"জেগে উঠুক তারুন্য,জেগে উঠুক স্বপ্ন,জেগে উঠুক মনুষ্যত্ব.........." একটা পোস্টে নাস্তিকদের মহামিলন মেলা বসেছিল, সে মিলনমেলায় আস্তে করে কয়েকটা কথা বলছিলাম -
।
।
কথাগুলা এই রকম -
মোঃ আরিফ রায়হান মাহি বলেছেন: বাহ এই পোস্টে দেখি নাস্তিকদের এক মহা মিলনমেলা বসেছে। যাক এই অন্তত এক বিষয়ে কিছু সিনিয়র ব্লগার একটিভ হচ্ছেন। ভালই লাগছে।
পোস্টের এই বাইপ্রোডাক্টটা কিন্তু বেশ প্রশংসার দাবি রাখে।
অনেকেই ধর্মের অনুশা্সনের প্রয়োজন নেই বলে গলা ফাটিয়ে ফেলছে্ন, আমি হলফ করে বলতে পারি যারা এইসব কথা বলছেন তারা ধর্মের অনুশাসন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান রাখেন না।
নাস্তিকদের বা নাস্তিক্যবাদ নিয়ে কাউকে হেদায়েত দান করা আমার স্বভাববিরুদ্ধ, তার একটা কারন হল বেশিরভাগ নাস্তিকই আমার চেয়ে বেশি জ্ঞান রাখেন এ বিষয়ে, আর তাই কিছু কিছু নাস্তিককে প্রায়ই আমার শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছা করে।
আজকে কিছু বলি { কেউ মাইন্ড খাইলে খাইতে পারেন}
ক্যামেরাম্যান আঙ্কেল খুব সুন্দর করে একটা উদাহরন দিলেন। মূলত ধর্মের অনুশাসনের একটার ছায়ার প্রয়োজন আছে কিন্তু ধর্মের প্রয়োজন নাই, এটাই বুঝলাম উনার কথা থেকে।
ধর্মের প্রয়োজন আছে কি নাই সেটা অনেক পরের কথা। নাস্তিক ব্লগাররা সবাই হয়ত "মনা" শব্দটির সাথে পরিচিত। সুপ্রাচীনকাল থেকেই ধর্মের বিকাশ ঘটেছে আস্তে আস্তে যুগের সাথে মানুষের পরিবর্তনের সাথে বা সমাজের পরিবর্তনের সাথে এবং এক সময় এসে ধর্মের সাথে সাথে মানুষ এর পরিবর্তন হতে লাগল, সমাজ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব খানেই ধর্মের আধিপত্য বিস্তার লাভ করল। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে যে সভ্যতার গোড়াপত্তনে ধর্মের একটা বিশাল প্রভাব ছিল বা আছে। এখন সভ্যতা পরিবর্তন হয় ধর্মও পরিবর্তন হয়।
ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ইতিহাস ঘাটলেই সত্যটা বেরিয়ে আসবে। তার মানে সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অংশ হল ধর্ম। ধর্মকে বাদ দিয়ে সভ্যতার গোড়াপত্তন হয় কি করে? তাহলে অন্তত সভ্য থাকার জন্যে হলেও ধর্মের প্রয়োজন আছে। অবশ্য সবাই যুক্তিবাদী এবং বিচক্ষন হলে ধর্মের প্রয়োজন হবে না এমনটা নাস্তিকদের দাবি। তার মানে কি পৃথিবী এতদিন সব বেকুব মানুষের জন্য দিয়েছে? ( এ লাইনটা কিছুটা আপেক্ষিক কথা, তার জন্যে দুখিত)
উচ্চমার্গীয় চিন্তাচেতনাসম্পন্ন মানুষের জন্য ধর্ম লাগে না, একজন বললেন, এখন উচ্চমার্গীয় চিন্তা-চেতনার মাপকাঠিক তাহলে কি হবে।
আপনি যদি নিজেই নিজেকে উচ্চ মার্গীয় চিন্তা চেতনার লোক বলে ঘোষনা দিয়ে দেন তাহলে অন্য হয়ত অনেকেই (যারা একই পন্থায় স্ব-ঘোষিত উচ্চমার্গীয় চিন্তাক্ষম লোক) আপনাকে গন্ড মূর্খ ছাড়া কিছু বলবে না। ধরে নিলাম আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় যেসব অন্যায় আছে তা নিরূপনকারী লোকই উচ্চমার্গীয় চিন্তাক্ষম লোক। তার জন্য ধর্মের প্রয়োজন নাই। মেনে নিলাম। কিন্তু যে লোকটি এ জিনিসটি নিরুপন করতে পারে এবং এর বিরুদ্ধাচরন করতে চায় তার জন্য অবশ্যই ধর্মের প্রয়োজন আছে।
