আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রিয় কবিতা সমূহঃ ( প্রিয় স্বদেশ, প্রিয়তমা মাতৃভূমি, প্রিয় বাংলা ভাষা আমার)

আমি তোমাকে এত বেশি স্বপ্ন দেখেছি যে তুমি তোমার বাস্তবতা হারিয়ে ফেলেছো...

১। বঙ্গভাষা -- মাইকেল মধুসূদন দত্ত হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন; - তা সবে, (অবোধ আমি!) অবহেলা করি, পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি। কাটাইনু বহু দিন সুখ পরিহরি। অনিদ্রায়, নিরাহারে সঁপি কায়, মনঃ, মজিনু বিফল তপে অবরেণ্যে বরি; - কেলিনু শৈবালে; ভুলি কমল-কানন! স্বপ্নে তব কুললক্ষ্মী কয়ে দিলা পরে - "ওরে বাছা, মাতৃকোষে রতনের রাজি, এ ভিখারী-দশা তবে কেন তোর আজি? যা ফিরি, অজ্ঞান তুই, যা রে ফিরি ঘরে!" পালিলাম আজ্ঞা সুখে; পাইলাম কালে মাতৃ-ভাষা-রূপে খনি, পূর্ণ মণিজালে। ২. অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ -------- জীবনানন্দ দাস, অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ, যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশী আজ চোখে দেখে তারা; যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই, প্রীতি নেই, করুণার আলোড়ন নেই পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।

যাদের গভীর আস্থা আছে আজও মানুষের প্রতি, এখনও যাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয় মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাহাদের হৃদয়। ৩. প্রশ্ন ----- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভগবান, তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে দয়াহীন সংসারে - তারা বলে গেল 'ক্ষমা করো সবে', বলে গেল 'ভালোবাসো - অন্তর হতে বিদ্বেষবিষ নাশো'। বরণীয় তারা, স্মরণীয় তারা, তবুও বাহির-দ্বারে আজি দূর্দিনে ফিরানু তাদের ব্যর্থ নমস্কারে। আমি যে দেখেছি গোপন হিংসা কপটরাত্রি-ছায়ে হেনেছে নিঃসহায়ে। আমি যে দেখেছি - প্রতিকারহীন, শক্তের অপরাধে বিচারের বাণী নীরব নিভৃতে কাঁদে।

আমি যে দেখিনু তরুণ বালক উন্মাদ হয়ে ছুটে কী যন্ত্রণায় মরেছে পাথরে নিস্ফল মাথা কুটে। । কন্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে, বাঁশি সংগীতহারা, অমাবস্যার কারা লুপ্ত করেছে আমার ভূবন দুঃস্বপ্নের তলে। তাই তো তোমায় শুধাই অশ্রুজলে - যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো, তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো? ৪. হুলিয়া ---- নির্মলেন্দু গুণ ............... ...... ..আমি কিছুই বলবো না৷ আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকা সারি সারি চোখের ভিতরে বাংলার বিভিন্ন ভবিষ্য়্ত্কে চেয়ে চেয়ে দেখবো৷ উত্কন্ঠিত চোখে চোখে নামবে কালো অন্ধকার, আমি চিত্কার করে কন্ঠ থেকে অক্ষম বাসনার জ্বালা মুছে নিয়ে বলবো: ‘আমি এসবের কিছুই জানি না, আমি এসবের কিছুই বুঝি না৷’ ৫. শিল্প ------জয় গোস্বামী জমি কেড়ে নেওটাই কাজ ঘর ছাড়া করাটাই কাজ আমাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়াও, তারপর তৈরি করো আমাদেরই বুকের উপরে উঁচু শিল্প, উদ্ধত সমাজ | সঙ্গে কিন্তু পুলিশকেও চাই নাহলে কি করে ছলে ব’লে আমার হাড়গোড় ভাঙবে, ভাই! গণতন্ত্র আজ থেকে এটাই গণতন্ত্র আজ থেকে এটাই | ৬. বাংলার গা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে ----------জয় গোস্বামী .…না, না, না, না, না— না বলে চিত্কার করছে গাছ না বলে চিত্কার করছে এই গ্রীষ্ম দুপুরের হাওয়া না বলে চিত্কার করছে পিঠে লাশ বয়ে নিয়ে চলা ভ্যান গাড়ি আর আমরা শহরের কয়েকজন গম্ভীর মানুষ ভেবে দেখছি না বলার ভাষারীতি ঠিক ছিল কিনা তাই নিয়ে আমরা কি বিচারে বসতে পারি? ৭. বিদ্রোহের গান ----- সুকান্ত ভট্টাচার্য বেজে উঠল কি সময়ের ঘড়ি? এসো তবে আজ বিদ্রোহ করি, আমরা সবাই যে যার প্রহরী উঠুক ডাক। উঠুক তুফান মাটিতে পাহাড়ে জ্বলুক আগুন গরিবের হাড়ে কোটি করাঘাত পৌঁছোক দ্বারে ভীরুরা থাক।

মানবো না বাধা, মানবো না ক্ষতি, চোখে যুদ্ধের দৃঢ় সম্মতি রুখবে কে আর এ অগ্রগতি, সাধ্য কার? ৮. কান্ডারী হুশিয়ার! ------কাজী নজরুল ইসলাম দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীথে, যাত্রীরা হুশিয়ার! দুলিতেছে তরি, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ, ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ? কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ। এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার। তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান! যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান। ফেনাইয়া উঠে বঞ্চিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান, ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার। অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরন কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি পন।

হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরন কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তি পন। হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? কান্ডারী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার গিরি সংকট, ভীরু যাত্রীরা গুরু গরজায় বাজ, পশ্চাৎ-পথ-যাত্রীর মনে সন্দেহ জাগে আজ! কান্ডারী! তুমি ভুলিবে কি পথ? ত্যজিবে কি পথ-মাঝ? করে হানাহানি, তবু চলো টানি, নিয়াছ যে মহাভার! কান্ডারী! তব সম্মুখে ঐ পলাশীর প্রান্তর, বাঙালীর খুনে লাল হল যেথা ক্লাইভের খঞ্জর! ঐ গঙ্গায় ডুবিয়াছে হায়, ভারতের দিবাকর! উদিবে সে রবি আমাদেরি খুনে রাঙিয়া পূনর্বার। ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান, আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন্ বলিদান আজি পরীক্ষা, জাতির অথবা জাতের করিবে ত্রাণ? দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, কান্ডারী হুশিয়ার!


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.