ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....
অন্য কোনো সম্পদ না থাকা সত্ত্বেও শুধু জনসংখ্যাকে ব্যবহার করে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করেছে হংকং ও সিঙ্গাপুর। একটি দেশের জন্য জনসংখ্যাকে সম্পদ বলা হয়, আবার কখনো বোঝা বলে গণ্য করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জন্য হংকং ও সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির উন্নয়ন এক রহস্য।
১৯৪০ সালে অনুন্নত হংকংয়ের রাস্তা দেখুন। এমন মানুষ টানা রিক্সা দিয়ে বোঝাই ছিলো
মানব সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতির ফলে ১৯৯৮ সালে হংকং সমুদ্রের বুকে মাটি ভরাট করে তৈরি করে হংকং ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট।
মানুষ হংকংয়ের সবচেয়ে বড় সম্পদ
১৯৮২ সালে হংকংয়ের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫.২ মিলিয়ন। ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত হংকংয়ের জনসংখ্যা খুব দ্রুত (প্রায় ৩০ শতাংশ হারে) বেড়েছে। হংকং এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে শুধু জন্মহার বৃদ্ধিই নয়, চীন ও ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইমিগ্রান্টরাও দায়ী। হংকংয়ের আয়তন প্রায় ১,০৬০ বর্গ কিলোমিটার। এর অধিকাংশ এলাকাই অনুর্বর পাহাড়ি এলাকা।
শুধু সংকীর্ণ উপত্যকা এবং সমভূমিতেই কৃষিকাজ হয়ে থাকে। এ এলাকাই হংকংয়ের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ।
হংকংয়ের জনগণের চাহিদা
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে হংকংয়ের বর্ধিত জনগণকে জায়গা দেয়ার জন্য নতুন এলাকায় নতুন শহর তৈরি করা হয়েছে। পুরনো ব্যবসা-বাণিজ্যভিত্তিক শহরগুলোকে বাড়ানো হয়েছে। সমুদ্রের বুকে মাটি ভরাট করে উদ্ধার করা হয়েছে কিছু এলাকা।
এভাবে সঠিক নীতির মাধ্যমে হংকং উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ ছাড়াই অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নাগরিকদের চাহিদা মেটাতে পেরেছে।
সিঙ্গাপুর
১৯ শতকে সিঙ্গাপুর অনুন্নত একটি মাছ ধরা কেন্দ্র ছিল। দেশটির সম্পদ খুবই কম ছিল এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান নিম্ন ছিল। কিন্তু পরে সিঙ্গাপুর সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়, সমুদ্র বন্দর এবং দেশটি মানব সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে উন্নতি লাভ করে। বর্তমানে সিঙ্গাপুরের মানুষের জীবনযাত্রা এশিয়ার মধ্যে চতুর্থ এবং বিশ্বের মধ্যে ২৫তম।
পৃথিবীর ২২তম ধনী দেশ সিংগাপুর। সিংগাপুরের ৮৩ শতাংশ মানুষ বাস করে হাউজিং এস্টেটে। মোনেকোর পর পৃথিবীর সবচেয়ে ঘন বিন্যস্ত জনসংখ্যার স্বাধীন দেশ হিসেবে সিঙ্গাপুর পরিচিত।
সিংগাপুরের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৪৮ লাখ। গত দুই দশক ধরে সিংগাপুরে জনসংখ্যা কমানোর জন্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি চালানো হলেও বর্তমানে এ দেশটির পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সিংগাপুরের ১৫ বছর বয়সের নিচে মাত্র ১৬% মানুষ রয়েছে (বাংলাদেশে এ হার প্রায় ৩৩%)। ২০০৬ সালে সিঙ্গাপুরে মহিলা প্রতি সন্তানের হার হচ্ছে ১.৩ (এ হার পৃথিবীর সবচেয়ে কম তিনটি দেশের একটি)। অর্থাৎ বর্তমানে এ দেশটির জনসংখ্যা কমছে। কোনো দেশের জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য এ হার ২.১ থাকা প্রয়োজন (বাংলাদেশে এ হার প্রায় ৩.১)। এ কারণে সিংগাপুর সরকার এখন তাদের জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।