কাল ছিল উল্কাপাতের রাত। গতকালকের চেয়ে সারাদিন শীতের তীব্রতা বেশ কম। সকালে উঠেছিল ঝকঝকে রোদ। দুপুরে মেঘ কুয়াশার খেলা চলল। তবে বাতাস আর শীতের প্রকোপ থেমে আছে এইটাই আনন্দের বিষয়।
রাতের আকাশটা ঝকঝকে তারার। কাজের পর আবার শপিং মলে যেতে হলো বাড়ি ফিরে কিছু কেনা কাটার জন্য। ফিরতি পথে দেখলাম শান্তাক্লজ প্যারেড। আলোর মালায় সাজিয়ে গাড়ির বহর হো হো হো হাসির ফোয়ারা তুলে ধীর গতিতে চলে গেল আনন্দ মিছিল। আমি গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়ালাম কিছু ছবি তুলে নিলাম সেল ফোনে তাৎক্ষনিক।
অনেক মানুষ দু হাত দুলিয়ে আনন্দে সারা দিচ্ছে গাড়ির ভিতরে বাচ্চা এবং অন্য যারা আছে বিভিন্ন ক্রিসমাসের সাজে তাদের সাথে। জানা ছিল না আনন্দ মিছিল হবে কেনাকাটা করতে গিয়ে শরিক হয়ে গেলাম, ভালোলাগল বেশ। ফিরতি পথে রেড়িওতে জানলাম আজ মেট্রো শাওয়ারের রাত’ আহা.. আজ মাঝরাত আকাশে দৃষ্টি ফেলে তারার বৃষ্টি দেখতে হবে।
এখন সুবিধা হয়েছে আকাশের খবর ঘরে বসে পেয়ে যাই কখন কি হবে। যদি একটু নজর খোলা রাখা যায়।
সাধারনত আগস্ট মাসে অজস্র তারা ঝরে পরে আকাশ থেকে। তার কারণ সৌরো ঝড়। ঘূর্ণায়নে তারায় তারায় ধাকাধাকি লেগে ছিটকে চলে যায় মহাশূন্যের একদিক থেকে অন্যদিকে। ভাগ্যিস একটি কনাও পৃথিবীর কাছাকাছি পৌঁছায় না নয়তো খবর ছিল আমাদের!
এখন ঠিকঠাক আবহাওয়া বার্তার মতন খবর জানা যায় কোন সময়, কোন দেশে তারার বৃষ্টি হবে। তাই ছোটবেলার মতন হঠাৎ কখনও দু একটা উল্কাপাত দেখা নয়।
বারীধারার মতন উল্কাপাত দেখার সুযোগ হয়। উল্কাপাত দেখলে খারাপ কিছু ঘটবে আমাদের দেশের ধারনা আর বিদেশে ওরা গুড উইস করে প্রতিটি ঝরে পরা তারার সাথে। কাজেই সব কুসংস্কার দূরে রেখে আমি সুযোগ পেলেই ছুটে যাই প্রকৃতির বিশাল পরিবর্তন দেখতে।
দু বছর আগে আগস্টের এক অন্ধকার রাত্রে শহর ছেড়ে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম তারাঝরা দেখতে। পথে দেখে ছিলাম আমার মতন আগ্রহী অনেকে আকাশে মুখ তুলে বসে আছে রাস্তার পাশে।
আমিও এক গ্রামীন মাঠের পাশে গাড়ি থামিয়ে অন্ধকারে অনেক তারার বৃষ্টি দেখেছিলাম। যেন আলোর ফোয়ারা নামছে আকাশ থেকে টুপটাপ।
আজ দুরে নয় বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়েছিলাম অনেক রাতে। শীতটা সহনীয় আজ আর আকাশ ঝকঝক করছে হীরের খণ্ড বুকে। চারপাশে ধীরে হালকা হয়ে আসে আভরণ অন্ধকারের।
মাথার ঠিক উপরে বৃশ্চিক, একটু দক্ষিণদিকে কালপুরুষের কঠিদেশ। তার খানিক উত্তরে বৃহস্পতির উজ্জ্বল আভা আর ছড়িয়ে পরা পরাগের মতন অসংখ্য আলোর কুচি দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাখছে। ক্ষণেক্ষণে টুপ টুপ ঝরে যাচ্ছে বৃষ্টির মতন তারা চারপাশে। দূরে রাত দ্বিপ্রহরের জানান দিয়ে কায়ওটি ডেকে উঠল। শিশিরের ফোটার মতন ঝরছে হীম।
অন্ধকারের এক অনাবীল সৌন্দর্য আস্বাদনে মগ্ন আমি কিন্তু চোখের পাতা জড়িয়ে আসছিল ঘুমে তাই ফিরে যেত হলো কবোষ্ণ বিছানার আহ্বানে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।