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। >আচ্ছা, আচ্ছা। টেইলস্টক দিয়ে কী করে? -ইয়ে মানে, ইয়ে করে (আমি পড়ে আসছিলাম।

ম্যাডামের চোখ দেখে ভুলে গেছি। আমার দোষ নাইক্কা)। >কী করে? -ইয়ে মানে, লোহার খন্ডটাকে সাইজ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। >ফিড বার কী? -লোহার খন্ডটাকে সাইজ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। >আচ্ছা, আচ্ছা।

শেষ প্রশ্ন, ক্রস স্লাইডের কাজ কী? -ইয়ে। >ইয়ে মানে? -ম্যাডাম বুঝেনই ত। লোহার খন্ডটাকে সাইজ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। >ও, তোমার ল্যাব রিপোর্টের খাতায় হাতের লেখা এত খারাপ আসছে কেন? -লোহার খন্ডটাকে সাইজ করার কাজে ব্যস্ত ছিলাম ম্যাডাম। আমাগো ভার্সিটি মেইনলি টেক্সটাইল বেইজড।

এরপরেও, অন্য কিছু ডিপার্টমেন্ট কোনভাবে চলে। এরা কোত্থেকে আসছে আর কেনইবা আসছে, টেক্সাটাইলের ভার্সিটিতে অন্য সাবজেক্ট কেন পড়তেছে, আমাদের কোন ধারণা নেই। তো, কম্পু ক্লাস করতে যাওয়ার সময় আমাদের সেকশনে ১০ টা কম্পু সাইন্স পড়া মেয়ের রোল ঢুকছে। কম্পু ম্যাডামের সাথে তাদের চরম দহরম মহরম। তারা ম্যাডামের বাসায় যেয়ে পিকনিক করে।

ম্যাডামের দুই পিচ্চি মেয়েকে নাচ শেখায়। মাস শেষে চাঁদা তুলে চকোলেট উপহার পাঠায়। ম্যাডাম মেয়ে গুলাকে দেখিয়ে প্রথম ক্লাসে বললেন, “বুঝলা, আমার সিএসই ডিপার্টমেন্টের মেয়েগুলা কম্পিউটার জগতের একেকটা রত্ন। ” আমরা বলি, “কেন ম্যাডাম?” ম্যাডাম বলে, “ এরা ভাল নাচতে জানে, প্রত্যেকেই দারুণ গান গায়। অনেকেই অনেক সুন্দর কবিতা(এহেম এহেম) লেখে।

” জাতি হাসতে হাসতে হেঁচকি খায়। ম্যাডাম বলতেছেন, “ আমার ডিপার্টমেন্টের মেয়েগুলো খুবই রেসপন্সিবল আর সিরিয়াস। ” আমরা বলি, “ কেন ম্যাডাম? ” ম্যাডাম বললেন, “ একদম পরীক্ষার দিনও ওরা নাচের রিহার্সাল বাদ দেয় না। ” জাতি হাসতে হাসতে হেঁচকি তুলে। ম্যাডাম বললেন, “ এই ভার্সিটিতে আসলে সিএসই কেই বেইজ করা উচিত।

” আমরা কিছুটা ক্ষেপে বললাম, “ কেন ম্যাডাম? ” ম্যাডাম বলল, “ টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্টের কয়জনেরই বা টেক্সটাইল মিল আছে? এর চেয়ে দেখ কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের ৪০% এর কম্পিউটার আছে। ” “মাত্র ৪০%”, এই বলে জাতি হাসতে হাসতে এবার গড়াগড়ি শুরু করল। কী দিন আইল !!! খালি আর জ়ে হইতে মঞ্চায়। © আকাশ_পাগলা [ যেহেতু এই সিরিজে সব বাস্তব কাহিনী, তাই দম ফাঁটানো হাসির কৌতুক আশা না করাই ভাল। ] প্রথম পর্ব Click This Link দ্বিতীয় পর্ব Click This Link তৃতীয় পর্ব Click This Link চতুর্থ পর্বের জন্য Click This Link পঞ্চম পর্ব Click This Link ষষ্ঠ পর্ব Click This Link


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।