রনকৌশল বলে একটা শাস্ত্র আছে। সেটা একটা জ্ঞান, একটা বিদ্যা। যুদ্ধে জিততে হলে আপনার ভাল-মন্দ অন্তর বা এভারেজ থটের মানুষের প্রতি অবজ্ঞাময় উচ্চমার্গীয় চিন্তাক্ষম মস্তিষ্ক কোনই কাজে আসবে না। আপনাকে সেই রনকৌশলে পারদর্শি হতে হবে এবং এ জন্য আপনাকে এ শাস্ত্রের নিয়মিত চর্চা করতে হবে। ঠিক একইভাবে আপনি যদি ন্যায়-অন্যায়ের যুদ্ধে অবতীর্ন হতে চান তাহলে আপনাকেও ধর্ম নামক রনকৌশল এ পারদর্শি হতে হবে।
কারন প্রায় প্রতিটা ধর্মই যুগের পর যুগ পরিশোধিত হয়েছে এই ন্যায়-অন্যায়ের যুদ্ধে একটা নির্দিষ্ট মানদন্ড তৈরির জন্য { তাতে যে বাড়াবাড়ি হয়নি কোন কোন ক্ষেত্রে সেটা বলার অবকাশ নেই, তবে বাড়াবাড়িটি কিছু মৌ-লোভী টাইপ মানুষের জন্য হয়েছে, যারা যেকোন ধর্ম বা সমাজের জন্য কীটস্বরূপ} ( আর আপনি যদি আপনার উচ্চমার্গীয় চিন্তাক্ষম মস্তিষ্ক নিয়ে সিংহাসনে বসে এর ঐ ভুল, অমুক করা ঠিক হয় নাই এ ধরনের বিশ্লেষন করে দিন পার করতে চান সেটা আলাদা হিসাব)।
সকালবেলা দ্রুত ঘুম থেকে উঠলে আপনার প্রাত্যহিক জীবন আনন্দের ও সাফল্যময় হবে। সাধারন একটা কথা। কিন্তু এ সাধারন কথাটাই একসময় মানুষ চিন্তা করে বের করেছে এবং এক সময় তা কিছু ধর্মের চর্চার অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। আর সে চর্চার ফলেই আপনার উর্বর মস্তিষ্ক এ বিষয়টিকে এখন প্রগতিশীল চেতনা বলে ধরে নেয়।
তাহলে কি দাঁড়াল, সভ্যতা একটা ধর্ম এবং সার্বজনীন এই ধর্মের অনুসারী আমরা সবাই। পালনরীতির দৃষ্টিকোনে আমরা আস্তিকরা বিভিন্ন ধর্মালম্বী আর বিশ্বাসের দৃষ্টিকোন থেকে নাস্তিকরা আলাদা স্থানে।
একজন বললেন, ধর্মের বাহিরে থেকে শান্তিতে আছেন। ভাল কথা। তার ব্যক্তিগত জীবনে সে শান্তিতে থাকলেই তো ভাল।
তার জন্য কেন কষ্টকর ধর্মের বেড়ী পরানো? কিন্তু আমি যদি বলি, তার ধর্ম পালনের যোগ্যতা নেই বলে সে শান্তিতে আছে। গরুকে দিয়ে তো আপনি ঘোড়ার কাজ করাতে পারবেন না। গরুর ঘোড়ার ধর্ম পালনের যোগ্যতা নাই তাই সে গরু। দুটো আলাদা প্রানীতে তুলনা করা তো ঠিক হল না। সব মানুষের তো সমান যোগ্যতা থাকে না।
যেমন ধরেন অনেকি সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারে না। এটা কি? একটা অযোগ্যতা, অথচ সে ভাল করেই জানে সকালে ঘুম থেকে উঠলে তার দিনের কাজে একটা ভাল অগ্রগতি বা লাভ হবে, কিন্তু অযোগ্যতার(অযোগ্যতাটাই পরে অভ্যাস হয়) কারনে সে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে আর বলে সকালের দারুন ঘুমটা লোকে কেন যে মিস করে বুঝি না।
যাই হোক, নাস্তিকরা আস্তিক হবার জন্যে নাস্তিক হয় না। তাই এত কথা বলে কোন লাভ নাই। { যদি নাস্তিকরা এওমন বলত যে আমরা সত্য সন্ধান করছি, আমাকে সত্যটা জানান, নিজের বিশ্বাসে গোঁ ধরে বসে না থাকত, তখন পুরো পরিবেশটাই দারুন হত, গালির তো প্রশ্নই আসত না, নাস্তিকদের শুভাকাঙ্খীর অভাব হত না}
