আমি সত্যের এবং সুন্দরের পুজারী। কজন মানুষের সাথে হাসিমুখে মিষ্টি ভাষায় যারা কথা বলে তাদের প্রতি আমার অপরিসীম শ্রদ্ধা । আর যারা নিজেদের অনেক বড় ভাবে, তাদের প্রতি আমার রয়েছে করুণা । সাবাশ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। সাবাশ প্রথম আলো !
বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমরা বাস্তববাদী নই।
আমরা স্বপ্নবিলাসী, আমরা কল্পনাপ্রিয়, আমাদের উচ্ছ্বাস অনেক বেশি। আর তার সুযোগ নিলেন আপনারা।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে র খেলতে যাওয়ার আগে যেভাবে দল গঠন করা দরকার ছিল, তা নিয়ে আপনাদের কখনোই মাথা ব্যথা ছিল না। পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার আগেই শংকিত ছিলাম এবার বাংলাদেশ পাকিস্তানের সাথে বড় ব্যবধানে হারবে। কিন্তু বৃষ্টি ভেজা মাঠের সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশ জিতে গেল।
আমরা আরেকবার আন্দোলিত হলাম। আমরা ভুলে গেলাম, এরকম বৃষ্টি প্রতিনিয়ত হবে না। পাকিস্তনের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে খুব বাজে খেলে ড্র করলাম। আপনাদের টনক তখনো নড়ল না। আয়োজন করলেন সুপার কাপের।
খেলোয়াড় রা লেবানন কে ভয় পেলেও আপনারা পেলেন না। খেলোয়াড় কোচ আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাল যাতে ওদের আপনারা এই কয়টা দিন প্র্যাকটিসের সুযোগ দেন। ওরা আপনাদের কাছে আকুতি জানাল সুপার কাপ কয়েক্টাদিন পর করার। আপনারা তা করলেন না । আপনারা শুরু করে দিলেন সুপার কাপ ।
কোচকে বুঝানো হলো যে সুপার কাপের মত গুরুত্বপূর্ন টুর্নামেন্ট না খেললেই না। নতুন কোচ বেলুন ফুটা হওয়ার মত চুপসে গেলেন।
কিন্তু আপনারা বাংলাদেশের ফুটবলের হর্তাকর্তা। আপনাদের ডিসিশন মানতে সে বেচারা খেলোয়াড় রা বাধ্য। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রাক নির্বাচনী ম্যাচের গুরূত্ব সম্পর্কে ওরা উদাসীন হয়ে গেল।
বাংলাদেশে উচ্ছাসী দর্শক কিছুই জানল না তেমন। তারা মহাউতসাহে সুপার কাপ দেখতে গেল। রব উঠল একটা বিশেষ দলকে নাকি লীগেও সাপোর্ট করা হইছে, এই লীগ ও তারাই জিতবে। জানি না এই সন্দেহ কোথা থেকে আসল ? আসলেই কি তাই বাফুফে ?
এশিয়ার সব দেশ যখন বছর জুড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন আমরা কি করলাম ? ভারতের মত দেশ সাফ গেমস এ এখন আর সিনিয়র দল পাঠায় না। সিনিয়র টিম কে তারা প্রস্তুত করছে ১ বছর ধরে।
এর মাঝে তারা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে কাতারের সাথে, কাতার কে তারা হারিয়েছে ২-১ গোলে, সেই কাতার আজ ভিয়েতনামের সাথে গতকাল জিতেছে ৩-০ গোলে। ভিয়েতনাম এখন বাংলাদেশের সাথে খেললে ৬/৭ গোলের ব্যবধানে জিতবে। যাই হোক ভারত অনেক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। ওরা বায়ার্ন মিউনিখের মত দলের সাথে খেলে হেরেছে মাত্র ৪-২ গোলে। আরব আমিরাত, ইরান , সৌদী আরব, জাপান, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ওমান, তাজিকিস্তান সবাই যখন প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত তখন আমাদের খবর ই নেই।
আমরা তখন পাতানো বাংলাদেশ লীগ খেলতেছি। লেবানন আমাদের থেকেরুয়াঙ্কিং এ পিছিয়ে। কিন্তু কখনোই তারা দুর্বল নয়। এমন কি তারা ও আমিরাতের সাথে প্রস্তুতি ম্যচ খেলে হারছে ৬-২ এ। তার মানে তারা প্রস্তুতি ম্যচ খেলেছে।
তারা প্রিপারেশন নিয়েছে কিছু টা হলেও। গতকাল ভারত আরব আমিরাতের সাথে হেরেছে ৩-০ গোলে, এটা থেকেই বুঝ যায় ভারত সঠিক পথেই আছে। ওরা যদি ২০১৮ বা ২০২২ এ বিশ্বকাপে খেলে তখন অবাক হোয়ার কিছু থাকবে না। এমন কি শক্তি শালী প্রতিপক্ষ ইরানের সাথেও মালদ্বীপ ভালোই খেলেছে।
প্রথম আলোর কাছে আমার প্রশ্নঃ আপনাদের কাজ কি ? এসব ব্যাপারে আপনারা কথা না বললে কারা বলবে ? শুধুমাত্র আজাইরা উদ্ভট স্বপ্ন মানুষ কে দেখান কেন ? আপনারা জানেন না ? আমরা বাস্তববাদী না, আমাদের স্বপ্ন অনেক বড়, কিন্তু তার জন্য আমাদের একটু উস্কে দিলেই হয়।
কিভাবে বার বার প্রচার করলেন এমন ভাবে যে আমরা এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ২০ দলে ঢুকে যাচ্ছি ? স্ত্যি কথা বললে তো আমরা এশিয়ার সর্বনিম্ন দল্গুলার একটা।
সবাই হয়ত এমিলি আর মিঠুনের দোষ দিবে ওরা কেন খেপ খেলতে গেল, এজন্য ই আমরা হারছি।
কিন্তু আমি তো দোষ দিব বাফুফে র আর প্রথম আলোর সঠিকভাবে কোন প্রস্তুতি না নিয়ে মানুষের স্বপ্ন কে আকাশ থেকে মাটিতে ফেলার ব্যবস্থা করা জন্য।
এখন হয়ত কোচ কে বাতিল বা খেলোয়াড়দের শস্তি দেয়া হতে পারে। আসলে দায়ী তো বাফুফে।
সালাম মুর্শীদি , আপনি না কোন একটা ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা। তো আপনি এত জায়গার প্রধান ব্যক্তি হলে তো এমন ই হবে। বাফুফে তে থাকলে ঐটা ছেড়ে দিন। ফুটবল কে নিয়ে কিভাবে কি করা যায় তা ভাবুন। আর্জেন্টিনা আর নাইজেরিয়ার খেলা আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ বাফুফে, কিন্তু আমাদের ফুটবল যে আরো তলিয়ে যাচ্ছে।
দয়া করে পরবর্তী সাফ গেমস এ কোন জাতীয় দলের খেলোয়াড় পাঠায়েন না। নতুন প্রতিভা খুঁজে বের করুন। আগামী এ এফ সি চ্যলেনয কাপ, এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ বাছাই ইয়ের জন্য আগামীকাল থেকেই চিন্তা করুন। আগে তো ফুটবলের নিজস্ব মাঠ ছিল না। এখন তো ঢাকা স্টেডিয়াম আছে ।
পরিশেষে বাফুফে এবং প্রথম আলোর প্রতি ঃ আগে সত্য বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রচার করুন এবং সত্যিকার পরিকল্পনা নিন। মানুষ কে মিথ্যা আশা দেয়া টা অনেক বড় অপরাধ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।