আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যারা কিছু জানে না তারা দেশের বোঝা, কিন্তু যারা আংশিক জানেন তারা ক্ষতিকারক

ভালো লাগে স্বপ্নের মায়াজাল বুনতে এ যাবৎ যতবার ব্লগ লিখেছি আমার নিজের বিষয়ে লিখেছি। কিন্তু আজ একজন ব্লগারের ব্লগে ঢুকে আমি একটা বিষয়ে কথা না বলে পারলাম না। যেহেতু আমি এখনো নতুন তাই এখনো অন্যের ব্লগে মন্তব্য করার অনুমতি পাইনি, তাই এই বিকল্প ব্যবস্থা। অডং চাকমা নামক একজন জনৈক ব্লগারের একটি পোষ্ট পড়লে আপনারা বিষয়টি পরিস্কার হবেন। আমি তার লেখার লিংকটি এখানে দিলাম-http://www.somewhereinblog.net/blog/odong তার ব্লগের শিরোনাম-পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্তান মেনে নেয়নি।

এখন পত্রপত্রিকায় একটি নিয়মিত খবর ছাপা হচ্ছে- বাংলাদেশে অবস্থানরত আদিবাসীরা সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই। আমার প্রসঙ্গ একটু ভিন্ন খাতের। পূর্বে উল্লেখিত ব্লগারের ঐ পোষ্টে সর্বপ্রথম যিনি মন্তব্য করেছেন, অর্থাৎ ব্লগার সৈয়দ ইবনে রহমত-এর মন্তব্যের বীপরিতে কয়েকটি কথা বলতে চাচ্ছি। তিনি বলেছেন-চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় ৭১ সালে পাকিস্তানের দালালী করে, যুদ্ধের শেষ মুহুর্তে পাকিস্তান পালিয়ে যায় এবং আজ পর্যন্ত পাকিস্তানেই আছে। আমি তার এই ভুল ধারণার সংশোধন করতে চাই।

১৯৭১ সালে যখন সারা দেশ পাকিস্তান হানাদারদের নিষ্ঠুরতায় জব্দ, দেশের সর্বস্তরের মানুষ যখন প্রাণ ভয়ে অস্থির, পার্বত্য অঞ্চলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো। সেখানকার মানুষও অজানা আশংকায় দিন যাপন করছিলো। তবে তখন পার্বত্য অঞ্চল এখনকার থেকে আরো বেশি দূর্গম ছিলো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিলো না থাকার সমান। জনস্ংখ্যা ছিলো হাতে গোনা যায় এমন। পার্বত্য চট্টগ্রামের তৎকালীন রাজা ত্রিদিব রায় সে সময় ঐ অঞ্চলের অধীবাসীদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

একজন প্রধান হিসেবে তার সর্বপ্রথম কাজ ছিলো তার জনগোষ্ঠির যথাযত নিরাপত্তা বিধান করা। সেই লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে পার্শ্ববর্তী মুক্তিযোদ্ধাক্যাম্প এ যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে সহযোগীতা আহ্বান করেন। মুক্তিযোদ্ধারা তাকে সর্বোচ্চ সহযোগীতা প্রদানের আশ্বাস দিলে তিনি নিশ্চিন্ত মনে ফিরে আসেন। কিন্তু যেদিন পাকিস্তানীরা পার্বত্য অঞ্চলে অভিযান চালায় রাজা ত্রিদিব রায় বিভিন্ন ভাবে খবর পাঠালেও মুক্তিযোদ্ধাদের তরফ থেকে কোন বার্তা তিনি পান নি। হয়তো বা সুগম যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় মুক্তিযোদ্ধারা ঠিকসময় খবর পান নি।

রাজা তখন তার অনুগত প্রজাদের নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পাকিস্তানিদের সাথে সমঝোতা করে পাকিস্তানীদের এই শর্তে আশ্রয় দেন যে এর বিনিময়ে পাকিস্তানিরা তার অনুগত প্রজাদের অকারণ হত্যা থেকে বিরত থাকবে। সেই পরিস্থিতিতে একজন নেতা হিসেবে তিনি তার অনুগতদের নিরাপত্তা বিধান করাটাই বেশি গুরুত্বপুর্ণ বলে মনে করেছিলেন। তার ঐ সিদ্ধান্তের কারণে পার্বত্যবাসীরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলো। সে কারণে হয়তো তিনি ঐ সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য কখনো লজ্জিতবোধ করেন নি। তিনি তখন যা করেছিলেন তা তথাকথিত রাজাকারদের মত নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য করেন নি।

করেছিলেন সহজ সরল আদিবাসীদের জীবন রক্ষা করার জন্য। রাজাকাররা তো বাঙালী ধরে এনে এনে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছিলো। কিন্তু তিনিতো কোন গর্হিত কাজ করেন নি। তাহলে তাঁকে কোন বিবেচনায় পাকিস্তানের দালাল বলা হলো? তিনি নেতা হিসেবে তার অনুগতদের জীবন রক্ষার জন্য পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে অমন কাজ করেছিলেন, তারপরও তিনি সসম্মানে নিজ দেশ ত্যাগ করে ভিন দেশ পাকিস্তানে অবস্থান করছেন এবং প্রকৃত রাজাকারদের মতো বিভিন্ন অজুহাতে দেশে প্রবেশ করার পায়তারা করেন না। কারণ তিনি জানেন, কাজ টা তিনি ভালো মনে করলেও সেটা অবশ্যই অন্যায় হয়েছে ।

এই পোষ্ট টি অনেকের ভালো লাগতে পারে আবার বেশির ভাগেরই খারাপ লাগতে পারে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.