আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্পের রাজকুমার প্লাজারানা এবং রেদওয়ান রনি নির্মিত চলচিত্র চোরাবালি’র নায়ক ইন্দ্রনীল গুপ্ত /সুমন (সিনেমাটিক নাম)

যা দেখবো তাই বিশ্বাস করবো। গল্পের রাজকুমার জনাব সোহেল রানা। পিতা আবদুল খালেক। তেল মিলের মালিক। উঠতি যুবক রানার হাতে কাজকর্ম বলতে বিশেষ কিছু নেই।

করার প্রয়োজনও হয়না। বাবার আয় রোজগার তা দিয়েই চলে। সময় কাটে তার বন্ধুদের সাথে আমোদ ফুর্তি করে। মদ, গাঁজা, ফেন্সি, হিরোইন, ভায়াগ্রা সব কিছুতে তার চরম আসক্তি। এলাকার তরুণদের আড্ডায় খুব জনপ্রিয় সোহেল রানা।

এ নিয়ে বাবা আব্দুল খালেক অবশ্য বেশ গর্বিতই। একটা সময় খালেক সাহেবের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ বাধে মেয়ের স্বামী জাকির হোসেনের সাথে । তাই দেখে গর্জে উঠে আরেক সন্তান সোহেল রানা। বোনের স্বামীকে ধামরাই এলাকার ধুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্য দিবা লোকে শত শত মানুষের সামনে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে। আগুনের লেলিহান শিখার মত খবরটা পৌঁছে যায় স্থানীয় আওয়ামী নেতা জনাব মুরাদ জংয়ের দরবারে।

রতনে রতন চেনে আর শুয়োরে কচু চেনার মতই একে অপরকে চিনতে পারে। জনাব মুরাদ জং গাঁটের পয়সা ও রাজনৈতিক প্রতিপত্তি কাজে লাগিয়ে জেলহাজত হতে দুরে রাখেন খুনি সোহেল রানাকে। সামনের সংসদ নির্বাচনে জং এর পাপলিকের মগজে জং ধরাতে চুক্তি করে প্রকাশ্য রাজনীতিতে নাম লেখান তেল মিলের মালিক আঃ খালেক এর পুত্র ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক নেতা সাভার ট্রাজেডির নায়ক সোহেল রানা ওরফেপ্লাজারানা । অল্প দিনেই মুরাদ গং সহ উচ্চ পদের আওয়ামী নেতাদের আর্শিবাদ পুষ্ট হয়ে জনাব রানা এক মূর্তিমান আতংক হয়ে ক্ষমতার রাজনীতিতে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন নিজ এলাকায়। রেদওয়ান রনির চোরাবালির নায়ক ইন্দ্রনীল গুপ্ত ।

সিনেমেটিক নাম সুমন। সুমন গ্রাম্য মোড়লকে খুন করে তার মায়ের রেফে এর প্রতিশোধ হিসাবে। এর পর চলে আসে শহরে। এখানে এসে বৈষম্যের শিকার হয়ে খুন করে আর একজনকে। দুই খুনের খুনী সুমন দৌড়ে পালাতে গিয়ে সামনে পড়ে রাজনীতির তরুন খুনী নেতা শহীদুজ্জামান সেলিম এর সামনে।

সেলিম সাহেব জানতে পারেন ইন্দ্রনীল দুইটা খুন করেছে। সেলীম ইন্দ্রনীলকে তার নিজ হাতে রান্না পায়েস দিয়ে বরণ করে নেয় । এর পর ইন্দ্রনীল সেলিম এর হয়ে একের পর এক খুন করেই যায়। রেদওয়ান রনির চোরাবালি অনেক প্রশংশিত না হলেও বেশ কিছু মেসেজ দিয়ে গেছে আমাদের। তার একটি হল আমাদের দেশের নোংরা ক্লেদযুক্ত রাজনীতির লোমশ হাত কতটা নোংরা হতে পারে।

