হাবু ভাইকে নিয়ে এই এক সমস্যা ! নিজেই ফোন করে বললো, খুব জরুরী একটা কথা আছে, আমিও খুব ব্যস্ত ছিলাম অফিসের কাজে তাই বললাম, একটু পরে আমিই ফোন দিবো । অথচ এখন তার খবর নেই । দুপুরের দিকে একবার রিং হলো কিন্তু রিসিভ করলো না, তারপর থেকে মোবাইল বন্ধ তো বন্ধই ! এখন সন্ধ্যা হয়ে এলো প্রায় । তাই কি আর করা সন্ধ্যার পরে মটর সাইকেল নিয়ে নিজেই রওয়ানা হলাম তার উদ্দেশ্যে ।
হাবু ভাইয়ের বাসার কাছাকাছি যেতেই কারেন্ট চলে গেলো ।
এটা অবশ্য নতুন কোনো ঘটনা না, বরং প্রতিদিনের নিয়মিত বিষয় । বাসার সামনে মটর সাইকেল রেখে দরজায় নক করলাম। হাবু ভাই নিজেই দরজা খুলে দিলেন। ভেতরে ঢুকতে যাবো, অমনি হাবু ভাই হাহাকার করে উঠলেন, আরে! হেলমেট কই ? – বললাম, মটর সাইকেলের সাথেই আছে ।
ঃ হেলমেটটা সাথে নিয়ে আয় ।
ঃ অসুবিধা নাই, ওখানেই থাকুক।
ঃ কেউ নিয়ে যাবে তো!
ঃ না, নিবে না। চলেন ভিতরে যাই।
বুঝতে পারলাম হাবু ভাই ঠিক ভরসা পাচ্ছে না। তার চোখে-মুখে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের ছাপ।
তার হাত ধরে এক প্রকার জোর করেই বাড়ির ভেতরে ঢুকলাম। বললাম, আপনার জরুরী কথা পরে শুনবো। তার আগে বলেন, আপনার মোবাইল ফোনের কি হয়েছে? ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, চুরি হয়ে গেছে । আমিও সে রকমই একটা কিছু ধারনা করেছিলাম।
ঃ কি ভাবে ঘটলো এটা?
ঃ তোর সাথে কথা বলার পর শুয়ে শুয়ে খবরের কাগজ পড়ছিলাম।
কোন ফাঁকে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম ঠিক খেয়াল নেই। সিঁথানের কাছেই ছিলো মোবাইলটা । ঘুম ভাঙ্গার পরে দেখি নেই । নেই নেই নেই তো নেই! চিন্তা করে দেখ! দিন দুপুরে মাথার কাছ থেকে মোবাইলটা নিয়ে গেলো! এটা কোনো কথা হলো?
ঃ বাড়িতে কেউ ছিলো না?
ঃ ছিলো তো সবাই। ভেতরে কেউ ঢোকে নি।
জানালা খোলা ছিলো, ওখান দিয়েই কোনো ভাবে নিয়ে গেছে হারামিটা!
ঃ থানায় জানিয়েছেন?
ঃ জানিয়ে লাভ কি? থানায় জানিয়ে কিছু হবে বলে মনে হয় না, উলটো আরো হয়রানি হতে হবে।
ঃ তাহলে কি করবেন বলে চিন্তা করেছেন?
ঃ করবো আর কি! বিকেলে নতুন আর একটা সীমকার্ড তুলেছি। এখন একটা পুরাতন সেট কিনে নিবো। হাজার বারোশ টাকায় নাকি খুব ভালো ভালো সেট পাওয়া যায়!
হাবু ভাইয়ের জরুরী কথাটা শুনতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগলো। এরই মধ্যে কারেন্ট চলে এসেছে।
আমাকে মটর সাইকেল পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন তিনি। খেয়াল করলাম, দরজা খুলেই তিনি মটর সাইকেলের দিকে তাকালেন। হেলমেটটা ঠিকঠাক মতো আছে দেখে একটু অবাকও হলেন। মুখ ফুটে তাই বেরিয়ে এলো, আশ্চর্য! দিন দুপুরে শিহরের কাছ থেকে মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়! আর সন্ধ্যার অন্ধকারে রাস্তার পাশে থাকার পরেও হেলমেটটা কেউ ছুঁয়েও দেখলো না! কারণটা কি?
ঃ কারণটা খুব সহজ। -- মাথায় হেলমেট পড়তে পড়তে বললাম, আমরা যারা মটর সাইকেল চালাই তারা কখনো পুরনো হেলমেট কিনি না।
পরিচিত কারো কাছ থেকে হয়তো এমনি এমনি চেয়ে নেই, কিন্তু অচেনা কারো কাছ থেকে কখনোই কিনি না। পুরনো হেলমেট কিনি না বলেই আমাদের হেলমেট চুরি হয় না। পুরনো মোবাইল সেট কেনা বন্ধ করে দেন, মোবাইল সেট চুরিও বন্ধ হয়ে যাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।