ক্লিন'স অল্টারনেটিভ ওয়ার্ল্ড
গত কয়েকদিন ধরে সরকার পক্ষীয় লোকজন বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার একটি বক্তব্য নিয়ে বেশ হইচই করছেন। তিনি এক জনসভায় বলেছেন- ক্ষমতায় এলে বর্তমান সরকার কর্তৃক সংশোধিত সংবিধান ছুড়ে ফেলা দেয়া হবে। এই কথাটা শোনার পরপরই একটা কল্পিত ছবি ভেসে ওঠছে মনের পর্দায়- একটা ছোট আকৃতির বই। ছুড়ে ফেলা দেয়া হলো। বাতাসে ভাসতে ভাসতে বইটি গিয়ে পড়লো দূরে।
হয়তো কাদায়, পানিতে বা নর্দমায়।
আজ আমাদের আইনমন্ত্রীর একটি বক্তব্য শুনে কল্পনাটাকে বাস্তবে দেখার লোভ হচ্ছে। একজন খুনিকে মাফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। কোন আপত্তি ছিল না যদি খুনি রাষ্ট্রপতির কোন আপনজনকে খুন করত। তাহলে রাষ্ট্রপতির পূর্ণ এখতিয়ার আছে খুনিকে মাফ করার।
কিন্তু তিনি যাকে মাফ করলেন সে খুন করেছে অন্য একজনের স্বামীকে বা অন্য একজনের বাবাকে। এই মৃত ব্যক্তির স্ত্রী বা সন্তানরা জানেই না তাদের খুন হওয়া আপনজনের হত্যাকারীকে মাফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। পত্রিকা মারফত তারা খবরটি জেনেছেন। রাষ্ট্রপতির যদি ন্যূনতম মানবতাবোধ বা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতো তাহলে নিদেনপক্ষে তিনি মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের সাথে কথা বলতেন। তা তিনি করেন নি।
বয়সের ভারে ভোতা হয়ে আসা তার চেতনাবোধে এ ধরনের কোন প্রশ্নেরই উদয় হয় নি। তিনি খুনিকে ক্ষমা করেছেন।
খুন করা, খুনে সহযোগিতা করা যদি অন্যায় হয় তাহলে খুনিকে এভাবে ক্ষমা করাটাও বড় ধরনের অন্যায়। রাষ্ট্রপতি অন্যায় করেছেন।
আজ বিবিসি থেকে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি তার সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে এ ক্ষমা প্রদর্শন করেছেন।
এটা বেআইনি কিছু হয়নি।
শুনে আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করলো- এভাবে যদি একটি সংবিধানকে অপব্যবহার করা হয় তাহলে এ ধরনের সংবিধান ছুড়ে ফেলারই যোগ্য। যে সংবিধান অধিকারের নামে অন্যের অধিকার হরণের সুযোগ সৃষ্টি করে, আইনের শাসনের নামে আইনের অপপ্রয়োগকে উসকে দেয়- তা হাতে ধরার যোগ্য নয়। তা ছুড়ে ফেলারই যোগ্য।
আইনমন্ত্রী নিশ্চয়ই এতোটা অজ্ঞ নন যে তিনি জানেন না কোন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি এ ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।
একটি ভালো উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে যে সুযোগ রাখা হয়েছে তার সবচেয়ে কলংকজনক ব্যবহার করলেন রাষ্ট্রপতি। তাহলে এ ধরনের সংবিধান দিয়ে কী লাভ? কার অধিকার সুরক্ষা দেবে এ সংবিধান?
শফিক আহমেদের কথা শুনে তাই একটি ছুড়ে ফেলে দেয়া সংবিধানের ছবি আবার মনের পর্দায় আকার চেষ্টা করলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।