আমাদের রুপালী জলের বালুকাময় সৈকত এর অধিকারী সাভার লাশ সমুদ্রের মহা নায়ক জনাব সোহেল রানার পিতা আঃ খালেক এর তেলের মিলের পাশেই সংখ্যা লঘু পাগলা নাথ এর দুই একর পতিত জমি। বিশাল দুটি পুকুর ও খালি জায়গা সহ সম্পত্তিটার দিকে অনেকদিনের নজর ছিল জনাব আঃ খালেক এর। পুত্রের মাংসল শরীর আর গায়ে জোর হওয়ায় খালেক সাহেব এর পিচুটি পড়া আধমরা চোখের নজরটা শকুনের নজরে রূপ নিতে সময় লাগেনি। আর এ দেশে ক্ষমতা লোভীদের নজর সব সময় শকুনের নজরই। আর শকুনের মত তারা সংখ্যা লঘু বা দূর্বল সংখ্যা গুরুদের সম্পদকে পচাঁ মাংশই মনে করে।

তাই আওয়ামী ভোট ব্যাংকের স্থায়ী ভোট নোট পাগলা নাথের সম্পত্তি ক্রোক দিতে একদমই কোন রকম বেগ পেতে বা কোন রকম ভাবনার শিকার হতে হয়নি সংখ্যালঘুদের রক্ষক ও ত্রাণকর্তা আওয়ামী দলের তরুন নেতা রুপী পোষ্য ক্যাডার সোহেল রানার। কারণ শেখ হাসিনার নেত্রীত্বে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্ষমতা তাকে দিয়েছে নাম, যশ, প্রতিপত্তি ও অঢেল বিত্ত বৈভব। কেনা হয়ে গেছে তার প্রশাসনের সকল অলিগলি। আইন আদালতকে গণশৌচাগার বানিয়ে তাতে রানা সাহেব দলবল নিয়ে নিয়মিত মলমূত্র ত্যাগ সহ আরও পাবলিকের জণ্য মূত্র ত্যাগে ৫ টাকা,পায়খানায় ১০ টাকা চাঁদা শিরোণামে শৌচাগার ভাড়ার আইনী বৈধতাও পেয়ে গেছেন ইতিমধ্যে। তাই সম্পত্তির মালিক সংখ্যালঘু পাগলা নাথের ঠুকে দেয়া মামলা বানের জলের মত ভেসে গেছে সোহেল রানার ক্ষমতার জোয়ারে।

২০০৭ সাল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে ততদিনে। রানা সাহেবের বস জনাব মুরাদ জং মুজিব কোট লাগিয়ে লুই আই কন সাহেবের নকশায় তৈরী সংসদে আসা যাওয়ার ক্লিয়ারেন্স পেয়ে গেছেন ইতিমধ্যে। তাই জং সাহেবের গ্যাং হয়ে কাজ করার উপটৌকন হিসাবে আর একদমই দেরি করতে রাজি নন জনাব সোহেল রানা সাহেব। সংখ্যা লঘু ভোট নোট পাগলা নাথের পাথায় লাথি মেরে কেড়ে নেওয়া পতিত জমির ডোবার উপর কোন রকমে মাটি ভরাট করে শুরু করে দেন ১০ তলা ইমারতের কাজ।

ঠিকমত পাইলিং ও কম্পাক্টিং না করে সস্তা মালামাল দিয়ে এত বড় দালানের কাজ করতে বলায় বেঁকে বসে ঠিকাদার। ক্ষমতার মসনদে রানা সাহেবের বস মুরাদ জং এর দল। তাই ক্ষমতা এখন রানা সাহেবের হাতের মুঠোয়। তবু যাত্রায় ঠিকাদারকে শায়েস্তা করার ভেতর ক্ষমতার সীমা রেখা টানেন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জনাব রানা সাহেব। ধানমন্ডিতে ডেকে নিয়ে থেতলে দেন ঠিকাদারের পা হতে মাথা পর্যন্ত।

কেড়ে নেন তার গাড়িটি। মামলা কোর্টে উঠে। বিচারক সাহেব রায় দেন রাজনৈতিক প্রতিশোধের কারণে বিরোধী দলের করা এ মামলা আইনের চোখে অবৈধ। এভাবেই ২০০৭ সালে শুরু করা দালানের কাজ শেষ হয় ২০১০ সালে। মাত্র তিন বছরেই পাগলা নাথের পতিত ডোবা নালা জমিতে গড়ে ওঠে কুলু আঃ খালেক এর তৈল চকচকে পুত্রের সুরম্য বানিজ্যিক প্রাসাদ রানা প্লাজা।

