আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

।।--দ্যা লাইফ ইন অ্যান ইজেল--।।

যতোবার আমি শান্তি খুঁজেছি, ঠিক ততোবার আমার মাথায় শুধু একটি চিন্তাই এসেছে। সেটা হচ্ছে একটা ড্রিল মেশিন দিয়ে মাথার খুলিটা ফুটো করে দেওয়ার চিন্তা। -"বিরক্ত লাগছে। " -"হম। " -"এখন কি করবো?" -"তোমার বিরক্তির প্রহর শুরু হয়েছে মাত্র।

একটা শতাব্দীও কেটে যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবে নাও। ' -"প্রচণ্ড বিরক্ত লাগছে। " -"তো কি করতে চাও?" -"একটা আঙুল কেটে ফেলি?" -"ফেলো। যন্ত্রণা তোমার বিরক্তিকে প্রতিস্থাপিত করুক।

" -"কোনটা কাটবো?" -"নামহীনটা কাটো। অনামিকা। এটা নাকি আবার রিং ফিঙ্গার!! হা হা হা। " -"নাহ ,থাক। কাটবোনা।

" -"কেন? ভয় পাচ্ছো?" -"নাহ। কিন্তু একটা সময়ে বড্ড ছেলেমানুষি মনে হবে কাটাকুটিকে। অপরিণত বয়সের কিশোর কিশোরীরা প্রেমে ব্যর্থ হলে এগুলো করে। " -"বড়ই অদ্ভুত তো!! আর পরিনতরা কি করে? ভালোবাসার কাউকে নির্দ্বিধায় চলে যেতে দেয়?" -"কি জানি, হয়তো। " -"তোমার যন্ত্রণা দেখতে খুব ইচ্ছা করছে।

দেখাবে?" -"ঠিক আছে , কেটেই ফেলি তাহলে, কি বল?" -"হ্যা, ফেলো। " -"কেটেছি, দেখো। " -"কাটার সাথে সাথে দর দর করে তো কিছু তরল পদার্থ বের হল। যন্ত্রণা কোথায়?" -"ওই তো , দেখতে পাচ্ছোনা? গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে ছোপ ছোপ যন্ত্রণা? দেখেছো কি সুন্দর?" -"হম, অবিশ্বাস্য!!! আমি আজ প্রথম শিখলাম। " -"আসো, তবে আজ তোমাকে রঙ চেনাই।

" -"রঙ, রঙ। রঙ কি?" -"রঙ একটা ভাষা। শিখতে চাও?" -"চাই, চাই। আমি শিখতে চাই। তোমাদের হিসেবে আমি এখনো শিশু।

এ চাইল্ড মাস্ট লারন। " -"এই যে দেখো এটা, এটার নাম সবুজ। " -"সবুজ মানে কি?" -"সবুজ মানে তারুন্য, সজীবতা। " -"তোমার বয়স না আজ ২৪ হলো ?" -"হ্যাঁ। " -"তাহলে তোমার মাঝে সবুজ দেখতে পাচ্ছি না কেন?" -"নষ্ট হয়ে গেছে।

" -"সবুজ ভালো লাগেনি। এটা কি?" -"ও, এটা? এটার নাম আসমানি। " -"আসমানি!! কি অদ্ভুত নাম!! এটা কিসের রঙ?" -"আমি বলি উদারতা, কেউ বলে ভালবাসা। " -"কেন? কেন তুমি উদারতা ভাবো এটাকে?" -"উদারতা আকাশের মতোই বিস্তীর্ণ, বিশাল। সীমানা নেই যে তার, তাই তো সে আকাশি।

" -"আর ভালবাসা?" -"কি জানি, ভালবাসা কি আর সীমাহীন হয়? ভালোবাসার তো শেষ আছে। " -"ভালোবাসার জন্ম আছে, ভালোবাসার মৃত্যু আছে। ভালোবাসার কি প্রান আছে?" -"হা হা হা। হাসালে দেখছি। নাহ, অনুভূতিদের প্রান থাকে না।

