সামহোয়্যারইন ব্লগে নিয়মিত লেখার সময় না পেলেও পড়া হয় নিয়মিত। সামহোয়ারইন নিঃসন্দেহে বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারের সবচে জনপ্রিয় ব্লগ। জাতীয় গুরুত্বপূর্ন ইস্যুতে সামহোয়ারইন এর ব্লগাররা জনমত গড়ে তুলতে সবসময় অনবদ্য ভুমিকা রেখে চলেছে।
ঢাবি শিক্ষিকা রুমানা ম্যাডাম চরম বর্বর পারিবারিক নির্যাতনের স্বীকার। এই ইস্যুতেও সামুর ব্লগাররা গুরুত্বপূর্ণ প্রসংশনীয় ভুমিকা রেখেছে।
আমাদের সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও যে কয়েকটি বিষয় আমাদের পৃথিবীর অন্যসকল দেশের চেয়ে অনেক অনেক পিছিয়ে রেখেছে সেগুলো হচ্ছে, দুর্নীতি আর পারিবারিক (বিশেষত নারী) নির্যাতন। এই সকল সামাজিক রোগের পেছনে কারণ অবশ্যই একটি নয়, একাধিক, ক্ষেত্রবিশেষে শতাধিক। কোন কারণটি মূখ্য আর কোন কারণটি গৌন, সেটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু তার পরও মূল কারণগুলো আইডেন্টিফাই করা সম্ভব।
পারিবারিক নির্যাতনের একটি ট্রেন্ড হচ্ছে, এর স্বীকার মূলত নারীরা, অতঃপর শিশুরা।
পুরুষরাও অনেক ক্ষেত্রেই পারিবারিক নির্যাতনের স্বীকার। এর অন্যতম কারণ হিসেবে পুরুষতান্ত্রিকতাকে দায়ী করাই যায়। রুমানার ঘটনার পেছনে পুরুষতান্ত্রিকতার দায় কতটুকু, তার স্বামী(?) সাঈদের অসুস্থ মানসিকতা/হতাশার দায় কতটুকু, আর তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের দায় কতটুকু তা নিয়েও বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু এগুলোর কোনটার প্রভাব ছিল না তা আমরা হলফ করে বলতে পারি না।
পুরুষতান্ত্রিকতা নিয়ে শিক্ষিত সমাজের মধ্যেও কিছু ভুল ধারণা কাজ করে।
পুরুষতান্ত্রিকতার বিরোধীতা করা মানেই পুরুষের বিরোধীতা করা নয়। পুরুষতান্ত্রিকতাকে দায়ী করা মানেই পুরুষদের দায়ী করা নয়। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে জানি, মেয়েরা অনেক ক্ষেত্রে এভারেজ পুরুষদের চেয়ে ঢের বেশী পুরুষতান্ত্রিক। পুরুষমাত্রই পুরুষতান্ত্রিক নয়, আবার নারীরা পুরুষতান্ত্রিক হতে পারে না, তাও নয়। যখন কোন মা তার ছেলে সন্তানকে সবচে ভালো খাবারটা তুলে দেয়, মেয়েকে বঞ্চিত করে, তখন সেও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বশবর্তী।
যখন কোন শাশুড়ি তার শিক্ষিত পুত্রবধুকে কর্মজীবি হতে বাঁধা প্রদান করে শুধুমাত্র সে মেয়ে বলে, তখন সে নিজেও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা প্রদর্শন করলো। যখন একজন হাসান সাঈদ স্ত্রীর সাফল্যে খুশি না হয়ে বরং ঈর্ষা অনুভব করে, হতাশাক্রান্ত হয় এই ভেবে যে, তার স্ত্রী নারী হয়েও তার, অর্থাৎ পুরুষের চেয়ে সফল হয়ে গেল; তখন সেও পুরুষতান্ত্রিকতায় আক্রান্ত। পুরুষতান্ত্রিকতা কোন কাল্পনিক বিষয় বা "মিডিয়ার সৃষ্টি" নয়, সম্পূর্ণ বাস্তব বিষয়, যা আমরা আমাদের চারিদিকের বায়ূমন্ডলের মত প্রতিনিয়ত অনুভব করি।
অন্যান্য পোস্টের সাথে স্টীকি পোস্টের পার্থক্য হচ্ছে, স্টীকি পোস্ট ব্লগ কর্তৃপক্ষের মনোভাব ব্যাক্ত করে। ব্লগার মানবীর একটি চমৎকার পোস্ট স্টীকি করে সামহোয়ারইন কর্তৃপক্ষ পারিবারিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাদের সদিচ্ছা প্রকাশ করেছিল।
ঠিক তার বিপরীত কাজটি করলো, 'কলমের খোঁচায়' পুরুষতন্ত্রের মত একটি প্রতিষ্ঠিত, চরম প্রভাবশালী সামাজিক তন্ত্রকে অস্বীকারকারী একটি পোস্টকে স্টীকি করে।
ব্লগে লেখার সময় না পেলেও প্রায় নিয়মিতই ব্লগ পড়া হয়। স্টীকি পোস্টটি পড়ে বিবেকের দায় হতেই আর নিঃশ্চুপ থাকতে পারলাম না। ব্লগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, কোন পোস্ট স্টীকি করা হবে সেটা নির্ধারণের দায়িত্ব কি কোন শিক্ষিত এবং নিজের সমাজ সম্পর্কে ন্যুনতম জ্ঞান সম্পন্ন কাউকে দেয়া যায় না? আমার বক্তব্য উদ্ধত মনে হলে দুঃখিত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।