বাহ বাহ্ জয় শেখ হাসিনা। জয় মুরাদ জং জয় বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী দলের নোংরা ক্ষমতানীতি। জয় বাবা জয়। রানা প্লাজার রানা সাহেব এখন সাভার পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। ক্ষমতার অনেক ধাপ পেরিয়েই তাকে এ পর্যন্ত আসতে হয়েছে।

আমাদের দেশে ইন্দ্রনীলের মত খুনিদের সমাজের বুকে মাথা উচু করে চলতে নাম, প্রতিপত্তি, যশ, সম্পদের অধিকারী হতে হয়। এবং এসব চাইলে রাজনীতিতে নাম লেখাতে হয়, আবার রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে ও এসবের মালিক হওয়া যায়। রাজনীতি করে বৈধ ভাবে অধেল সম্পত্তির মালিক হওয়া যায়না। যদি যেত তবে তো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদেরকে জনগণ হতে চাঁদা তুলে অর্থাৎ ভিক্ষা করে নির্বাচনী খরচ মিটাতে হতনা। রানা সাহেব রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে অধেল বিত্ত বৈভবের মালিক বনে যান।

তেল মিল মালিকের পাড়াতো আড্ডাবাজ গাঁজাখোর পুত্র সোহেল রানা হয়ে যান রানা প্লাজার রানা। কিন্তু বিধি বাম। শেখ হাসিনার সরকারেরও বিদায় বেলা। বিরোধী দলের হরতাল নামক নোংরা দাতর কামড়ে দেশের শরীরে আজ বিষক্রিয়া সৃষ্ট জরের তাপমাত্রার পারদ স্কেল ১০৪ ডিগ্রি ফারেন হাইট। জামাত শিবির বিরোধী দলের জারজ সন্তান হেপাজতে ইসলামের মলমূত্র আর বীর্য ত্যাগের গন্ধে দেশের বাতাস ভারী।

শেখ হাসিনার মসনদে কাপণ ধরছে তারঁ মন্ত্রীদের বেফাঁশ কথার জ্বরে। বিরোধী দলের হরতালে সাংসদ মুরাদ জংকে নেত্রীর কাছে প্রমাণ করতে হবে সাভারের জনগণ বিরোধী দলের হরতালে সাড়া দেয়নি। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য এসব দলীয় নেত্রীর বাধ্যতামূলক শর্ত। আর মুরাদ জং মানেই চোরাবালির ইন্দ্রনীল গুপ্তের মত নষ্ট রাজনীতির জরায়ুতে বেড়ে ওঠা ফিটাস সমুহের পূর্ণাঙ্গরূপ এরকম অনেক সোহেল রানা। তাদের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হয় জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা জনপ্রতিনিধিদের চাহিদা।

তাই হরতালের ব্যর্থতা সফল করতে জং সাহেব হাত বাড়ান সোহেলের দিকে। ফাটল দেখা দেওয়ায় ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ করতে বাধ্য হয় রানা প্লাজার ভাড়াটিয়া গার্মেন্টস মালিকরা। দুদিন বন্ধের পর তৃতীয় দিন মাঠে নামে সাংসদের পেশি শক্তির দল। ভয় দেখিয়ে পোষাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের কারখানায় ঢুকানো হয়। বলা হয় ফাটল কোন সমস্যা নয়।

