প্রবাসী বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস।
ছোটবেলায় স্কুলে বিতর্কের বিষয় ছিল বিদ্যা বড় না বুদ্ধি বড়? সে বিতর্কের উত্তর আজও পাইনি । যেমন পাই না মুরগী আগে না ডিম আগে প্রশ্নের উত্তর। “কতই ভাবি এসব কথা জবাব দেবার মানুষ কই/বড় হলে কেতাব খুলে জানতে পাব সমস্তই” সুকুমার রায়ের সে “বিষম চিন্তা” এখনও আমার চিন্তার বিষয়। এখন বড় হয়েছি, কিন্তু যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই।
আমি আর কত বড় হবো?
আমি জানি আমার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার লোকের অভাব নেই। অনেকে আবার আমার স্বল্পবুদ্ধি , মুর্খতাকে দোষারোপ করবেন। আমি কেন বুঝি না তা আমাকে জানতেই হবে অনেকদিন এই পন করে কম্পিউটারে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়েছি। যতই পড়েছি ততই বেশী করে অজ্ঞ মনে হয়েছে নিজেকে। নিউটন নাকি জ্ঞান সমদ্রের তীরে নুড়ি কুড়াতেন।
অনেক দেশে অনেক সমুদ্র তীরে বেড়াতে গেছি। সমুদ্রে বেড়াতে গিয়ে জ্ঞান যে একেবারে হয় নি তা নয় তবে হাজার খুজেও নিউটনের সেই সমুদ্রের নাগাল পাই নি। নুড়ি কুড়ানোর কথা না হয় বাদই দিলাম। মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোলকে ঘুমিয়ে পড়া শিশুর মত করে যে “লাইব্রেরী” তে বেধে রাখা হয়েছে তা ছিল স্কুল কলেজ জীবোনে আমার নিত্যদিনের সংগী। এরপর এল কম্পিউটার, ইন্টারনেট।
কিলোবাইট, মেগাবাইট, গিগাবাইট ছাড়িয়ে টেরাবাইট হার্ড ডিস্কের কম্পিউটার কিনে এনে ভাবি কোথায় গিয়ে থামবে ? অথচ নেইল আর্মস্ট্রং এর চাদেঁ যাওয়ার রকেটের নিয়ন্ত্রন করেছিল মাত্র কয়েক কিলোবাইটের কম্পিউটার।
আমার প্রশ্ন আবার অনেক। এক প্রশ্নের উত্তর খুজি তো আরেক প্রশ্ন মাথাতে এসে ভর করে। মনে আছে একবার স্কুলের এক পরীক্ষায় আমার ভাবনা গুলো ভালো করে লিখতে গিয়ে তিন ঘন্টা ধরে একটা মাত্র প্রশ্নের উত্তর লিখেছিলাম। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছিল।
ভাল ছাত্র ছিলাম । ফলাফল দেখে সবাই তো অবাক। তারপর থেকে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম বেশী চিন্তা করব না, বিশেষ করে পরীক্ষা দেওয়ার সময়। কিন্তু মগজ বলে কথা। মাথায় খালি চিন্তা আসতেই থাকে।
আর এখন পরীক্ষা নেই সুতরাং চিন্তার পর চিন্তা, প্রশ্নের পর প্রশ্ন জমে পাহাড়।
যারা বিশ্বাসী তাদের মাথা ব্যাথাও কম। ভাল আছেন তারা। বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদুর। তর্ক না করে বিশ্বাস করতে বলেছেন মহাপুরুষেরা।
"বিশ্বাসী হলে পুরস্কার ,অবিশ্বাসী হলে শ্বাস্তি" এগুলোর উল্লেখ আছে অনেক পবিত্র গ্রন্থে। পুরস্কার তিরস্কারের গল্প মনে হয়েছে দল ভারী করার যুক্তি। অনেক সময় চিন্তা করেছি বিশ্বাস করলে ভাল থাকব, শান্তিতে থাকবো । কিন্তু আজগুবি গাঁজাখুরি গল্প মনে হয়েছে এ গুলোকে। যত বিশ্বাস করতে চেয়েছি তত অশান্তি এসে ভর করেছে।
বিশ্বাসীদের অগাধ বিশ্বাস কে সন্দেহ হয়েছে অনেক বার। শেষমেষ বস্তু মেলার চিন্তাভাবনা ছেড়ে দিয়েছি। দূর থেকে বিশ্বাসীদের হাজার “সালাম”থাকুন আপনারা আপনাদের বিশ্বাস নিয়ে। আমাকে বিশ্বাস করতে বলবেন না। আসলে আমার মনটাই অবিশ্বাসে পরিপুর্ন।
পুরস্কার আমাকে টানে না, তিরস্কারে ও ভয় পাই না। কিন্তু আপনারা সবাই বিশ্বাস করুন অবিশ্বাস নিয়ে আমি শান্তিতে আছি, ভাল আছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।