আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিঙ্গাপুর সন্দর্শন ০৪ - রুদ্ধশ্বাস এডভেঞ্চার

সহজ আলোয় দেখা... এম্যুজমেন্ট পার্কের এডভেঞ্চার রাইডগুলোর প্রতি বরাবরই খুব কৌতুহল এবং আগ্রহ কাজ করে আমার। গত এক বছরে এই শখটা মেটানোর সুযোগ পাওয়া গিয়েছে বেশ কয়েকবার। এগুলোর কিছু কিছু ছিল বেশ রোমাঞ্চকর, আর কিছু রাইড আছে যেগুলোর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গেলে ইংরেজি ‘go nuts’ বাগধারাটি ব্যবহার করা লাগে! সিঙ্গাপুরের ইউনিভার্সাল ষ্টুডিওতে বহু মজার রাইডের মাঝে “সহদোর রোলার কোস্টার” হচ্ছে অন্যতম, যেটা আসলে লাল আর নীল রং এর দু’টি সুদীর্ঘ রোলার কোস্টারের সমন্বয়। লালটি হচ্ছে “ছোট ভাই”, যেটা আসলে “বড় ভাই” নীল কোস্টারের প্রস্তুতি মূলক বলা যায়! লাল রোলার কোস্টারের অভিজ্ঞতা হজম করতে না করতেই উঠে পড়ি নীলটাতে, যেটার জন্যে প্রস্তুত ছিলাম না মোটেই! চোখের পলকে আকাশ থেকে পাতালে, ভয়াবহ সব বাঁক নিয়ে, বরফের কুয়াশার ভেতর দিয়ে, তীব্র হাওয়ার স্রোতে উড়তে ঊড়তে, উল্টা-সোজা,বাঁকা-তেড়া হয়ে চলতে চলতে আপনি পৃথিবির উপরে আছেন না নীচে আছেন তা নিয়ে ধন্ধে পড়ে যাবেন! রাইড শেষে নিজের “টাল-মাটাল” ভাবটা কাটতে সময় লাগে না রোলার কোস্টারের বাকি সহযাত্রীদের বিস্ফোরিত প্রতিক্রিয়া দেখে! সেন্তোসা আইল্যান্ডের “মেগাজিপ এডভেঞ্চার পার্ক” অনেকগুলি মজার রাইড নিয়ে বানানো। আমি গিয়ে প্রথমে উঠলাম “প্যারাজাম্প” নামক একটা রাইডে। এটা আসলে হলো, ৫০ ফিট উঁচু একটা টাওয়ার থেকে সরাসরি মাটিতে ঝাঁপিয়ে পড়া! টাওয়ারের ওপরে ওঠার পর ক্রুরা পোশাক পড়িয়ে দিলো আমাকে, তারপর বললো “লাফ দাও”। টাওয়ারের নীচের দিকে তাকিয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেলো! আমি ইতস্তত করছি দেখে একজন ক্রু নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে আলতো করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল :-( মাটিতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমার হৃদপিন্ড গলায় এসে আটকেনোর জোগাড়! গায়ের বিশেষ পোশাকের বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রশিটা মাটি স্পর্শ করার আগেই টান দিয়ে ধরলো আমাকে! ভাগ্যিস! এরপর উঠলাম মেগাজিপের মূল রাইডটিতে। এটা আর কিছুই না, প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বের দুইটা উঁচু টাওয়ারের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঝুলতে ঝুলতে, উড়তে উড়তে যাওয়া! ঝুলতে ঝুলতে, উড়তে উড়তে অত্যন্ত উঁচুমাপের দার্শনিক চিন্তা মাথায় ঘুরছিল – “পাখি হয়ে জন্মানোটা নেহায়েত মন্দ না!” তবে সবকিছু ছাপিয়ে সবচাইতে “ভয়াবহ” অভিজ্ঞতা হয়েছে ক্লার্কি’র “রিভার্স বাঞ্জি” রাইডে উঠতে গিয়ে! এটা হলো মাটি থেকে অভিযাত্রীকে গুলতির মতো করে আকাশের দিকে ছুঁড়ে মারা! শূন্যে ছিটকে পড়ে, ক্রিকেট বলের মতো উল্টাতে-পাল্টাতে, ঘুরতে ঘুরতে আমি আছি না গেছি এই চিন্তা হচ্ছিলো! সান্তনার কথা একটাই – এই রাইডটা খুব অল্পক্ষণের!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।