সকাল আটটার ভিতরই আওয়ামী পোষ্য কুকুর রানা সাহেবের তৈল চকচকে পাপিষ্ঠ্য বানিজ্যিক প্রাসাদ মাত্র তিন বছরের মাথায় মাটিতে লুটিয়ে পরে। অন্যায় ও অবিচারের সমুদ্রের উপর দাঁড়ানো প্রাসাদ টি যেন আর কিছুতেই পাপের বোঝা বইতে পারছিলনা তাই সে আর নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইলো না এই পাপের কলংক গায়ে নিয়ে। হড়মুড় করে পাপিষ্ট রানার মাথার উপরই ঢসে পড়ল সাথে আরও কয়েকশত মানুষের প্রাণ। কয়েক হাজারের হাত পা কোমর ও নিয়ে গেল নিজের সঙ্গে চিরতরে। আমার কিছু প্রশ্নঃ 1) শ্রমিক মৃত্যুর সাথে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কটা কোথায়? বিরোধী দলের আর তাদের দোসর জামাত শিবিরের কোন দায় আছে কি? রাজনীতির সম্পর্কটা ই বা কি? 2) তেল বেঁচার ছেলে মানে আমার এলাকার ভাষায় কুলুর ছেলে কি করে এত বড় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে গেল? রানা প্লাজা তৈরী করার এত টাকা কোথায় পেল সোহেল রানা ওরফে প্লাজারানা? 3) এত মানুষকে মৃত্যু কুপে নিক্ষেপ করে এবং এত মানুষকে পঙ্গুত্বের নরক যন্ত্রনায় ঠেলে দিয়ে যে লোকটি তার প্রাণের রসদ ফেনসিডিল সহ পালিয়ে যাচ্ছিল তাকে তো নিরাপত্তাজনিত অযহাতে রেব এর হেলিকপ্টারে আনা হল।

ঠিক কত দিনের ভিতর এই রানার বিচার হবে? তার বিচার কি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে খুবদ্রুত স্বল্প সময়ে করা হবে? এই সরকার কি তার বিচারের রায় কার্যকর করে যেতে পারবে? উত্তর গুলো খুজে পেতে পারি সহজেইঃ প্রশ্ন-১ 1) শ্রমিক মৃত্যুর সাথে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কটা কোথায়? বিরোধী দলের আর তাদের দোসর জামাত শিবিরের কোন দায় আছে কি? রাজনীতির সম্পর্কটা ই বা কি? সহজ প্রশ্নের সহজ উত্তরঃ ১) প্রধানমন্ত্রী এই শ্রমিক মৃত্যুর দায় এড়াতে পারবেন না। পারবেন না বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং তাদের দোসর জামাত শিবিরও । আর দেশীয় নষ্ট রাজনীতি তো এরাই করছেন। তাই রাজনীতিও দায়ী। কারণঃ প্রতিটি রাজনৈতিক নেতার থাকে শয়ে শয়ে পোষ্য সোহেল রানা।

যাদের ছাড়া ভোট যুদ্ধে জিতে সংসদের রাস্তায় নিজেকে পথিক বানানো কিংবা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে দাপুটে কর্মকান্ড আর সন্ত্রাসের রাজত্ব করা একদমই সম্ভব নয়। এটি আমাদের দেশীয় রাজনীতির এর অন্ধকারের ঝকঝকে চকচকে সমীকরন। অথচ প্রধানমন্ত্রীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহেব এগুলোকে দেখেও দেখেন না। বিরোধী দলীয় নেত্রী জামাত শিবির এর হরতাল ও এই দায় এড়াতে পারবেন না। কারণ একদল যুদ্ধাপরাধীকে বাঁচাতে আর বাঁচতে তত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে তারা দিনের পর দিন হরতাল করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

যেমনটি দিতে কুন্ঠাবোধ করেনি সরকার শেয়ার বাজারকে ধ্বংস করে দেশের অর্থনীতির মাথায় লাথি মেরে তাকে রক্তার্ত করতে। এই ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী তাঁর দায় এড়াতে পারবেন না। কারণ তিনি তত্বাধায়ক সরকার ছাড়া এই কুকুর আর গুড় মাখানো কলার পাতার যুদ্ধের দেশে ত্বত্তাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন দিয়ে দেশে সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছেন। অথচ তিনি ভুলেই গেছেন যে বিরোধী দলীয় নেত্রী রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীনকে কেয়ারটেকার গভঃমেন্ট প্রধান করে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত হলেন যখনই তখন এই দেশের জনগণ সেটা মেনে নেয়নি। এভাবেই ততকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া খাল কেটেই এক এগারো সৃষ্টি করলেন।

দেশ চলে গেল জলপাই বাহীনির বুটের তলায়। অর্থাৎ তত্বাবধায়ক সরকারের লেবাশ পরিহিত সেনা শাষণে। আগামীতেও শেখ হাসিনা আর একটি এক এগারো সৃষ্টি করতেই কেয়ারটেকার গভঃমেন্ট মুছে দিয়েছেন সংবিধান হতে। অথচ তিনি এই পাঁচ বছরেও পারলেন না যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে। আজ মে মাসের মাজামাঝি প্রায়।

