গ্রামীণ ব্যাংক বরাবর শেয়ারহোল্ডারের লভ্যাংশ দিয়ে এসেছে। প্রত্যেকে সদস্যকে তার লভ্যাংশ প্রতি বছর পৌঁছে দেয়া হয়,” গ্রামীণ ব্যাংক তার সদস্যদের কোনো লভ্যাংশ দেয় না মর্মে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে এ কথা জানালেন ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নূরজাহান বেগম।
রোববার দেয়া এক বিবৃতিতে নুরজাহান বেগম বলেন, এপর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংক সরকারকে এক কোটি ২০ লক্ষ টাকার শেয়ারের বিনিময়ে দু’কোটি ৫২ লাখ টাকা, সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংককে প্রত্যেকে ৩০ লাখ টাকার শেয়ারের বিনিময়ে ৬৩ লাখ টাকা লভ্যাংশ দেয়া হয়েছে।
আর সদস্যরা ৫৫ কোটি টাকার শেয়ারের বিনিময়ে ৭৭ কোটি টাকা লভ্যাংশ পেয়েছেন (সদস্যরা তুলনামূলকভাবে কম পেয়েছেন, যেহেতু ২০০৬ সালের পরবর্তী সময়ে যারা শেয়ার কিনেছেন তারা অপেক্ষাকৃত কম সময়ের মেয়াদে লভ্যাংশ পেয়েছেন)। প্রত্যেক সদস্যকে প্রতি বছর লভ্যাংশ তার কাছে পৌছে দেয়া হয়।
গ্রামীণ ব্যাংকের মালিকানার হিসাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রত্যেক সদস্য যে কোনো সময় ১০০ টাকা দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শেয়ার কিনতে পারেন। ৮৪ লাখ ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে ৫৫ লাখ ঋণ গ্রহীতা এ পর্যন্ত শেয়ার কিনেছেন। এর মাধ্যমে তারা ৫৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনে ৯৭ শতাংশ মূলধনের মালিক হয়েছেন। সরকার ও সরকারি ব্যাংক ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার শেয়ার কিনে ৩ শতাংশ শেয়ারের মালিক।
নুরজাহান বেগম আরো বলেন, “আইন মন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদের বক্তব্য শুনে সংবাদ মাধ্যমের পাঠকদের মনে ভুল ধারণার সৃষ্টি হতে পারে।
একারণে আমি প্রকৃত তথ্য তুলে ধরছি। আমি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রথম দিন থেকে, যেদিন ১৯৭৬ সালে প্রফেসর ইউনূস জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে প্রথম জোবরা গ্রামে ঋণ দিয়েছিলেন, সেদিন থেকে ১৪ই আগস্ট, ২০১১ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩৫ বছর ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পূর্বে তার প্রারম্ভিক কার্যক্রমে এবং গ্রামীণ ব্যাংকে কর্মরত ছিলাম। প্রফেসর ইউনূস যেদিন পদত্যাগ করেছেন সেদিন তার হাত থেকে আমি ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলাম এবং গত বছর ওই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেছি। ”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে বাৎসরিক হিসাব অনুমোদন করার সময় বছরের অর্জিত মুনাফা কীভাবে বন্টন করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মুনাফার কী পরিমাণ অংশ লভ্যাংশ হিসেবে শেয়ার মালিকদের কাছে বন্টন করা হবে সে বিষয়ে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়।
শুরু থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের মুনাফার পরিমাণ লভ্যাংশ দেয়ার মত পর্যাপ্ত না থাকায় লভ্যাংশ দেয়া হয়নি। ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সরকারের দেয়া শর্ত পূরণের জন্য লভ্যাংশ দেয়া হয় নি।
লভ্যাংশ না দিয়ে সব মুনাফা পুনর্বাসন তহবিলে দেয়ার শর্তে সরকার গ্রামীণ ব্যাংককে আয়কর অব্যাহতি দেয়, এজন্য বোর্ড লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ২০০৬ সাল থেকে সরকারের এই শর্ত রহিত হওয়ার পর বোর্ড ২০০৬ সালে ১০০%, ২০০৭ সালে ২০% এবং ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ সালে প্রতিবছর ৩০% হারে লভ্যাংশ দিয়েছে। মুনাফার পরিমাণ কম হলে গ্রামীণ ব্যাংক যাতে একই হারে মুনাফা বন্টন করতে পারে সেজন্য ‘মুনাফা সমতা আনয়ন তহবিল’ গঠন করেছে।
২০১০ পর্যন্ত এই তহবিলে ৬৯ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা জমা আছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।