সামুর প্রসঙ্গে আসি।
সামহোয়্যারইন...ব্লগ একটি উদার মাধ্যম এবং একটি বিশাল প্লাটফর্ম। এখানে সবার মুক্তভাবে কথা বলার অধিকার আছে। কিন্তু আমার মনে হয় কোন কিছু চর্চার জন্যে এ স্থান নয়। যদি তাই হয় তাহলে ছাগুরা ছাগ চর্চা করার অধিকার রাখে। আর যদি তা না হয় তাহলে এখানে যেমন ধর্ম চর্চা চলা উচিত না তেমনি নাস্তিক্যবাদ চর্চাও চলা উচিত না।
ধর্ম ভীরুরা একটু মাইন্ড করলেন বোধহয়, যে কেন ধর্ম চর্চার বিরুদ্ধে বললাম। ধর্ম চর্চা একটা ব্যক্তিগত বিষয়। ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে এর প্রচার করা অনেক ভাল। হ্যা প্রচার করবেন সেই জায়গায় যেখানে মানুষ অন্ধকারে আছে, মানুষ আলোর পথা পাচ্ছে না সে জায়গায় প্রচার হতে পারে। তাহলে কথা হল, এখানে তাহলে কি হবে।
এখানে অনেক কিছু হবে তবে সারবস্তু যা হবে তা হল অসঙ্গতিগুলো নিয়ে আলোচনা। কি অসঙ্গতি? সমাজে কি অসঙ্গতির অভাব আছে রে ভাই? সেটা যেমন জঙ্গিবাদ নিয়ে হতে পারে ঠিক তেমনি হিন্দুশাস্ত্রের সতীদাহ প্রথা নিয়েও হতে পারে আবার চোর-বাটপার নিয়েও আলোচনা বা সমালোচনা হতে পারে, তাই বলে গোটা মুসলমান সমাজ তুলে গালি দেয়া, নবীজীকে নিয়ে বাজে কথা বলা বা হিন্দুদেরকে ডান্ডি বলা বা কোন এক চোরের জন্য গোটা সমাজকে গালি দেয়া কোনভাবেই উচিত নয়।
দয়া করে এই অসুস্থ চর্চা বন্ধ করুন। কারন, কোন এক বাঙালি ব্লগারকে যদি এখন হঠাত করে বলি "আপনি ভাত খান কেন?" সে রীতিমত ভ্যাবাচ্যাকা খাবে। ১৮+ পোস্টের গন্ধে সামুতে এখন বাচ্চা ব্লগারের অভাব নাই, তারা হঠাত করে এখানে এসব দেখলে কি হতে পারে একবার ভেবে দেখুন।
নাস্তিকরাও যখন বড় হয়েছে, তখন একটা ধর্মের(এই ধর্ম সেই ধর্ম না) মধ্য দিয়েই বড় হয়েছে, তারাও আমার আপনার মত করেই ন্যায় অন্যায় শিখেছে, কারন সমাজ তো একটাই, তারা তো আর অন্তরীক্ষে গিয়ে সমাজটাকে দেখে আসে নি। তাই এখন যদি একটা বাচ্চার বিবেক আর মনুষ্যত্ব নিয়ে বেড়ে উঠার সময় তার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর নামে তার গোটা বিবেকটাই ভেঙ্গে দেয় তাহলে সে দায় কে নিবে? এমনিতেই আমদের সমাজে বেশিরভাগ মানুষ ধর্মের ট্যাগটা কোনরকমে গায়ে ঝুলিয়ে রাখে (ইদানিং বলতেও শুরু করেছে " এগুলো নিয়ে মাথাব্যাথা নেই"), তার পর যদি তাদেরকে এই মাথাব্যাথা নাই টাইপ কথা বলতে বা নাস্তিক ( এক অর্থে নাস্তিকই তো!) এ রুপান্তরিত করার জন্য এরকম প্রয়াস চলে তবে সমাজব্যবস্থায় দুর্যোগ নেমে আসবে।
আর সামহোয়্যারইন...ব্লগ সবার ব্লগ (ছাগু বাদে, কারন তারা তো বাংলাই চায় না, বাংলা ব্লগ চাবে কেন? তাই তারা বাদ)। এখানে সবকিছুর একটা সুস্থ চর্চা থাকবে এটাই সবার কামনা। আর ব্লগ টিমেরও এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট মতামত থাকবে, নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে তবে সেটা মনে মনে না প্রকাশ্যে যাতে সবাই এ প্লাটফর্মের বেইজটা বুঝতে পারে।
পোস্টটা দেখে আসতে পারেন এখান থেকে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।