দেশ কাপছে বিরোধী দল জামাত শিবিরের ধ্বংসযঙ্গে। তাদের টাকাতেই ভাড়াটে হিসাবে হেপাজতে ইসলাম একাত্তরের ২৫ মার্চ এর কালোরাতের অন্ধকারকে দিন দুপুরেই আবার লেপ্টে দিয়েছে ৫ মে জাতির ললাটে। অথচ শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী হতে পারলে এই হিসাবের খেরো খাতা হয়তো নাও লেখা হত। আমার চোখে শেখ হাসিনা একদমই শেখ মুজিবের যোগ্য উত্তর সুরী নয়। তাই যদি হত তবে সংবিধান থেকে কেয়ারটেকার গভঃমেন্ট এর অধিনের নির্বাবাচন বাদ না দিয়ে জামাত এর রাজনীতি নিষিদ্ধ করতেন।

তিনি তা করেন নাই। এখন বিরোধী দলের কেয়ার টেকার গভঃমেন্ট ইস্যুতে ডাকা হরতাল বিষ থেকে হেপাজতি ইসলামে এসে ঠেকেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তো নয় মনে হচ্ছে এ পাকিস্থানেরই কোন তালেবান অধিনস্থ প্রদেশ। অথবা আফগানিস্থান। অথচ গত নর্বাচনে আওয়ামীলীগ যে ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসে সরকার গঠন করেছিল তাতে শেখ হাসিনা যদি মন্ত্রীসভার সদস্য নির্বাচনে দূরদর্শিতার পরিচয় দিথে পারতেন,বেপরোয়া ছাত্রলীগের নোংরামী সন্ত্রাস বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতেন তবে ২০২০ সালের আগে বিএনপি ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখতে সাহস পেতনা।

আর জামাত বিএনপির ওরসে কোন হেপাজতে ইসলাম নামের জারজদের জন্ম ও আজ হত না। যারা ধর্ম কে বর্ম বানিয়ে আন্দোলন করতে এসে ধর্মীয় গ্রন্থ পুড়িয়ে দেয় তাদের জারজ বললেও জারজদের অপমান করা হয়। কারণ জারজরাও মানুষ। আর হেপাজতে ইসলামের পশুগুলো হল জারজ শুয়োর। যাদের হাত থেকে কোরআন ও রক্ষা ।

অথচ এরাই আজ নাস্তিক আস্তিকের বিষাক্ত তীর ছুড়ে দেয় এই প্রজন্মের সবচেয়ে সচেতন সমাজ ব্লগারদের দিকে। পশ্ন-২ 2) রানা প্লাজা তৈরী করার এত টাকা কোথায় পেল সোহেল রানা ওরফে প্লাজারানা? তেল বেঁচার ছেলে মানে আমার এলাকার ভাষায় কুলুর ছেলে কি করে এত বড় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে গেল? সহজ প্রশ্নের সহজ উত্তরঃ রাজনৈতিক ক্ষমতা অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট। চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম, খুন, টেন্ডারবাজী সহ ভাগ্য ফেরানোর সব রাস্তা খুলে দেয়া হয় রাজনীতির ছত্রছায়ায়। খুন করলে ওদের কিছু হয়না, কারণ আদালতে আছেন বিচারক লীগের একদল গৃহপালিত ভৃত্য। থানা-পুলিশের জন্য প্রতিটা খুন খুলে দেয় ভাগ্য ফেরানোর নতুন দরজা।

এবং মুরাদ জং দের বিজয়ই নিশ্চিত করতে পারে বিশেষ পরিবারের ক্ষমতা। আর এক জন মুরাদ জংয়ের বিজয় নিশ্চিত করতে সোহেল রানাদের প্রয়োজনীয়তা বাধ্যতামূলক। রাষ্ট্রযন্ত্রের ক্ষমতার সবকটা গলি উন্মুক্ত থাকে সোহেল রানাদের জন্য। আইন আদালত, থানা-পুলিশ, মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী সহ প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত উন্মুখ হয়ে থাকেন সেবা দানের জন্য। এভাবে সবকিছু আবর্তিত হয় বিশেষ একজনের ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে।

