বাংলাদেশের রাজনীতি হলো একটা দু'মুখো সাপ, যে দিকে যাবেন সেদিক থেকেই কামড়াবে। আপনাদের জন্য আরো একটা মজার গোপন নথি প্রকাশ করলাম।
আমার প্রাইভেট পড়তে বা পড়াতে কখনোই ভালোলাগে না। জীবনে খুব কমই প্রাইভেট পড়েছি আর পড়িয়েছি। যা হয়েছে অনেকটা বাধ্য হয়েই।
হঠাৎ এক ছেলের বাবা-মা আমাকে ধরে বসলেন যে, তাদের ৪র্থ শ্রেনীর ছেলেটাকে আমার পড়াতেই হবে। অবশেষে না করতে পারলাম না। সন্ধায় গেলাম ছাত্রের বাসায়।
নাম কি?
বললো: অর্ণব।
সারাদিন কি কি করাহয়?
একদমে বলে ফেললো: সকালে ঘুমথেকে উঠে স্কুলে যাই, স্কুল থেকে এসে ঘুমাই, বিকেলে একটু খেলি, সন্ধা হলে পড়তে বসি।
ভেবে দেখলাম ভালো একটা রুটিনেই আছে, কিন্তু তার পরেও সে একই ক্লাসে ২বছর পড়ে আছে, আর কোন টিচারই নাকি তাকে এখন পর্যন্ত সেখান থেকে ঊদ্ধার করতে পারেনি বরং কোন শিক্ষকই তার সামনে বেশিদিন টিকতে পারেনি। যাইহোক, ঐদিন শুধু আলাপ আলোচনা করেই চলে আসলাম।
পরের দিন গেলাম প্রথাম থেকেই শুরু করলাম। পড়া শেষে কিছু হোম ওয়ার্ক দিয়ে চলে এলাম।
তার পরের দিন গেলাম দেখি তোমার হোম ওয়ার্ক দেখাও।
স্যার: করি নাই।
মাথাটা গরম হইয়া গেল!!!
তার পরে আবার বিষয়গুলো রিভিউ করে একটা কবিতা মুখস্ত করতে বললাম।
তার পরের দিন গেলাম...
কবিতাটা লেখ
কাগজ কলম নিল, তারপরে চুপচাপ বসে রইলো।
কি হলো লেখ
স্যার পারিনা
কেন পড়নি???
স্যার পড়ছি তো
তাহলে?
আবার চুপ
আচ্ছা কবিতাটা কাল দেখে দেখে লিখে রাখবে।
আচ্ছা স্যার।
পরের দিন গেলাম...
কবিতাটা লিখছো?
না স্যার
নিজের মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছা করছিল। আমি ছাত্র পেটানোদের দলের লোক নই, যদিও অর্ণবের বাবা মায়ের অনুমতি ছিলো। ভাবলাম পেটাতে তো পারবো না, আচ্ছা দশবার কান ধরে উঠবস করো।
আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে উঠবস করা শুরু করলো। এবং খুব আনন্দের সাথে কাজটা করে ফেললো।
আবার কিছু পড়া দিয়ে চলে এলাম।
পরের দিন আবার গেলাম...
দেখি হোমওয়ার্ক
স্যার করি নাই
আচ্ছা ২০বার কান ধরে উঠবস করো।
আজও একটা হাসি দিয়ে উঠবস করা শুরু করলো। এবং খুব আনন্দের সাথে কাজটা করে ফেললো।
ভাবলাম ঘটনা কি? জানতে চাইলাম কেমন লাগলো?
স্যার আমার কোন কষ্ট হয় না, স্কুলে ৫০বারও করছি।
এখন অনেক বেশি করতে পারি।
পরের দিন আবার গেলাম...
দেখি হোমওয়ার্ক
স্যার করি নাই
ভাবলাম আচ্ছা আজ একটু অন্য ধরনের শাস্তি দেই। বুক ডাউন দাও ৫টা। ঐ বয়সের ছেলের জন্য ৫টা খুব কম নয়। আর ওর স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো ছিলো তা বলা যাবে না।
তবে আজ হাসি না দিয়ে ৫টা বুক ডাউন দিয়ে দিল।
পরের দিন
পড়েছো?
না স্যার
বুক ডাউন দাও ১০টা।
আমার দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে ১০টা বুক ডাউন দিয়ে দিল।
ভেবে পাই না ঘটনা কি।
কিছুক্ষণ পরে অর্ণবের ছোট ভাই আসলো, ভাই অবস্থা দেখে সেও একটু হাসলো।
তার পরে আমাকে বললো: স্যার ভাইয়াকে এসব করিয়া লাভ নেই, আপনি গেলে ভাইয়া বুক ডাউন আর কান ধরে উঠবস প্রাকটিস্ করে!!!
কথা শুনে আমার মুখ থেকে আর কোন কথা বেরলো না। চুপচাপ পড়িয়ে চলে এলাম। মনে হলো একে মানুষ করা আমার দ্বারা হবে না। আর ঐ দিনই ছিলো আমার শেষ দিন। বেতনের টাকাটাও আনি নাই, কারন আমার মনে হইছে টাকার চাইতে এইখান থেকে উদ্ধারের বিষয়টা আমার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এভাবেই আমার শিক্ষক জীবনের সমাপ্তি ঘটলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।