undefined
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতকে পরিত্রাণ প্রাপ্ত ও সাহায্য প্রাপ্ত দলও বলা হয়। এ জামা‘আতের লোকদের পরস্পরের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও সামগ্রিকভাবে তাদের কিছু নিদর্শন আছে যা দিয়ে তাদেরকে চিহ্নিত করা যায়। নিম্নে তা বর্ণিত হলো:
১. আল্লাহ্র কিতাবের ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান: তাঁরা কুরআন তিলাওয়াত, অধ্যয়ন ও গবেষণার মধ্যদিয়ে এটির গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এমনিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসকে জেনে-বুঝে এবং সহীহ হাদীসকে দুর্বল হাদীস হতে চিহ্নিত করে হাদীসের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। (এর কারণ হলো, কুরআন ও সুন্নাহই তাদের জ্ঞানের মুল উৎস) এছাড়া তাঁরা জ্ঞান অর্জন করে তা আমলে পরিণত করেন।
২. পরিপূর্ণভাবে দ্বীনের মধ্যে প্রবেশ করা: পুরো কু্রআনের উপর বিশ্বাস করা। সুতরাং তাঁরা কুরআনে আলোচিত ভাল ওয়াদা সম্পর্কিত আয়াতসমূহ এবং শাস্তির হুমকি সংক্রান্ত আয়াতসমূহের উপর ঈমান আনে। যেমনিভাবে তারা আল্লাহর গুণাগুণ সাব্যস্ত আয়াতসমূহে ঈমান ও যে সমস্ত গুণাগুণ থেকে আল্লাহ্ পবিত্র সেগুলো যে সব আয়াতে বর্ণিত হয়েছে তাতেও ঈমান রাখেন। আর তারা তারা সমন্বয় সাধন করেন আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত তাকদীরে ঈমান আনয়নের পাশাপাশি বান্দার জন্য ইচ্ছা, চাওয়া ও কার্যক্ষমতা সাব্যস্ত করেন। অনুরূপভাবে তারা সমন্বয় বজায় রাখেন ইলম ও ইবাদাতের মধ্যে, শক্তি ও রহমতের মধ্যে, উপায় অবলম্বন করে কাজ করা ও পরহেযগারী করে দুনিয়াবিমুখতার মধ্যে।
৩. অনুসরণ করা ও বিদ‘আত পরিত্যাগ করা: তারা অনুসরণ করেন এবং বিদ‘আতকে পরিহার করেন, সংঘবদ্ধ জীবন যাপন করেন এবং দ্বীনের মধ্যে বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টিকারী সকল পথ বর্জন করেন।
৪. হেদায়াতের ন্যায়পরায়ণ ইমামদের অনুকরণ, অনুসরণ: তাঁরা হেদায়াত পাওয়ার জন্য সাহাবা এবং যারা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন, যারা ছিলেন ইলম, আমল ও দাওয়াতের ক্ষেত্রে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব এমন হেদায়েতের ধারক ও বাহক ইমামদের পথ অনুসরণ করেন এবং যারা উক্ত ইমামদের বিরোধিতা করে তাদেরকে পরিহার করেন।
৫. তাঁরা মধ্যম পন্থা অবলম্বনকারী: অর্থাৎ আকীদা সংক্রান্ত বিষয়ে না তারা অতিরঞ্জিতকারীদের মত, না এ বিষয়কে তুচ্ছ ও অবজ্ঞা পোষণকারীদের মত। এভাবে সমস্ত কাজকর্ম এবং আচার ব্যবহারে তারা বাড়াবাড়ি ও কমতি এ দুয়ের মধ্যম পন্থা অবলম্বনকারী।
৬. সব সময় তারা মুসলিমদের সত্য পথে একত্রিত করতে সচেষ্ট থাকে।
আর তারা [আল্লাহ্র] তাওহীদ ও [রাসূলের] অনুসরণের উপর মুসলিমদের সকল কাতার একত্রিত করার জন্য এবং তাঁদের মাঝে অনৈক্যসৃষ্টিকারী সকল কিছুকে দূরীভূত করার জন্য সচেষ্ট থাকেন।
কাজেই দ্বীনের মৌলিক বিষয়গুলিতে মুসলিম উম্মার মধ্যে তাদের বৈশিষ্ট্য শুধু সুন্নাত ও সংঘবদ্ধ জীবন যাপনের মাধ্যমে। আর তারা শুধুমাত্র ইসলাম ও সুন্নাতের ভিত্তিতেই শত্রুতা বা বন্ধুত্ব করেন।
৭. তাঁদের আরো বৈশিষ্ট্য হলো-তাঁরা আল্লাহর পথে মানুষকে আহবান করেন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করেন। আল্লাহর পথে জিহাদ করেন।
দ্বীনকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য জন্য রাসূলের সুন্নাতকে জীবিত করেন, বিদ‘আতকে দূর করেন। আর তারা ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সকল পর্যায়ে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন।
৮. ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা: তাঁরা ব্যক্তিস্বার্থ ও গোষ্ঠিস্বার্থের চাইতে আল্লাহর অধিকারকে বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তারা না কারো ভালোবাসায় অতিরঞ্জিত করেন এবং না কারো দুশমনিতে সীমালঙ্গন করত: তাদের সাথে অশুভ আচরণ করেন এবং না কোন মহৎ ব্যক্তির মহত্বকে অস্বীকার করেন।
৯. জ্ঞান আহরনের মূল উৎস কুরআন সুন্নাহ হওয়ার কারণে তাদের চিন্তা-চেতনা এবং প্রত্যেক অবস্থানের মধ্যে সামঞ্জস্যতা থাকে, যদিও তাদের যুগ বা ভূখণ্ড ভিন্ন হউক।
১০. সকল মানুষের সাথে অনুগ্রহ, দয়া এবং উত্তম আচরণ করা তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
১১. আল্লাহ, তাঁর কিতাব-আলকুরআন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, মুসলিমদের নেতাগণ এবং সাধারণ মুসলিমদের জন্য নসীহত করাও তাদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য।
১২. মুসলিমদের সমস্যাদির গুরুত্ব দেওয়া এবং তাঁদেরকে সাহায্য করা এবং তাঁদের অধিকার সংরক্ষণ করা এবং তাঁদেরকে কষ্ট দেয়া হতে বিরত থাকাও তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আমার ফেসবুক লিংক। https://www.facebook.com/shahriar.hasan.393
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।