এ আবর্তনের গলিতেই জন্ম নেয় একজন সোহেল রানা, দস্যু, তস্কর ও শতাধিক সহজ সরল খেটে খাওয়া বাংলাদেশির খুনি। এভাবেই ক্ষমতার তেলে চচকে হয়ে যায় ফেন্সীখোর সোহেলেরা। বাংলা সিনেমার সহজ নামকরণ কুলুর ছেলে কোটি পতি। প্রশ্ন-৩ 3) এত মানুষকে মৃত্যু কুপে নিক্ষেপ করে এবং এত মানুষকে পঙ্গুত্বের নরক যন্ত্রনায় ঠেলে দিয়ে যে লোকটি তার প্রাণের রসদ ফেনসিডিল সহ পালিয়ে যাচ্ছিল তাকে তো নিরাপত্তাজনিত অযুহাতে RAB এর হেলিকপ্টারে আনা হল। ঠিক কত দিনের ভিতর এই রানার বিচার হবে? তার বিচার কি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে খুবদ্রুত স্বল্প সময়ে করা হবে? এই সরকার কি তার বিচারের রায় কার্যকর করে যেতে পারবে? সহজ প্রশ্নের সহজ উত্তরঃ এগারো নারী খুনের আসামী সিরিয়াল কিলার রসু আজও আলোবাতাস খাচ্ছে।

খাচ্ছে আমাদের ভ্যাটের আর কর খাজনার পয়সায় কেনা চালের ভাত। অথচ ১১ টা খুন করেও আজও তার ফাঁসি হলনা। অথচ এই দেশে নাকি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। আমার ঠিক জানা নেই আর কয়টি নারীকে ধর্ষণ শেষে খুন করতে পারলে রসুখাঁর বিচারের রায় ফাঁসি এবং সে ফাঁসি এতদিনে কার্যকর হয়ে যেত। রানা সাহেব যিনি শ্রমিকদের টিফিনের লিজ নিয়ে টিফিনের পয়সা মেরে দিতেও বিবেকবোধের কামড় খাননি তার বিচারটা ঠিক কতদিনে হবে? সরকার বদল হবে।

নিজ দলে এমন সোনার সন্তান রানাকে টানতে তো সরকার বদল হলে ক্ষমতাসিন সরকারের পুতুল রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে সোহেল এর ফাঁসির রায় খারিজও হয়ে যেতে পারে! এটাতো সব সম্ভবের দেশ। এবং বিগত দিনে এমন বহু সোহেল রানাকেই ফাঁসির মঞ্চ হতে সসম্মানে ফিরে আসার রাস্তা তৈরী দিয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট। রাষ্ট্রকে যদি আমরা আমাদের মানব মানব শরীর হিসাবে কল্পনা করি তাহলে বলতে একদমই আর কোন রকম অসুবিধা নেই যে আমাদের সবকটা অঙ্গে পচন ধরেছে । অনেক বললাম। এবার আসুন একটু দন্ত বিকশিত করণ সহিত হাসি আর চোখের জলে ভাসিঃ 1) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেছেন, মৌলবাদী বিএনপির কিছু ভাড়াটে হরতাল সমর্থক সাভারের ভবনটির ফাটল ধরা দেয়ালের বিভিন্ন স্তম্ভ্ভ এবং গেট ধরে নাড়াচাড়া করেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ভবনটি ধসে পড়ার পেছনে সেটাও একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। বুধবার রাতে বিবিসিতে প্রচারিত সাক্ষাত্কারে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্তম্ভ ধরে নাড়া চাড়া করলে ভবনটি ধসে পড়তে পারে কিনা জানতে চাইলে বিবিসিকে মখা আলমগীর বলেন, ভবন ধসে পড়া সম্পর্কে আপনাকে একথাও মনে রাখতে হবে যে ধসে পড়া ভবনের কোনো অংশ নিয়ে নাড়া চাড়া করলে অন্য অংশের ওপর এর প্রতিক্রিয়া পড়ে। তবে একইসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে ইমারত নির্মাণের নিয়ম কানুন যথাযথ অনুসরণ করা হয়নি বলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এজন্য যারা ভবনের নকশা অনুমোদন করেছেন এবং যারা নির্মাণ তদারকি করেছেন তারাও দায়ী।