অনুভুতিরা প্রানের গভীরে বেচে থাকে নিশ্চুপে। পরাশ্রয়ী। হা হা। " -"তুমি হাসছো কেন? এটা কি আনন্দ? আনন্দের রঙ কি?" -"আনন্দের আলাদা কোন রঙ নেই। আনন্দ লুকিয়ে থাকে সব রঙের ভিতরেই।

তাকে খুজে বের করে আনতে হয়। " -"তুমি পারো? খুজতে?" -"নাহ, বিরক্ত লাগে। " -"হম। এইযে গাঢ় জমাট বাধা এক টুকরো অন্ধকারের মতো রঙ দেখতে পাচ্ছি, কি এটা? এটাই কি কালো?" -"হ্যা, তুমি ঠিকই ধরেছো। এটাই কালো।

কালো কিসের রঙ জানো?" -"কিসের?" -"আভিজাত্যের,দম্ভের রঙ। অবজ্ঞার প্রভু কালো। " "তাই!!" চিৎকার করে ওঠে সে। "আমি কালো হবো। আমি কালো ভালবাসি!! আসো, শুধু কালোকে রেখে আস্তে আস্তে সব রঙ সরিয়ে ফেলি।

" "ধুর বোকা। তাহলে স্বপ্নও যে মুছে যাবে জগত থেকে। রঙ বেরঙের স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচবে?" "হম। " হতাশা আচ্ছন্ন করে তাকে। -"আসো, এটা দেখো।

এটা বৈরাগ্য এর রঙ। " -"বৈরাগ্য? মানে বিরাগ? কি বিচ্ছিরি!!! কি এটা?" -"এটা হলুদ। " -"ইশ! দেখেছো কি কটকটে রঙ? একেবারে চোখে এসে লাগে। এটার বিকর্ষণ ক্ষমতা এতো প্রবল কেন? ঠিক যেন সূর্যের মতো!!" -"হ্যা, সূর্য। গভীর বিরাগ সূর্যের।

সূর্য অনেক একা। একটা সূর্য আরেকটা সূর্যের কাছ থেকে শুধু দুরেই সরে যায়, কাছে আর আসেনা। " -"তোমার মাঝেও তো কিছু হলুদ দেখতে পাচ্ছি। " অবজ্ঞাভরা কণ্ঠে জবাব দেয় সে। "হলুদ ছাড়া তোমার শরীরের বাকি অংশগুলো সব একই রঙের।

এই রঙটার সাথে আসমানি রঙটার অনেক মিল। তবে এটা অনেক গাঢ়। এটার নাম কি?" -"এটার নাম নীল। গাঢ় নীল। " -"বাহ, সুন্দর তো।

" -"হ্যা, সুন্দর। কষ্টরা সুন্দর। সুন্দর এবং গভীর। সমুদ্রের মতোই গভীর। নীল।

কষ্টের রঙ নীল। " -"নীল এর সাথে হলুদ এ তোমাকে বেমানান লাগছে। " -"আমি জানি। তবে এটা সত্যি, আমার মাঝে দুটি রঙ একসাথে অবস্থান করতে পারবে না। যেকোনো একটা থাকবে, একটা বিলীন হবে।

আমি তাই অপেক্ষা করে আছি। " -"ইশ! তোমার আঙ্গুল থেকে তরল পড়ে সারা মেঝে তো ভরে গেলো। এটারও তো রঙ আছে একটা। এই পৃথিবীতে আমি এই রঙটা অনেক দেখেছি, অনেক। অথচ তুমি এটাকে এড়িয়ে গেলে।

এটার কথা বললে না, কেন?" -"ওহ , লাল? এটা আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। কেন জানো?" -"কেন?" -"এটাতে সত্য আর মিথ্যা মিশানো। এটাতে মায়া মেশানো। এটাতে কামনা মেশানো। আমি তাদের আলাদা করতে পারিনা।

তখন আমার বড় অসহায় লাগে। লাল বিভ্রমের রঙ। মায়ার বিভ্রম, বিভ্রমের মায়া। আমার লাল ভালো লাগে না। " -"লাল এর মাঝে তাহলে আনন্দ নেই?" -"আছে।

আসো, খুজে বের করে দেখাই তোমাকে। " চুপ চুপ করে ভেজা জমে থাকা লাল রক্তের মাঝে গভীর আগ্রহে তারা আনন্দ খুজতে থাকে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.