অনুতাপ নিপীড়িত ব্যাথিত জনের শক্তিধরে অস্ত্রধারী শত সিপাহের
১। ১৯৭০ সালে নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড়ের সময় (ডিসেম্বরে ছিল নির্বাচন) অনেক মানুষ তাজউদ্দিন আহমেদের বাসায় আশ্রয় গ্রহণ করেন । এমন সময় তাঁর বাড়ির জানালায় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে একটা বুলবুলি পাখির মৃত্যু হয় । অন্ধকারে লুকিয়ে ক্রন্দনরত তাজউদ্দিন আহমেদকে তাঁর মেয়ে দেখে ফেলেন। ইহাহিয়ার বিরুদ্ধে সারাদিন আন্দোলনরত তাজউদ্দিন মেয়েকে কান্নাভেজা কন্ঠে বলেন, "আমার বাসায় এত মানুষের জায়গা হল, অথচ এই ছোট্ট বুলবুলি পাখিটার জায়গা হল না..."
২।
১৯৭১ সালে যখন ভারতে বসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এবং দেশের শাসনকার্য নিয়ে ব্যস্ত, তখনকার ঘটনা । On Time অফিসে আসা তাজউদ্দিন সাহেব এসে দেখলেন, তাঁর পিয়ন তখনো আসেনি । তিনি থিয়েটার রোডের পিয়নের সেই বাসায় চলে গেলেন । তাঁর অন্য এক কর্মচারী অফিসে এসে, তাঁকে না পেয়ে সেই পিয়নের বাসায় গেলেন । গিয়ে দেখেন, বাসায় আর কেউ নেই, শুধু প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন সাহেব জ্বরে আক্রান্ত পিয়নের মাথায় বদনা দিয়ে পানি ঢালছেন ।
(আজকের দিনে আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীদের কাছে এর সামান্য সহানুভূতিও কি আশা করতে পারি না ?)
৩। ১৯৭১ সালে যখন ভারতে বসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এবং দেশের শাসনকার্য নিয়ে ব্যস্ত, তখনকার ঘটনা । ডঃ আনিসুজ্জামান (আমরা অনেকেই তার লেখা বাংলা বই Inter-e পড়েছি) একদিন তাজউদ্দিন আহমেদের কাছে যান । তিনি গিয়ে দেখলেন, তাঁর চুল উস্কখুস্ক, চোখ লাল । বললেন, "আপনার শরীর খারাপ নাকি ?" তাজউদ্দিন সাহেব জবাব দিলেন, "গতরাতে শুতে যাওয়ার পর, হঠাত ঝড়ে আমার ঘরের জানালার একটা অংশ খুলে গেল, তখন মনে হল, এই ঝড়ে আমার ছেলেরা না খেয়ে না ঘুমিয়ে যদ্ধ করছে, আর আমি ঘুমাচ্ছি ? আমি রাতে আর ঘুমাতে পারি নাই..."
নি:সন্দেহে।
বাংলাদেশের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতে পারতো যদি তাজউদ্দিন আহমেদকে তাঁর ইচ্ছেমতো কাজ করতে দেয়ার সুযোগ দেয়া হতো।
জন্মদিনে মহান এই মানুষটির প্রতি অসীম শ্রদ্ধা । ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।