...আমায় ডেকোনা...ফেরানো যাবেনা!!! খুব অস্থির লাগছে অরন্যের। সেই পুরোনো অস্থিরতা। এই অস্থিরতাটাকে হয়ত উপভোগই করে সে। নইলে কেন সে বারবার নিজেকে অসুখী ভাবে স্থিরতায়? আর কিছু না ভেবেই খোজা-খুজির কাজটা শুরু করে।
''নাকি বন্ধ করে দিব?''-ভাবে সে, এক মুহুরতের জন্য হাতটা স্থির হয়ে যায়।
ভাবনাটা সংক্রমিত হওয়ার আগেই পেয়ে যায় যা খুজছিলো। সাদা জমিনের উপর গাঢ় নীল-এ লেখা 'Rupkotha(রূপকথা )' । অক্ষরগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে খানিকক্ষন। একটু যেন ভয়-ভয় ও করে। আর কিছু না ভেবেই মাউস এর উপর হাত রাখে, তরজনী দিয়ে রূপকথাকে ছোয়।
পাচ মিনিট আগের একটা ফোন-কলই সব আবার ওলট-পালট করে দিল -ভাবে অরন্য।
ফেসবুকের কল্যানে সে আজ রূপকথাকে আবার খুজে পেল। প্রোফাইল-এ শুধুমাত্র ছবি দেখার সুযোগ দেয়া আছে। অবশ্য আর কোন তথ্য তার অজানাও নেই। পরক্ষনেই ভাবে, আট মাসের ব্যবধানে একটা মানুষ কতটুকু বদলাতে পারে? সে নিজে কতটুকু বদলেছে? রূপকথাও বদলেছে? ভাবনার রাজ্য থেকে বাস্তবে আসতেই ছবিটার দিকে তার মনযোগ পড়ে।
সাদা-কালো একটা ছবি। কিন্তু অরন্য ঠিকই খুজে পায় রূপকথার হাসির সেই পুরনো রঙ। নিজের অজান্তেই দীরঘশবাস বেরিয়ে পড়ে। মুঠোফোনটা হাতে নিয়েই নাঈম-কে কল দেয়।
ওপাশে কন্ঠস্বর শুনেই বলে
-থ্যাংকস।
তোর সাথে এড আছে?
-আরে না। তুই পাঠাইছিস?
-না
-পাঠাবি?
-না।
বলেই লাইন কেটে দেয় অরন্য।
অস্থিরভাবে এদিক-সেদিক তাকায়। প্যাকেট খুজে পেতেই এবার লাইটার হাতে নেয়।
সিগারেট জালায়। লাইটার এর আগুনে কি যেন খুজে। কম্পিউটার বন্ধ করে শুয়ে পরে।
জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে চাঁদ। পুরনিমার চাঁদ।
পুরো আকাশে শুধু একা চাঁদ, সমস্ত পৃথিবী আলোকিত, যেন হাসছে, শুধু নিঃসঙ্গ চাঁদ।
আচ্ছা, রূপকথার হাসিতে কি নিসঃঙ্গতা ছিল? নাকি, তার নিজের নিসঃঙ্গতা রূপকথার হাসির ভুল ব্যাখ্যা দাড় করছে?
মুঠোফোনটা হাতে নিয়ে আবারো খোঁজে, এবার সেভ করে রাখে। ছবিটা দেখে, বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে। হৃদপিন্ডের রক্তগুলো যেন লাফাতে শুরু করেছে।
নিজের অজান্তেই ছবিটাকে চুমু খায়, বুকের সাথে চেপে ধরে।
সেই চাপেই বোধহয় হৃদপিন্ড ফেটে যায়। রক্তগুলো বরণহীন হয়ে চোখ দিয়ে বের হয়ে আসে। প্রথমে দু'ফোটা করে, এরপর অঝোর ধারায়।
মোবাইল্টা অফ করে দেয় অরন্য। আর একটা সিগারেট জালায়।
একসময় ঘুমিয়ে পরে। দুঃস্বপ্ন দেখে। চোখ বেধে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাকে, আর সবাই লুকচুরখেলছে তার সাথে। তার মন, রূপকথা, পৃথিবী সবাই। তারপর ঘুম ভাঙ্গে।
ঘুম ভেঙ্গেই অদ্ভুত একটা অনুভুতি হয় অরন্যের। সব কিছুকেমন যেন শুন্য মনে হচ্ছে।
কি যেন নেই, কি যেন ছিল।
কে যেন চলে গেছে, হৃদপিন্ডটা নিয়ে গেছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।