অজান্তে কনকলতা আমরা যখন খুলনা থাকতাম, আমি খুলনা রোটারী স্কুলে স্ক্লাস ফাইভে পড়তাম। আমার মনে পড়ে, কোন কারনে মা আমাকে একটু বেশী বকা দিলেই আমার মনে হতো এ আমার আপন মা নন। আমাকে বুঝি তিনি এখন আর আদর করেন না। আবার কখনও ভাল কিছু করলেই যদি প্রশংসা করতেন তাহলেই আবার নিজেতে হারিয়ে যেতাম। মনে হতো আমি যেন কি একটা হয়ে গেছি।
এ অবস্থাটা শুধু যে স্ক্লাস ফাইভে থাকতেই হয়েছে তা নয়, আগে পরেও হয়েছে, কিন্তু ঐ স্ক্লাস ফাইভের বছর অর্থাৎ ১৯৮৬ সালে আমরা খূলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস এর কলোনীতে থাকতাম, পরিবেশটা আমার খুব ভাললাগতো তাই হয়তো আজ ঐ সময়টার কথাই আলাদাভাবে মনে পড়ছে।
আসলে এটা শুধু আমার নয়, এমনটা মনে হয় সবার ক্ষেত্রেই ঘটে। মানুষ মাত্রই আবেগপ্রবন। আবেগ থেকে আসলে বেগের উৎপত্তি হওয়ার কথা, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ঘটে উল্টো। আমার আবেগ আমার বেগকে ধ্বংস করে দেয়।
আমি আসলে এখন বেশ বুঝতে পারি যে, আমি আসলে পুরোটাই একটা আবগ তাড়িত মানুষ, যার জীবনের বেশীরভাগ সিদ্ধান্তেরই আসলে উৎপত্তিস্থল ছিল আমার আবেগ, আপাতদৃষ্টে যার বেশীরভাগই ভুল বলে প্রমানিত। অন্তত আমার আশেপাশের মানুষগুলো তাকে ভুলবলে প্রমান করতেই বেশী পছন্দ করে।
আমার এই অতিরিক্ত আবেগের ফলে একটা খুব খারাপ জিনিষ সৃষ্টি হয়েছে আমার ভেতর। আমি আসলে আমাকে তেমনভাবে প্রকাশ করতে পারি না। কে কি ভাববে, কে কি মনে করবে, এগুলো আমাকে খুব বেশী ভাবিয়ে তোলে, যার দরুন শেষ পর্যন্ত আমার কথাগুলো আমার মতো করে আর বলা হয়না।
আজকে আমার এই ব্লগেও লিখতে আমাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। আসলে এখানে যারা আসে তাদের ভাল লাগবে কি লাগবে না, এই সব ভেবেই আসলে লিখবো কিনা এব্যপারে সিদ্ধান্ত নিতে আমার বেশ দেরী হয়ে গেছে। নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে এই যে সংকোচ বা দ্বিধা, আমার মনে হয় এটাই একজন মানুষকে ধ্বংষ করার জন্য যথেষ্ট।
নিজেকে নিজের মতো করে প্রকাশ করাটা একজন মানুষের স্বাবলম্বী হওয়ার প্রথম ধাপ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।