2) আগের দিনের ফাটলের পরেও সেখানে কাজ করতে যাওয়ার জন্য মাইকে ডাকা ঠিক হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কতিপয় লোক সেখানে গেছেন এবং আমাকে বলা হয়েছে তারা তাদের মালামাল পুনরদ্ধারের জন্য সেখানে গেছেন। তবে মন্ত্রী স্বীকার করেন, আগের দিন ফাটল দেখা দেয়ার পর ব্যাংক ও দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছিল। মন্ত্রী জানান, তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 3) রানা প্লাজার মালিক যুবলীগ নেতা সোহেল রানা ওরফে প্লাজরানা স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় তার বিরদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না বলে মানুষের ধারণা-এমন প্রশ্ন করা ম,খান আলমগীর বলেছেন, তদন্তে যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে কারো অবহেলার কারণে এখানে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে, মালিকের যে পদক্ষেপ নেয়ার কথা ছিল তা তিনি নেননি। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই যে কোনো দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার আলোকে কিংবা নাশকতার ঘটনা ঘটে থাকলে কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না। অপরাধী অপরাধী হিসেবেই বিবেচিত হবে। 4) সাভারে সব লোককে আগেই সরিয়ে নেয়া হয়েছিল : প্রধানমন্ত্রী 5) সাভারে ধসে পড়া নয় তলা ভবন থেকে আগেই সব লোককে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, হতাহতরা পরে জিনিসপত্র আনতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছে।

বুধবার কমলাপুর স্টেশনে ডেমু ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এমন দাবি করেন। তিনি জানান, উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনী, RAB পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে। 6) ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার ফাটল ধরা ‘রানা প্লাজা’ নামের নয় তলা ভবনটি বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ধসে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই সচেতন ছিলাম। আমরা জানতাম বলে সব লোক সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।

কিন্তু মূল্যবান জিনিস সরিয়ে নিতে সকালে লোকজন সেখানে গিয়েছিল। তারাই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। ’ 7) সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার সকালে ফাটল দেখা দেয়ার পরপরই ওই ভবনে থাকা চারটি গার্মেন্ট কারখানা ও ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তবে বুধবার সকালে শ্রমিকরা আবারো কারখানায় গিয়ে কাজ শুরু করেন। সাভারে ধসে পড়া বহুতল ভবন রানা প্লাজায় ফাটল ছিল।

এতে গুরুতর আহত পোশাকশ্রমিক রক্তাক্ত শিরিনের ভাষ্য, মঙ্গলবার সকালে ওই ভবনে ফাটল দেখা দিলে তাদের পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। গতকাল কাজে গিয়ে শ্রমিকরা তাদের আতঙ্কের কথা জানান। তবে কর্তৃপক্ষ তা কানে তোলেনি। বরং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জোর করে ঢোকানো হয় তাদের। 'কিছু হবে না' বলে জোর করে তাদের কারখানায় ঢুকতে বাধ্য করা হয়।

তখন ভবন মালিক সোহেল রানা হ্যান্ডমাইকে বলতে থাকেন, একটা পিলার ফাটলে কিছু হয় না! বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করেছে লুই আই কান। এই ব্যাটারে সংসদ ভবনের ডিজাইন করতে দিয়েছিল কে? আর সংসদ ভবনের ঠিকাদারি নিয়েছিলো কোন প্রতিষ্ঠান? যদি সংসদ ভবনটা নিয়ম মেনে তৈরি না করা হত তাহলে, একদিন তিন শতাধিক সংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী সহ সংসদ ধ্বসে পড়তো। আর আমরা রক্ত দিতাম। মিডিয়াতে গভীর সমবেদনা জানাতাম। লাশ দাফন করার জন্য খয়রাত বাবদ ২০ হাজার টাকা দিতাম।

কাল ব্যাজ বুকে লাগিয়ে ইন্নালিল্লাহ পড়ে, একটু পর আলহামদুলিল্লাহ পড়তাম। এরপর লোক দেখানো সমবেদনাও জানিয়ে আসতাম। অতঃপর এসি চালিয়ে শান্তির ঘুমে নাক ডাকতাম। ঘড়ৎ ঘড়ৎ………………………………………  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।